নিজস্ব প্রতিনিধি: দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ যে কলকাতার(Kolkata) রাস্তায় পার্কিং লট(Parking Lot) থেকে যে আয় হয় তার একট বড় অংশই কার্যত চুরি হয়ে যায়। যথাযথ টাকা জমা পড়ে না কলকাতা পুরনিগমের(KMC) কোষাগারে। সেই সমস্যার মূলে রয়েছে নগদের বিনিময়ে গাড়ির পার্কিং ফি মেটানোর ব্যবস্থা। ফলে কে কত টাকা চুরি করছে, কোথায় চুরি হচ্ছে আর কখনই বা তা হচ্ছে তা ধরতে পারা খুব মুশকিল হয়ে যাচ্ছিল পুরনিগমের আধিকারিকদের কাছে। এই অবস্থার অবসান ঘটাতে মেয়র ফিরহাদ হাকিম(Firhad Hakim) গোটা ব্যবস্থাকে ডিজিটাল পেমেন্টের(Digital Payment) মাধ্যমে করানোর ওপর জোর দেন। আর তার জেরেই আগামী বছর থেকেই কলকাতার রাস্তায় পার্কিং লটে পেমেন্ট করার ক্ষেত্রে ডিজিটাল ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হচ্ছে। ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড কিংবা বারকোড স্ক্যান করে মেটাতে হবে পার্কিং ফি। আগামী ১০ জানুয়ারি এই ডিজিটাল ব্যবস্থার ট্রায়াল রান(Trial Run) হতে চলেছে।
আরও পড়ুন ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত স্ট্যাম্প ডিউটি ছাড়ের মেয়াদ বাড়াল নবান্ন
ই-পস সিস্টেম অর্থাৎ মেশিনের মাধ্যমে পার্কিং লটে বিল মেটানোর পদ্ধতি চালু হতে চলায় লাভবান হবেন গাড়ির মালিকেরাও। কেননা তাঁদের কাছেও এবার সুযোগ থাকছে ই-পেমেন্ট করার। খুচরো নগদ নিয়ে অনেক সময়েই তাঁদের সমস্যায় পড়তে হয়। এবার তাঁরা সেই সমস্যা থেকে মুক্ত হবেন। কলকাতা শহরের রাস্তায় পুরনিগম অনুমোদিত পার্কিং লটে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগও নতুন কিছু নয়। এর পাশাপাশি আরও একটি অভিযোগ কমার সম্ভাবনা রয়েছে এই ব্যবস্থায়। আর তা হল শহরের বুকে বেআইনি পার্কিং থেকে টাকা আদায়ের ঘটনাও। বেআইনি পার্কিং নিয়ে শহরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভূরি ভূরি অভিযোগ পাওয়া যায়। এই সমস্যার সমাধানেও এবার বাধ্যতামূলকভাবে চালু হচ্ছে ই-পস সিস্টেম। নগদ টাকায় আর বিল মেটানো যাবে না। সবটাই হবে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। ইতিমধ্যেই প্রথম ধাপে ১০০টি এমন মেশিন কেনা হয়েছে। সূত্রের খবর, ধর্মতলা বা নিউ মার্কেট এলাকায় ট্রায়াল রানের উদ্বোধন হতে পারে।
আরও পড়ুন মোদি আসার আগেই ৭০০ কোটি টাকা এল বাংলায়
পুরনিগমের আধিকারিকদের দাবি, এই ই-পস মেশিন চালু হলে পার্কিং লটে বাড়তি ফি আদায় বন্ধ হয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। কোনও পার্কিং লটে ক’টা গাড়ি রাখার জায়গা আছে, তা পুরনিগমের নিজস্ব সার্ভারে থাকছে। সেক্ষেত্রে যখন সংশ্লিষ্ট পার্কিং লটে কোনও বাইক বা গাড়ি ঢুকবে সঙ্গে সঙ্গে তা সার্ভারে নথিভুক্ত হয়ে যাবে। যখন বেরবে সেই সময়টিও সার্ভারে ধরা পড়বে। সেই অনুযায়ী ই-পস মেশিনে ডিজিটাল ব্যবস্থায় স্লিপ জেনেরেট হবে। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট অর্থই দিতে হবে। অনলাইনে কারচুপি করার সুযোগ কম। উল্লেখ্য, ১২ বছর পর কলকাতা শহরে বেড়েছে পার্কিং ফি। কিন্তু তার জেরে বাড়তি আয়ের মুখ দেখতে পাচ্ছিল না কলকাতা পুরনিগম। কিন্তু এবার এই ডিজিটাল ব্যবস্থা চালু হয়ে যাওয়ায় পুরনিগমের আ যে অনেকটাই বাড়তে চলেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। শহরের নানা প্রান্তে যেসব এজেন্সি পার্কিং লটের দায়িত্ব আছে, তাঁদের এই সিস্টেম বাধ্যতামূলক করতে বলা হয়েছে।