-273ºc,
Friday, 9th June, 2023 2:43 am
নিজস্ব প্রতিনিধি: বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) নেতাদের অভিযোগ বাংলায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিতে ভুরি ভুরি দুর্নীতি হচ্ছে। তাই কেন্দ্র যেন ওই সব প্রকল্পের টাকা আটকে দেয়। তা যেন বাংলায়(Bengal) না পাঠানো হয়। কার্যত সেই কথা শুনে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) সরকারও বাংলার বকেয়া টাকা আটকে রেখে দিয়েছে। বিশেষ করে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের(100 Days Work Project) টাকা ও আবাস যোজনার(PMGAY) টাকা। এছাড়াও আছে পুরাতন বকেয়ার টাকা। সব মিলিয়ে ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রের কাছে বকেয়া বাংলার, অন্তত এমনটাই দাবি রাজ্যের শাসক দলের। এই অবস্থায় সামণে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। বাংলার বুকে রুটিন করে প্রতি মাসে কেন্দ্রীয় টিম পাঠিয়েও কোনও কেন্দ্রীয় প্রকল্পের রূপায়ণে কোনও ত্রুটি, কোনও দুর্নীতি খঁজে পাননি কোনও প্রতিনিধিদল। নিয়ম মেনে প্রতিটি প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও জমা পড়েছে। সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে ‘সবুজ সঙ্কেত’ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা। তবুও আটকে রাখা হয়েছে ১০০ দিনের কাজ ও আবাস যোজনায় বাংলার প্রাপ্য টাকা। নেপথ্যে শুধুই রাজনীতি।
আরও পড়ুন পূর্ব ভারতের প্রথম সরকারি নিউরো রিহ্যাব কেন্দ্র শম্ভুনাথ পণ্ডিতে
গত ১৮-১৯ মে দিল্লিতে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের রাজ্যওয়াড়ি পর্যালোচনা বৈঠক বসেছিল। সেখানেই রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের কর্তারা প্রশ্ন তোলেন ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প ও আবাস যোজনার টাকা কেন আটকে রাখা হয়েছে। সেই প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রের আধিকারিকেরা সরাসরি কিছু না জানালেও আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন, শুধুমাত্র রাজনীতির জন্য টাকা আটকে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নবান্ন সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে। বৈঠকে বাংলার আধিকারিকদের কাছে কেন্দ্রের আধিকারিকেরা কার্যত বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যেই আটকে রাখা হয়েছে বাংলার মানুষের হকের টাকা। এর পিছনে ইন্ধন রয়েছে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের একটা অংশের। তাঁরাই নিত্যদিন একের পর এক অভিযোগ পাঠিয়ে ব্যতিব্যস্ত করে রাখছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রককে। পাশাপাশি বাংলায় সংগঠন না বাড়ানোর অক্ষমতাকে লুকিয়ে রাখতে ক্রমাগত ভুল বোঝানো হচ্ছে কেন্দ্র সরকারের শীর্ষস্তরকে। তার জেরেই এই সমস্যা। এই অবস্থায় কেন্দ্রের আমলাদের পরামর্শ, রাজনীতির স্বার্থে বাংলার গ্রামীণ অর্থনীতি ধ্বংসের চেষ্টা চালাচ্ছে যে অংশটি, তাদের ‘ম্যানেজ’ করুন। তবেই মিলবে ১০০ দিনের কাজ আর আবাস যোজনার ১৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি বকেয়া। কিন্তু সেটা যে সম্ভব নয় সেটাও বেশ ভালই বোঝেন বাংলার আধিকারিকেরা।
আরও পড়ুন শনিবার শালবনিতে একই মঞ্চে মমতা-অভিষেক
প্রসঙ্গত, গ্রামীণ বাংলার মানুষে ‘ভাতে মারার চেষ্টা’ চালাচ্ছে কারা, গত কয়েক মাস ধরে লাগাতার তার ব্যাখ্যা দিয়ে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এমনকী তৃণমূলে(TMC) নবজোয়ার কর্মসূচিতেও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee) ক্রমে এব্যাপারে সুর চড়াচ্ছেন। রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের আধিকারিকেরাও এখন সাফ জানাচ্ছেন, প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই যে এভাবে টাকা রাখা হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলেরও একটা বড় অংশের ধারনা, একুশের ভোটে হেরে বাংলার ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাওয়ায় এখন প্রতিহিংসার রাজনীতি করেছে পদ্মশিবির। ‘ভাতে মেরে বাংলা দখল’-ই এখন তাঁদের নয়া কৌশল। আর তাই বঙ্গ বিজেপির নেতারা এখনও বাংলার প্রাপ্য টাকা আটকে রাখার জন্য নানা অভিযোগ তুলে চিঠি দিয়ে চলেছেন এমন সব বিষয়ে যে সব বিষয়ের নিষ্পত্তি পর্যন্ত হয়ে গিয়েছে। সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০০ চিঠি গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রককে পাঠিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির ওইসব নেতারা। বৈঠকে বাংলার অফিসারদের কেন্দ্রীয় আমলারা জানিয়েছেন, ‘নতুন করে এমন এমন অভিযোগ পাঠানো হচ্ছে, যার নিষ্পত্তি ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। আবাস যোজনায় দুর্নীতি হয়েছে দাবি করে এমন সব নামের তালিকা পাঠানো হচ্ছে, যা অনেক আগে বাদ পড়ে গিয়েছে।’