নিজস্ব প্রতিনিধি: টানা এক বছরের চেষ্টায় রোগী রেফার(Patient Referrals) কমল রাজ্যে। আর সেটা সম্ভব হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) হুঁশিয়ারিতে। এক বছর আগে, গত নভেম্বরে বাংলার(Bengal) শুধুমাত্র দ্বিতীয় স্তরের সরকারি হাসপাতালগুলি(Government Hospitals) অর্থাৎ জেলা হাসপাতাল, মহকুমা হাসপাতাল, স্টেট জেনারেল হাসপাতাল ও সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে রেফার করা হতো গড়ে ৮ শতাংশ রোগী। চলতি নভেম্বরে তা কমে হয়েছে ৫ শতাংশ। এই এক বছরের মধ্যে আরও ৪০০ হাসপাতাল রেফার সংক্রান্ত নজরদারির আওতায় এসেছে। তারপরও সার্বিকভাবে রেফার কমানো সম্ভব হওয়ায় স্বস্তিতে রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা। তাঁদের জোর গলায় দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিতেই(Warning) এটা সম্ভব হয়েছে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের দাবি, আগে মূলত দু’টি সমস্যা ছিল। লোকবলের অভাব এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত যন্ত্রপাতির সমস্যা। রাজ্য সরকার সেই মতো প্রথমে শূন্যপদ পূরণে জোর দিয়েছিল। জেনারেল ডিউটি মেডিকেল অফিসারের অভাব অনেকটাই মেটানো হয়েছে। সেই সঙ্গে জীবনদায়ী যন্ত্রপাতির অভাবও কিছুটা কমানো গিয়েছে। তারই সুফল মিলেছে। লাগামছাড়া রেফারে তিতিবিরক্ত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সবচেয়ে বেশি ক্ষুব্ধ ছিলেন অযৌক্তিক প্রসূতি রেফার নিয়ে। বছর খানেক আগে রেফার বন্ধ করতে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্তাদের হুঁশিয়ারি দেন তিনি। তারপরই হাসপাতাল ধরে ধরে নজরদারি শুরু হয়। প্রথম পর্যায়ে দ্বিতীয় স্তর বা সেকেন্ডারি টায়ারের ১০০টি হাসপাতালে নজরদারির আওতায় আসে। দেখা যায়, গড়পড়তা রেফারের হার সেখানে ৮ শতাংশ। এরপর মেডিকেল কলেজগুলির দিকে কড়া নজর দেওয়া শুরু হয়।
দেখা যায়, সেখানে সমস্যা হল লামা বা Live Against Medical Advice। ভর্তির পর ইনডোরের ভিড়ে ঠাসা অবস্থা দেখে বহু রোগী নিজেই হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। এরপর তিনশোর বেশি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে অকারণ রোগী রেফারের দিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখা শুরু হয়। দেখা যায়, লোকবল ও পরিকাঠামোগত খামতির কারণে কাতারে কাতারে রোগী সেখানে ভর্তি হতে না হতেই বড় হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে রেফারের হার গড়ে ১৪-১৫ শতাংশ। পর্যাপ্ত চিকিৎসকের অভাবই এর প্রধান কারণ হিসেবে উঠে আসে। ওই পরিস্থিতিতে West Bengal Health Recruitment Board’র মাধ্যমে ১ হাজার জেনারেল ডিউটি মেডিকেল অফিসার নিয়োগ করা হয়। তাঁদের একটি বড় অংশকে পাঠানো হয়েছে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে। তার ফলও পাওয়া যাচ্ছে হাতে হাতে। প্রসূতি রেফার ঠেকাতেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে এই আশাজনক ফল বলে দাবি শীর্ষকর্তাদের।