নিজস্ব প্রতিনিধি: এক আধ কোটি টাকা নয়, চূড়ান্ত কেন্দ্রীয় বঞ্চনার মধ্যেও ১ বছরের মধ্যে রাজ্য সরকারের(West Bengal State Government) আয় বেড়েছে(Income Hike) ৯ হাজার কোটি টাকা(9 Thousand Crore Rupees)। এই আয় বাড়ার কৃতিত্ব সম্পূর্ণ ভাবেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee)। কেননা তাঁর দেখানো পথে হেঁটেই সেই আয় বৃদ্ধি ঘটেছে রাজ্যের। গতকাল রাজ্য বিধানসভায় পেশ হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের রাজ্য বাজেট(State Budget)। সেখানেই তুলে ধরা হয়েছে তথ্য। যা বলছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে রাজ্যের নিজস্ব কর বাবদ আয় বেড়েছে ৯ হাজার কোটি টাকা। আর সেই কারণেই রাজ্য সরকার ৩ লক্ষ ৬৬ হাজার ১১৬ কোটি টাকার বাজেট পেশ করার সাহস দেখিয়েছে। ২১ লক্ষ Job Cards Holders-দের ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের মজুরি বাবদ ৩৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দের টাকাও মিলেছে এই বাড়তি আয় থেকেই। এমনকি আবাস যোজনার ক্ষেত্রেও বাংলার যে ১১ লক্ষ পরিবার কেন্দ্রের আর্থিক সাহায্য পায়নি তাঁদেরও টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে এই বাড়তি আয়ের ওপর ভরসা রেখেই।
রাজ্যের নিজস্ব যে সব কর আছে তার মধ্যে রয়েছে SGST, Stamp and Registration Fee, Sales Tax, Motor Vehicle Tax, ভূমিরাজস্ব, আবাগারি, বিদ্যুতের ওপর ডিউটি প্রভৃতি। চলতি অর্থবর্ষে এই সব করের মাধ্যমেই রাজ্য সরকারের আয় হয়েছে ৯২ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে এই খাতেই আয়ের পরিমাণ ছিল ৮৩ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৯ হাজার কোটি টাকা আয় বেড়েছে রাজ্যের। আর সেটাও কেন্দ্র সরকারের হাজারো বঞ্চনার মধ্যে দিয়েও। শুধু তাই নয়, গত অর্থবর্ষের বাজেট প্রস্তাব পেশের সময় যে অনুমিত আয় ধরা হয়েছিল, বাস্তবে দেখা যাচ্ছে তার চেয়ে ৪ হাজার কোটি টাকা বেশি আয় হয়েছে রাজ্যের। গতবছরের বাজেট প্রস্তাবে কর খাতে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৮ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা। সেখানেই দেখা যাচ্ছে তা ৯২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। তবে এটাও ঘটনা যে ভূমিরাজস্ব, বিক্রয় কর প্রভৃতি খাতে চলতি বর্ষের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম আয় হয়েছে। ভূমিরাজস্ব খাতে গতবছরের তুলনায় আয় রীতিমত কমেছে।
২০২২-২৩ অর্থবর্ষে SGST খাতে রাজ্যের আয় হয়েছিল ৩৭ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষে তা বেড়ে হয়েছে ৪২ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা। আবগারি ক্ষেত্রে গত অর্থবর্ষে এসেছিল ১৬ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষে তা বেড়ে হয়েছে পরিমাণ ১৮ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় করের অংশ বাবদ রাজ্যের প্রাপ্যও বেড়েছে। ২০২২-২৩ সালে এই খাতে রাজ্য ৭১ হাজার ৪৩৪ কোটি টাকা পেয়েছিল। সেটা এবছর বেড়ে হয়েছে ৮৩ হাজার ১৯২ কোটি টাকা। গতবছরের বাজেট প্রস্তাবে এই খাতে আয় ধরা হয়েছিল ৭৬ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা। বাস্তবে সেই আয় বেড়েছে। কেন্দ্রের কাছ থেকে প্রাপ্ত অনুদান অবশ্য গতবছরের তুলনায় অনেকটা কমেছে। গত অর্থবর্ষে কেন্দ্রের অনুদান মিলেছিল ৩৮ হাজার ৩০৩ কোটি টাকার। কিন্তু চলতি অর্থবর্ষে সেটা কমে হয়েছে ২৯ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ বাজেটের তথ্যই বলে দিচ্ছে বাংলাকে যেমন এখন আর দিল্লির মুখাপেক্ষী হয়ে বসে থাকবে না তেমনি হাজারো কেন্দ্রীয় বঞ্চনার মধ্যেই রাজ্যের উন্নয়ন ও অগ্রগতি কেউ ঠেকাতে পারবে না।