নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের বিধানসভা নির্বাচন থেকে শুরু। তারপর একের পর এক নির্বাচনে হারার পালা চলছেই। আর সেই হারের জেরেই বঙ্গ বিজেপির(BJP) ওপরতলা থেকে নীচেরতলা সবাই ডুবে গিয়েছে হতাশায়। সেই হতাশা থেকেই ঘটছে একের পর এক বিজেপি নেতা থেকে কর্মী মায় সমর্থকদের আত্মহত্যার ঘটনা। এমনকি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তিনিও হয়তো এই ডিপ্রেশনে আক্রান্ত। তাই তাঁরও খোঁজ নিতে হবে। সোমবার সাংবাদিকদের সামনে এমনই দাবি করলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন, আবাসন এবং পরিবহণ দফতরের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম(Firhad Hakim)। অনেকেই মনে করছেন সাম্প্রতিক কালে উত্তর কলকাতার কাশিপুরে বিজেপির যুবনেতা অর্জুন চৌরাসিয়ার(Arjun Chowrasia) প্রসঙ্গ টেনে এনে এদিন শুভেন্দু ও বিজেপিকে কটাক্ষ হেনেছেন ফিরহাদ।
ঠিক কী বলেছেন ফিরহাদ? এদিন সাংবাদিকদের সামনে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর(Suvendu Adhikari) উদ্দেশে খোঁচা মেরে কলকাতার মহানাগরিক বলেন, ‘বাংলায় বিজেপির ওপর থেকে নীচ পর্যন্ত নেতাকর্মীরা ডিপ্রেশন ভুগছেন। পাতি বাংলায় হতাশায় ডুবে গিয়েছেন। বিরোধী দলনেতাও ডিপ্রেশনে ভুগছেন কি না আমায় জানতে হবে। তাঁর মানসিক অবস্থাটা আমি জানি না। এখানে কোনও রাজনৈতিক খুন হয় না। যা হচ্ছে সব মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী হচ্ছেন। আমাদের পাড়া চেতলায় ক্লাবে ক্লাবে গিয়ে লোভ দেখিয়েছিল বিজেপি। বলেছিল, বিজেপির সঙ্গে গেলে রেলে, ইনকাম ট্যাক্সে চাকরি করে দেবে। অনেকে সেই মোহে গিয়েছিল। চেতলায় আমি মানুষের মধ্যে থাকি। সেখানেও দেখেছি, বিশেষত বস্তি অঞ্চলে গরিব ছেলেমেয়েরা দলে দলে বিজেপি করছে। পরে জেনেছি তাঁদের ওইসব লোভ দেখিয়েছিল। তারপর যেই হেরে গেল ওমনি বিজেপির নেতারা পালিয়ে গেল। সংবাদমাধ্যম যদি বিজেপির খবর দেখানো দু’দিন বন্ধ করে দেয় তাহলে তিন দিনের মাথায় বাংলা থেকে ওই পার্টিটাই উঠে যাবে।’
সম্প্রতি কাশীপুরে বিজেপি যুব মোর্চার নেতা অর্জুন চৌরাসিয়ার মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল কলকাতায়। রেলের একটি পরিত্যক্ত কোয়ার্টার থেকে অর্জুনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। সেই ঘটনায় বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে রে রে করে নেমে পড়েছিল। তাঁদের অভিযোগ ছিল, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা অর্জুনকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে। এমনকি সেই ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ(Amit Shah) পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিলেন। অর্জুনের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সেখানে দাঁড়িয়েই দাবি করেছিলেন সিবিআই তদন্ত চাই। যদিও পরে দেখা যায় অর্জুন আত্মহত্যাই করেছেন। অনেকের মতে, ফিরহাদ এদিন সেই প্রসঙ্গ টেনেই বিজেপিকে খোঁচা দিয়েছেন। ফিরহাদ বুঝিয়ে দিলেন, বিজেপির যাঁরা আত্মঘাতী হচ্ছেন তাঁরা সবাই হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে। সেই সব ঘটনাকে খুন বলে তুলে ধরে রাজনীতির মাঠে অক্সিজেন খুঁজছে বিজেপি।