নিজস্ব প্রতিনিধি: গঙ্গার ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে প্রাথমিক স্কুল। হুগলি জেলার জিরাটের সেই স্কুলের ছবি প্রকাশিত হয়েছিল একটি সংবাদমাধ্যমে। আর তা দেখেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করার নির্দেশ দিলেন হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে। পাশাপাশি হুগলি জেলা প্রাথমিক স্কুলের চেয়ার পার্সন এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানকেও ডেকে পাঠিয়েছে আদালত।
হুগলি জেলার রানিনগরের চয়খয়রামারি এলাকায় ওই প্রাথমিক স্কুল। গঙ্গার ভাঙনে নদী গর্ভে প্রায় তলিয়ে যেতে বসেছে প্রাথমিক স্কুলটি। যে কোনও দিন ঘটে যেতে পারে বড়সড় বিপদ, আর সেই আতঙ্কে শিশুদের স্কুলে পাঠানোই বন্ধ করে দিচ্ছেন অভিভাবকরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দশ বছর ধরে হুগলি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে গঙ্গার ভাঙন চলছে। এই জেলার জিরাট গ্রাম পঞ্চায়েতের দুর্লভপুর, রানিনগর ও গৌরনগরে ভাঙন চলছে প্রায় দশ বছর ধরে। কোভিড সংক্রমণ পরিস্থিতিতে লকডাউনের সময়ে স্কুলের পাশে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি নদী গর্ভে চলে যায়। ১৯৪৯ সালে যখন এই স্কুলভবনটি তৈরি হয়, সেই সময় স্কুল থেকে গঙ্গার দূরত্ব ছিল প্রায় ২ কিলোমিটার। কিন্তু নদী ভেঙে ভেঙে এখন সেই দূরত্বটা দাঁড়িয়েছে মাত্র কয়েক ফুট। আর এই অবস্থায় আতঙ্কে দিন কাটছে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের।
সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমে ওই স্কুলের ছবি ও প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি নজরে আসে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। স্কুলের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে উদ্বিগ্ন বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘স্কুলের যা অবস্থা তাতে তো ছাত্র-শিক্ষকদের জীবন বিপদে পড়বে! আদালত এটা হতে দিতে পারে না।’’ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা করার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি আদালতে আগামী বুধবার এসে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হুগলি জেলা প্রাথমিক স্কুলের চেয়ার পার্সন এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানকে। স্কুলের ভাঙন রোধ করতে তারা কী কী পদক্ষেপ নিয়েছেন তা জানাতে হবে আদালতে। পাশাপাশি এই মামলাটি খতিয়ে দেখার জন্য কলকাতা হাইকোর্ট আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্তকে বিশেষ অফিসার হিসেবে নিয়োগ করেছে।