নিজস্ব প্রতিনিধি: একের পর এক বিপাকে পড়ে যাচ্ছে আনিস খানের(Anis Khan) পরিবার। কিছুদিন আগে কার্যত আদালত অবমাননার দায়ে পড়ে গিয়েছিলেন আনিসের বাবা সেলিম খান। এবার পড়লেন হলফনামা জমা দেওয়ার গেরোয়। সিটের(SIT) দেওয়া রিপোর্টে জানানো হয়েছে, আনিস খান খুন হননি। যা দেখে আনিসের পরিবার ও তাঁদের আইনজীবী তথা রাজ্যসভার বাম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য(Bikash Ranjan Bhattacharya) মনে করছেন ওই রিপোর্ট ভুল। তা শুনেই সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা জানিয়ে দিলেন, সিটের রিপোর্ট কেন ভুল সেটা আনিসের পরিবার আদালতে হলফনামা দিয়ে জানাক।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আমতায় ছাত্রনেতা আনিসের দেহ তাঁর বাড়ির সামনে থেকে উদ্ধার হয়। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশকর্মীরা ছাদ থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেন আনিসকে। তার জেরেই মৃত্যু। আর সেই মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত তৃণমূল নেতা থেকে হাওড়া জেলা গ্রামীন পুলিশের আধিকারিকেরাও। আনিসের পরিবারের তরফ থেকে আদালতে বার বার সিবিআই তদন্তের আর্জিও জানানো হয়েছে। তাঁদের দাবি কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে সিবিআই আনিসের মৃত্যুর তদন্ত করুক। যদিও রাজ্য সরকার পুলিশের তদন্তেই আস্থা রেখেছে। কলকাতা হাইকোর্টও এই মৃত্যুর ঘটনার তদন্তের জন্য রাজ্য সরকারের গঠিত স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেটিং টিম বা সিটের ওপরেই আস্থা রেখেছে। সেই সিট রিপোর্ট দিয়েছে আনিস খুন হননি। তিনতলা থেকে দুর্ঘনটাক্রমে পড়ে গিয়ে মারা গিয়েছেন। তাঁকে কেউ ঠেলে ফেলে দেয়নি।
সেই রিপোর্টের জেরে আনিসের পরিবারের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য সোমবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে মন্তব্য করেন, ‘রাজ্য এটাকে খুন বলছে না। আমরা তা মেনে নিতে পারছি না। এই রিপোর্টে ভুল আছে। বলা হচ্ছে পড়ে গিয়ে আনিসের মৃত্যু হয়েছে। যেটা একেবারেই সত্য নয়। তদন্তের গতিপ্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে, ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কোনও তদন্তই হচ্ছে না। অনুসন্ধান চলছে। অপরাধীদের খোঁজার চেষ্টাও চলছে না। জিজ্ঞাসাবাদ হচ্ছে না। পলিগ্রাফির মাধ্যমে প্রমাণের চেষ্টা চলছে যে, এটা হত্যা নয় আত্মহত্যা। কিন্তু এটা পরিকল্পিত খুন।’ এর জেরেই আদালত জানায়, কেন তাঁরা সিটের রিপোর্টকে ভুল মনে করছেন, আর সেই ভুল কোথায় রয়েছে তা তাঁরা আদালতে হলফনামা দিয়ে জানান। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই ওই হলফনামা দিতে হবে। রাজ্যের রিপোর্টে কোথায় কোথায় আপত্তি রয়েছে তা তাঁরা হলফনামায় উল্লেখ করবেন। এই মামলায়ংত ১৯ এপ্রিল হাইকোর্টে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছিল সিট। মামলার পরবর্তী শুনানি ধার্য হয়েছে আগামী ১২ মে।