নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা(Kolkata) হল মা কালীর শহর। এ শহরে অনেকেই আসেন তাই মা কালীর দর্শনে। শহরজুড়ে মা কালীর একের পর এক মন্দির। তার মধ্যে সব থেকে উল্লেখযোগ্য কালিঘাট(Kalighat) আর দক্ষিণেশ্বর। নিত্যদিন এই দুই মন্দিরে উপচে পড়ে ভক্তদের ভিড়। আসেন পর্যটকেরাও। সেই দুই মন্দিরকে আরও উন্নত করে তোলার লক্ষ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) এই দুই জায়গাতেই দুটি স্কাইওয়াক(Skywalk) নির্মাণ করার কথা জানিয়েছিলেন। এর মধ্যে দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক অনেক আগেই নির্মীত হয়ে তা আমজনতার জন্য খুলেও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কালিঘাটের স্কাইওয়াক এখনও নির্মাণ হয়েই চলেছে। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সেই কাজ আদৌ শেষ হবে কিনা তা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এবার এই নির্মাণের সঙ্গে জড়িত বেসরকারি সংস্থাকে নিয়েই কড়া বার্তা দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম(Firhad Hakim)।
কালিঘাটের স্কাইওয়াকের নির্মাণ পূর্ণ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালে। কিন্তু এখন যা অবস্থা তাতে করে ২০২৪ সালেও এই কাজ শেষ হবে কিনা সন্দেহ। আর এই ধীর গতির কাজ নিয়েই ক্ষুব্ধ স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কাছে খবর গিয়েছে যে, কালীঘাট স্কাইওয়াক নির্মাণের কাজ সেভাবে এগোয়ইনি। তার জেরে তিনি কলকাতার মেয়রকে বিষয়টি দেখতে বলেন। মেয়র কলকাতা পুরনিগমের আধিকারিকদের এলাকা ও কাজ পরিদর্শনের নির্দেশ দেন। সেই আধিকারিকেরা এলাকা সরজমিনে ঘুরে দেখে রিপোর্ট দেন মেয়রকে। সেই রিপোর্টেই জানানো হয়েছে, কালিঘাটে এখনও সেভাবে কোনও কাজই হয়নি স্কাইওয়াক নির্মাণের ক্ষেত্রে। মাত্র দু-এক জায়গায় খোঁড়াখুঁড়ির কাজ হয়েছে। মাত্র ৫ শতাংশ কাজ হয়েছে সেখানে। এই গতিতে কাজ চললে ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে কাজ শেষ হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। আর এই রিপোর্ট পেয়েই মেয়র মাঠে নামান মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারকে। তিনিও এলাকায় দেখে এসে একই কথা জানান।
এরপরই এদিন কড়া বার্তা দেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি জানিয়েছেন, ‘এখনও সে অর্থে কোনও কাজ এগোয়নি কালীঘাট মন্দির চত্বরে স্কাইওয়াক নির্মাণের ক্ষেত্রে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই দক্ষিণেশ্বরের আদলে এই স্কাইওয়াক নির্মাণের কাজ গত বছর শুরু হয়। স্কাইওয়াকের পাশাপাশি এখানে নতুন করে হকার্স কর্নার বানানোরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ঠিকাদার সংস্থাকে। এর জন্য বেশ কয়েকজন হকারকে, হাজরা পার্কে স্থানান্তরিতও করা হয়েছে। ২০২৩-এ কাজ শেষের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হলেও, কোনও কাজই এগোয়নি। কাজে দেরি হওয়ার কারণ কী তা জানাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থাকে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে ওই সংস্থাকে কালো তালিকাভুক্ত করার চিন্তাভাবনাও করা হচ্ছে। আমাদের প্রতি ৬ মাসের পর্যালোচনা বৈঠক হয়। সেটা করতে গিয়ে দেখি কালীঘাট স্কাইওয়াকের কাজ অত্যন্ত ধীর গতিতে হচ্ছে।’ কিন্তু এই দেরীর কারণ কী? কালিঘাট স্কাইওয়াক নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, মেশিনের সমস্যা সহ একাধিক কারণে কাজে দেরি। ২০২৩-এর মার্চ-এপ্রিলে কাজ শেষ হওয়ার কথা। জুন-জুলাইয়ে শেষ করে দেওয়া হবে।