নিজস্ব প্রতিনিধি: নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দুই সংস্থা CBI ও ED তৃণমূলের(TMC) সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee) এবং নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া তৃণমূলের ছাত্রনেতা কুন্তল ঘোষকে(Kuntal Ghosh) জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন অভিষেক। সেই আপিলের জেরে সুপ্রিম কোর্ট মামলা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ মেনেই মামলা গিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। সেই মামলাতেই এদিন তিনি রায় দিয়েছেন যে নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় CBI ও ED অভীশেক ও কুন্তলকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। সেই সঙ্গে তিনি দুইজনকেই ২৫ লক্ষ টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই টাকাও অবিলম্বে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে কর্মী নিয়োগ ঘিরে কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্ব
কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন অভিষেক। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিন্হার বেঞ্চে তিনি এই আবেদন জানান। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত তথা বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ CBI ও ED’র বিরুদ্ধে অভিযোগ করে জানান যে, তাঁকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। এই সংক্রান্ত অভিযোগ জানিয়ে নিম্ন আদালতে চিঠি দেন কুন্তল। পুলিশি হস্তক্ষেপ চেয়ে কুন্তল চিঠি দেন হেস্টিংস থানাতেও। সেই চিঠির বিষয়ে হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ ছিল, CBI ও ED প্রয়োজনে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এই সংক্রান্ত মামলা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরে যায় বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে। সেখানে অভিষেক বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ওই পর্যবেক্ষণ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানান। বিচারপতি তমৃতা সিনহা অভিষেককে মামলায় যুক্ত হতে বলেছিলেন। সেই অনুযায়ী, মামলাটিতে যুক্ত হন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। একই সঙ্গে তিনি মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদনও জানান।
আরও পড়ুন ব্যবসা করতে চান, টাকা নেই, চিন্তা নেই, টাকা দিচ্ছে রাজ্য
এদিন অভিষেক ও কুন্তলকে যে ২৫ লক্ষ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে তা কেন করা হল তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন উঠে গিয়েছে নানান মহলে। প্রাথমিক ভাবে আইনজীবীদের অভিমত, আদালতের মূল্যবান সময় নষ্ট করার জন্যই এই জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। তবে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, আদালতের নির্দেশ মেনে টাকা দ্রুত জমা দেওয়া হবে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে। সেই সঙ্গে গোটা বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করা হতে পারে। অন্যদিকে CBI ও ED সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব দ্রুত অভিষেককে ডাকা হবে না জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। এই বিষয়ে দিল্লিতে দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। প্রয়োজনে আইনজীবীদের পরামর্শও নেওয়া হবে। কেননা অভিষেক সুপ্রিম কোর্টে গেলে আর সেখানে যদি স্থগিতাদেশ আসে হাইকোর্টের নির্দেশের ওপরে তখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে। তাই তাঁরা ধীরে সুস্থে পদক্ষেপ করতে চান। তবে কুন্তলকে তাঁরা দ্রুত জিজ্ঞাসাবাদ করবেন বলেই জানা গিয়েছে।