নিজস্ব প্রতিনিধি: অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমতি না নিয়েই নারদ কাণ্ডের চার অভিযুক্ত তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নামে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় ইডি ও সিবিআই। সেই ঘটনায় কেন্দ্রীয় এই দুই সংস্থা আইনের লঙ্ঘণ ও রাজ্য আইনসভার অবমাননা করেছে এই অভিযোগ তুলে তাঁদের দুই আধিকারিককে বিধানসভায় তলব করেন অধ্যক্ষ। তার জেরে ইডি চিঠি পাঠিয়ে দাবি করেছে, তাঁরা চার্জশিট দাখিল করেছেন রাজ্যপালের অনুমতি নিয়ে। তাই এক্ষেত্রে আইন লঙ্ঘণের ঘটনা ঘটেনি ও রাজ্য আইনসভার অবমানকর কিছু করাও হয়নি। যদিও এদিন স্পিকার দুই সংস্থাকেই পাল্টা চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি আগামীকাল দুই সংস্থার দুই আধিকারিককে বিধানসভার সচিবালয়ে হাজিরা দিতে দেখতে চান।
ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও মদন মিত্র চলতি বিধানসভার বিধায়ক। তাই যে কোনও মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার আগে পুলিশ হোক কী সিআইডি, ইডি হোক কী সিবিআই-কে বিধানসভার স্পিকারের অনুমতি নিতে হবে। দেশের আইন সেই কথাই বলে। রাজ্য বিধানসভার স্পিকারকে এই অধিকার দেওয়াই হয়েছে বিধানসভার সার্বভৌমত্ব বজায় রাখার জন্য। অভিযোগ সেই অধিকার ইডি ও সিবিআই লঙ্ঘণ করেছে। তাঁরা বিধানসভার স্পিকারকে না জানিয়ে, তাঁর বিনা অনুমতিতে ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও মদন মিত্রের নামে নারদকাণ্ডে চার্জশিট জমা দিয়েছে আদালতে। এতে রাজ্য বিধানসভার সার্বভৌমত্বের অপমান করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সিবিআইয়ের ডিএসপি সত্যেন্দ্র সিংহ ও ইডির রথীন বিশ্বাসকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর চিঠি পাঠিয়ে ২২ সেপ্টেম্বর বিধানসভায় তলব করেন। নির্দিষ্ট সেই দিনের আগেই গতকাল ইডির তরফে চিঠি দেওয়া হয় স্পিকারকে। সেখানে বলা হয়, তাঁরা বিধানসভার কোনও অপমানই করেননি। কেননা তাঁরা চার্জশিট দিয়েছেন রাজ্যপালের অনুমতি নিয়ে। রাজ্যপালই রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান।
যদিও স্পিকার সেই চিঠির পাল্টা চিঠি এদিন দিয়েছেন ইডিকে। তাতে তিনি জানান, ইডি যে ব্যাখা দিয়েছে তাতে তিনি সন্তুষ্ট নন। কেননা ইডি ও সিবিআই উভয়েই এই চার্জশিট জমা দেওয়ার বিষয়ে ‘প্রিভেনশন অব কোরাপশান অ্যাক্ট ১৯(১)’ ধারা লঙ্ঘণ করেছে। তাঁদের উচিত ছিল এই ধারা মেনে এই ধরনের চার্জশিট দেওয়ার আগে রাজ্য বিধানসভার স্পিকারের অনুমতি নেওয়া যা তাঁরা নেননি। তাই তিনি আশা করছেন আগামীকাল বেলা ১টায় সিবিআইয়ের ডিএসপি সত্যেন্দ্র সিংহ ও ইডির রথীন বিশ্বাস বিধানসভায় হাজিরা দিয়ে বিষয়টি ব্যাখা দেবেন।