নিজস্ব প্রতিনিধি: মুখোমুখি বৈঠকে আশ্বাস মিলেছে বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু সত্যিই মেটানো হবে তো? প্রশ্ন ঘুরছে নবান্নের(Nabanna) অন্দরে। কেননা কানা ঘুঁষোয় শোনা যাচ্ছে বকেয়া মেটানোর পথে কাঁটা হতে পারে বঙ্গ বিজেপি(Bengal BJP)। রাজনীতি বড় কথা, মমতার সরকার আর দলকে টাইট দিতে তাই কেন্দ্রের টাকার আসার রাস্তা আটকাতেই হবে। বিশেষ করে যখন সেই টাকা ১০০ দিনের কাজের(100 Days Work) প্রকল্পের টাকা আর সামনেই যেখানে পঞ্চায়েত নির্বাচন(Panchayat Election)।
আরও পড়ুন ২০১৭ সালের প্রাথমিক টেটের নম্বর প্রকাশ করল পর্ষদ
সোম সন্ধ্যায় নয়া দিল্লিতে মুখোমুখি বৈঠকে বসেছিলেন বাংলার পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার ও কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছ থেকে বাংলার বকেয়া প্রাপ্য দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা। সেই টাকা না আসার কারণে বাংলায় জেলায় জেলায় ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের কর্মীরা তাঁদের প্রাপ্য পাওনা পাচ্ছেন না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) বার বার চিঠি লিখে এই বকেয়া মেটানোর কথা বলেছেন কেন্দ্রকে। কিন্তু রাজনীতি বড় কথা। তাই দুর্নীতির ধুয়ো তুলে সেই টাকা আটকে রেখেছে মোদি সরকার। বার বার পাঠিয়েছে কেন্দ্রের প্রতিনিধি দল। কিছু ভুল ত্রুটি ও দুর্নীতি তাঁরা খুঁজে পেলেও ৯৫ শতাংশ কাজের ক্ষেত্রে তাঁরা সব কিছু সঠিক ভাবেই কাজ হয়েছে বলে তাঁদের রিপোর্টে জানিয়েছেন। কিন্তু তাতেও চিঁড়ে ভেজেনি। কেন্দ্র ১০০ দিনের বকেয়া টাকা মেটায়নি। তার জেরে রাজ্যের তরফে প্রদীপবাবু বার বার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই বৈঠকের দিনক্ষণ জানানো হচ্ছিল না কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর তরফে। অবশেষে গতকাল সেই বৈঠক হয়েছে। সেখানেই মিলেছে আশ্বাস। দ্রুত মিটিয়ে দেওয়া হবে বকেয়া অর্থ।
আরও পড়ুন তেহট্টে পুরসভা কবে হবে, প্রশ্ন উঠল মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে
গল্পটা এখানেই শেষ হয়ে যেতে পারত। কিন্তু হচ্ছে না। বঙ্গ বিজেপি সূত্রেই জানা গিয়েছে, দলের নেতারা চান না পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সেই টাকা পেয়ে যাক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। বরঞ্চ তাঁরা চান চাপে থাকুক মমতার সরকার। কেন্দ্র টাকা পাঠানো বন্ধ করে দিলেই সেটা সম্ভব হবে। যদিও গতকাল বৈঠক শেষ দিল্লিতে সাংবাদিকদের প্রদীপবাবু জানিয়েছেন, ‘রাজ্যের প্রাপ্য আটকে রাখার ব্যাপারে কেন্দ্রের যা যা প্রশ্ন ছিল, সেগুলির নিষ্পত্তি হয়েছে। এখন আর টাকা পেতে সমস্যা হবে না। সেই আশ্বাস পেয়েছি।’ কিন্তু সেই দাবি বাস্তবায়িত হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছেন নবান্নের আধিকারিকেরাও। আর সেই সব দেখে মুচকি হাসছেন মুরলিধর লেনের কর্মকর্তারা। বাংলায় এখন ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে জবকার্ডধারীর সংখ্যা ১ কোটি ৪৩ লক্ষ। এর মধ্যে ১ কোটি ৪ লক্ষই কার্যকরী, একটিও ভুয়ো নয়। প্রকল্পও ভালোভাবে চলেছে। সাধারণভাবে কাজ করার ১৫ দিনের মধ্যে সরাসরি শ্রমিকের ব্যাঙ্ক আকাউন্টে টাকা পাঠানো দস্তুর। অথচ সেই নিয়ম ভেঙে গত প্রায় ১৪ মাস ধরে মোদি সরকার সেই পাওনা আটকে রেখেছে। উল্টোদিকে কেন্দ্র অভিযোগ তুলেছে, ভুয়ো লোককে কাজ দেওয়া হয়েছে। এই নিয়েই চরমে উঠেছে টানাপোড়েন। আর সেই টানাপোড়েনের বলি হচ্ছেন জবকার্ডধারীরা।
