নিজস্ব প্রতিনিধি: সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে আবারও অশান্ত হয়ে ওঠার ছবি ধরা পড়ল ভাঙড়ের(Bhangar) বুকে। মঙ্গলবার সকালে কলকাতার অদূরে থাকা ভাঙড়ে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে পাওয়ার গ্রিড(Power Grid) আন্দোলন। এদিন সকালে পাওয়ার গ্রিডের গেটে তালা লাগিয়ে নতুন করে আন্দোলন শুরু করে জমি কমিটি। তাদের মূল দাবি ভাঙড়ের জমি-জীবিকা-বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির সঙ্গে রাজ্য সরকার(State Government) যে চুক্তি করেছিল, তা মানা হয়নি। সেই দাবি আদায়ের লক্ষ্যেই এদিন অবস্থান বিক্ষোভের পথে নেমেছেন আন্দোলনকারীরা, এমনটাই তাঁরা জানিয়েছেন। দাবিপূরণ না হওয়া অবধি যে এই আন্দোলন চলবে তা জানিয়ে দিয়েছে কমিটি। আর এই ঘটনা দেখেই রাজ্য সরকারের তরফে কড়া বার্তা দিয়েছেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন, পরিবহণ ও আবাসন দফতরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম(Firhad Hakim)।
২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে পাওয়ার গ্রিড স্থাপনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল ভাঙড়। পরে বহু প্রচেষ্টায় সেই অশান্তিকে শান্ত করতে সক্ষম হয় রাজ্য সরকার। সেই সময়েই এলাকার উন্নয়ন নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদিত হয় রাজ্য সরকারের। কিন্তু এখন সেই আন্দোলকারীরা দাবি করছেন, রাজ্য সরকার এলাকার উন্নয়ন করার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা মানা হয়নি। এদিন সকালে সেই কারনেই পাওয়ার গ্রিড প্রকল্পের গেটে তাঁরা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বলে জানান আন্দোলনকারীরা। সরকারি চুক্তি অনুযায়ী সমস্ত দাবি পূরণ করা হয়নি বলে এদিন অভিযোগ তুলেছে জমি রক্ষা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মির্জা হাসান। তাঁর অভিযোগ, ‘হিমঘর এবং হাসপাতাল করে দেওয়ার দাবি মেনে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বছর ঘুরে গেলেও এখনও হাসপাতাল চালু হয়নি। হিমঘরও কার্যত অথৈ জলে। এই অবস্থায় আমাদের দাবি না মানলে অনির্দিষ্ট কালের জন্য অবস্থান বিক্ষোভ চলবে।’
পাওয়ার গ্রিড নিয়ে এক সময় আন্দোলনের ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছিল ভাঙড়। মঙ্গলবার সেই চেনা ছবি দেখা যায় খামারআইট, পদ্মপুকুর এলাকায়। এ নিয়ে ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা কাইজার আহমেদের মত, ‘অহেতুক আন্দোলন করছে জমি কমিটির লোকজন। তাঁদের সব দাবিই মেনে নেওয়া হয়েছিল। মানুষ ক্ষতিপূরণ পেয়ে গিয়েছেন। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। এই পরিস্থিতিতে এলাকা অশান্ত করার চেষ্টা চলছে।’ তবে এদিবন আন্দোলনকারীদের কড়া বার্তা দিয়েছেন ফিরহাদ। তিনি জানান, ‘রাজ্য সরকার কোনও চুক্তিই লঙ্ঘণ করেনি। কিন্তু আন্দোলনকারীদের এটা বুঝতে হবে যে চুক্তি হয়ে গেল মানেই রাতারাতি এলাকার ভোল বদলে গেল এমন নয়। রাজ্য সরকারকে সময় দিতে হবে। ওই এলাকার উন্নয়নের জন্য যা যা করার দরকার তা করা হবে। সেই প্রক্রিয়া আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে। আন্দোলনকারীদের ধৈর্য ধরতে হবে। আর কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে এলাকা নতুন করে অশান্ত করে তোলার চেষ্টা করে তাহলে রাজ্য সরকারও তা কড়া ভাবেই বুঝে নেবে।’