নিজস্ব প্রতিনিধি: হাতে আর মাত্র কয়েকটা ঘন্টা। তারপরেই বাংলার(Bengal) মাটিতে পা রাখতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi)। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে রেসকোর্সে এসে সেখান থেকে সড়কপথে তিনি আসবেন হাওড়া স্টেশনে(Howrah Station)। সেখানেই তিনি উদ্বোধন করবেন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের(Vande Bharat Express) যা চলবে হাওড়া ও নিউ জলপাইগুড়ির মধ্যে। সেই ট্রেন উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী সড়ক পথেই চলে যাবেন কলকাতা বন্দরে। আর প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের জন্যই বৃহস্পতিবার থেকেই কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে বেঁধে ফেলা হয়েছে হাওড়া স্টেশনের পাশাপাশি রবীন্দ্র সেতুও(Howrah Bridge)। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে হাওড়া স্টেশন থেকে লোকাল ট্রেন চলাচল যেমন নিয়ন্ত্রণ করা হবে তেমনি যান চলাচল নিয়ন্ত্রিত হবে রবীন্দ্র সেতু বা হাওড়া ব্রিজেও।
আরও পড়ুন PM পোষণ যোজনার পরিদর্শনে বাংলায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল
এখনও পর্যন্ত যে তথ্য সামনে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছাবে। সেখান থেকে তিনি হেলিকপ্টারে করে আসবেন রেসকোর্সে। তারপর সেখান থেকে সড়ক পথে রবীন্দ্র সেতু হয়ে বেলা ১১টা নাগাদ তিনি পৌঁছাবেন হাওড়া স্টেশনে। ৪৫ মিনিটের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বেলা পৌনে ১২টা নাগাদ তিনি সড়ক পথেই চলে যাবেন কলকাতা বন্দরে। আর প্রধানমন্ত্রীর এই সড়ক পথে হাওড়া স্টেশন আসা ও যাওয়া এবং রবীন্দ্র সেতু ব্যবহার করার এই সিদ্ধান্তের জেরে আগামিকাল একটা বড় সময় ধরে হাওড়া স্টেশনে লোকাল ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে কড়া নিয়ন্ত্রণ থাকবে। যান নিয়ন্ত্রিত হবে রবীন্দ্র সেতুতেও। পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামিকাল বেলা ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কোনও লোকাল ট্রেন হাওড়া থেকে ছাড়বে না। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা দেখভালের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকেরা যদি মনে তাহলে সেই সময়সীমা সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত করা হবে। ওই সময়ে যে লোকাল ট্রেনগুলি হাওড়া থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা হয় সেগুলি হয় বাতিল হবে নাহয় তা পরে ছাড়বে। যে ট্রেনগুলি হাওড়া ঢোকার কথা ওই সময় তা হয় মাঝপথে কোনও স্টেশনে দাঁড় করিয়ে রাখা হবে না হয় বালি, বেলুড় বা লিলুয়া স্টেশনে যাত্রা শেষ করিয়ে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন মোদি আসার আগেই ৭০০ কোটি টাকা এল বাংলায়
দক্ষিণপূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাত ১২টার পর থেকে হাওড়া স্টেশনের ২১, ২২ এবং ২৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ২টোর পর থেকে আবার চালু হবে ওই প্ল্যাটফর্মগুলি থেকে ট্রেন চলাচল। এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী যে পথ দিয়ে হাওড়া স্টেশনে পৌঁছবেন সেই পথও ঘিরে দেওয়া হয়েছে ব্যারিকেড দিয়ে। বন্ধ রাখা হয়েছে স্টেশনের দুটি ক্যাব রোডও। সকাল ৯টার পর যে সব লোকাল ট্রেন হাওড়ায় এসে পৌঁছাবার কথা সেগুলি সাঁতরাগাছি, রামরাজাতলা, দাশনগর বা টিকিয়াপাড়ায় যাত্রা শেষ করবে। বেলা ১২টা পর্যন্ত এই ভাবেই চলবে ট্রেন। ওই সময়ে যে ট্রেনগুলির হাওড়া স্টেশন থেকে ছাড়ার কথা ছিল সেগুলিও ওই ৪টি স্টেশন থেকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে ট্রেন বাতিলও করা হতে পারে। দক্ষিণ পূর্ব রেলের দূরপাল্লার সমস্ত ট্রেন সাঁতরাগাছি বা শালিমারে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বা সেখান থেকেই ছাড়ার ব্যবস্থা করা হবে। এর পাশাপাশি নির্ধারিত সময়ের আগে যে সব যাত্রী ট্রেন ধরতে বা ট্রেনে করে হাওড়া স্টেশনে আসবেন তাঁরা যাতে তড়িঘড়ি নির্বিঘ্নে কলকাতা চলে যেতে পারেন তার জন্য ওল্ড কমপ্লেক্সের সব গেটগুলিকে ফাঁকা করে রাখবে পুলিশ ও আরপিএফ আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন পিছিয়ে গেল প্রধানমন্ত্রীর বঙ্গ সফরের সময়
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে দফায় দফায় এসপিজির সঙ্গে রেল, রাজ্য পুলিশ ও আরপিএফ কর্তাদের বৈঠক হয়। নিরাপত্তার জন্য বুধবার সকাল হাওড়া স্টেশনের আশপাশ থেকে হকারদের সরিয়ে দেওয়া হয়। গঙ্গার পাড়ের হোটেলগুলিও আজ থেকে বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। তবে সব থেকে বড় বিষয় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বেলা সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১২টা অবধি রবীন্দ্র সেতু দিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। বন্ধ রাখা হতে পারে সমস্ত রকমের যান চলাচল। বন্ধ থাকবে সেতুর ওপর থাকা ফুটপাথও। বন্ধ থাকবে বঙ্কিম সেতুও। প্রয়োজনে সকাল ৮টা থেকেই সেই ব্যবস্থা কার্যকর হতে পারে।