নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের আরও এক মন্ত্রীও কী এবার গ্রেফতার হতে চলেছেন? এই প্রশ্নটাই এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে রাজ্যের জনমানসে। কেননা বেআইনি কয়লা পাচার মামলায়(Illegal Coal Smuggling Scam) দিল্লি হাইকোর্টে স্বস্তি পেলেন না রাজ্যের আইনমন্ত্রী(Law Minister of West Bengal) মলয় ঘটক(Moloy Ghatak)। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা Enforcement Directorate বা ED যেন তাঁকে আর তলব করে বিরক্ত না করে, সেই আবেদন জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের(Delhi High Court) দ্বারস্থ হয়েছিলেন মলয়। কিন্তু আদালত সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তাঁকে এ ব্যাপারে রক্ষাকবচ(Safeguard) দেওয়া যাবে না। কারণ, আদালতের দাবি, কয়লা কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত মোট ১২ বার তাঁকে তলব করা হলেও মন্ত্রীর হাজিরার সংখ্যা মাত্র ১! সেই কারণেই তাঁকে কোনও রক্ষাকবচ দেওয়া যাবে না। উল্টে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে খোদ মন্ত্রীকেই। স্বাভাবিক ভাবেই দিল্লি হাইকোর্টের এই রায়ে বেশ বিপাকে পড়ে গেলেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী। যদিও তৃণমূল(TMC) সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছেন।
বেআইনি কয়লা পাচার মামলায় ২০২১ সালে নাম জড়িয়েছিল মলয় ঘটকের। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত এই ২ বছরে তাঁকে মোট ১২ বার তলব করেছে ED। দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়ে তাঁকে জেরা করতে চেয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই তলব অগ্রাহ্য করে হাজিরা না দেওয়ায় তাঁকে সমনও পাঠানো হয়। এখনও পর্যন্ত মাত্র ১ বার ED’র মুখোমুখি হয়েছেন মলয়। শুধুমাত্র হেনস্থার জন্যই তাঁকে কলকাতায় ED’র দফতর থাকা সত্ত্বেও দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হচ্ছে বলে বারবার দাবি করেছেন মন্ত্রী। ED যাতে তাঁকে দিল্লির বদলে কলকাতায় জিজ্ঞাসাবাদ করে, সেই আর্জি নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মলয়। সেই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ECIR খারিজ করে দেওয়ারও আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। যদিও সেই আবেদনে কর্ণপাত করেনি আদালত। উল্টে মন্ত্রীর এহেন আবদারে কার্যত অবাক হাইকোর্টের বিচারপতি স্বর্ণকান্ত শর্মা। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ১২ বারের তলবে যেখানে মন্ত্রী মাত্র ১ বার সাড়া দিয়েছেন, সেখানে তাঁকে রক্ষাকবচ দেওয়া যাবে না।
তবে আইনমন্ত্রীর অন্য আবেদনটি মেনে নিয়েছেন বিচারপতি। দিল্লি হাইকোর্টের গত ৫ সেপ্টেম্বরের রায় বহাল রেখেই বিচারপতি জানিয়েছেন, তলব করার ২৪ ঘণ্টা আগে নোটিস দিতে হবে মলয় ঘটককে। সেই নোটিসের কপি কলকাতা পুলিশ কমিশনার এবং রাজ্যের মুখ্যসচিবকে পাঠাতে হবে। সেই সঙ্গে ED’র তদন্তকারী আধিকারিকদের কাজে যাতে কোনওভাবে বাধা না পড়ে তা দেখতে হবে রাজ্য সরকারকে। অফিসারদের সুরক্ষার ব্যাপারটিও নিশ্চিত করতে হবে। মন্ত্রীর হাজিরার দিন পর্যাপ্ত পুলিশের ব্যবস্থা রাখতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত। আর আদালতের এই রায় সামনে আসার পরে পরেই রাজ্য রাজনীতিতে জোর গুঞ্জন ছড়িয়েছে যে মলয়ের গ্রেফতারি এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা মাত্র। যদিও মলয়বাবু এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনও বার্তা দেননি। তৃণমূলের তরফেও কিছু জানানো হয়নি। তবে সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী সপ্তাহেই তিনি সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানাতে চলেছেন। একই সঙ্গে আগামী সপ্তাহেই কলকাতার CGO Complex’র ED’র কার্যালয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলবের প্রস্তুতি নিচ্ছে Enforcement Directorate’র আধিকারিকেরা।