নিজস্ব প্রতিনিধি: ওরে গৃহবাসী খোল দ্বার খোল, লাগল যে দোল। জলে স্থলে বনতলে লাগল যে দোল দ্বার খোল দ্বার খোল। হ্যাঁ আজ দোল পূর্ণিমা(Dolyatra)। কলকাতা(Kolkata) থেকে বাংলা(Bengal) আজ মেতে উঠেছে দোলের রঙে। কোভিডের ধাক্কা কাটিয়ে উঠে দুই বছর বাদে বঙ্গবাসী আবারও মেতে উঠেছে রঙের উৎসবে। কার্যত শুক্রবার দোল হলেও বৃহস্পতিবার থেকেই কলকাতা সহ রাজ্যের বুকে শুরু হয়ে গিয়েছে রঙের উৎসব(Festivel of Colour)। কোথাও রবি ঠাকুরের গানের মধ্যে দিয়ে কোথাও বা লোকগীতি কিংবা দোলের গান গেয়ে চলছে রঙের উৎসবের উদযাপন। বাংলার ঐতিহ্যশালী বসন্তোৎসব এবারেও অবশ্য শান্তিনিকেতনে(Shantiniketan) আয়োজিত হয়নি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। তবে সেখানকার পড়ুয়ারা এদিন নিজেদের মতো করে উৎসবের আয়োজন করেছে যা দেখতে রীতিমত ভিড় জমেছে পর্যটকদের।
বৃহস্পতিবার থেকেই কলকাতার বুকে শুরু হয়ে গিয়েছে রঙের উৎসব। বৃহস্পতিবার আনন্দপুর খেলার মাঠে পালিত হয় বসন্তোৎসব। কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষের উদ্যোগে, এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আবির খেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি প্রয়াত লতা মঙ্গেশকর, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় এবং বাপি লাহিড়ির প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। বন্ডেল রোডের অরবিট স্কাই গার্ডেনের আবাসিকরা বৃহস্পতিবার রাত থেকেই মেতে উঠেছেন হোলির উৎসবে। গান, নাচ, আবির খেলা আর ভুরিভোজের মাধ্যমে সেখানে রাতেই রঙের উৎসবের সূচনা হয়। একে অপরকে আবির মাখান বিভিন্ন বয়সের আবাসিকরা। শহরের বুকে বৃহস্পতিবার রাতে অনেক জায়গাতেই হোলিকা দহন ও ন্যাড়াপোড়ার আয়োজন করা হয়। সেখানেও চলে একপ্রস্থ রঙের খেলা। মুদিয়ালি ক্লাবে গভীর রাতে বিভিন্ন ভাষাভাষির মানুষ রঙের উৎসবে মেতে ওঠেন। সেখানে রাত জেগে বাঙালিরা অংশ নেন নেড়াপোড়ানোর পাশাপাশি ‘হলিকা দহন’-এ। অগ্নি শিখার মধ্যে অশুভ শক্তির বিনাশ আর শুভ শক্তির আহ্বান করেন মুদিয়ালির বাসিন্দারা।
শুক্রবার সকাল থেকেই কলকাতা সহ রাজ্যের নানাপ্রান্তে শুরু হয়ে গিয়েছে দোলের সাড়ম্বর উদযাপন। আবিরে-রঙে বসন্তকে বরণ করে নেওয়ার পালা। নাচে-গানে রাঙিয়ে দেওয়ার পালা। বসন্তোত্সব উপলক্ষে এদিন কলকাতা আর তারভ আশেপাশে দিনভর নানা জায়গায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে। নিউটাউনের রবীন্দ্রতীর্থে এদিন সকালেই শুরু হয়ে যায় শান্তিনিকেতনের ধাঁচে বসন্তোত্সবের পালন। গলফগ্রিণেও ওই একই ছবি দেখা যায়। শহরের বুকে আনাচেকানাচে এদিন আয়োজন করা হয়েছে প্রভাত ফেরি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। তবে এবার কিছুটা হলেও মনমরা শান্তিনিকেতন। এবারেও সেখানে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বসন্তোৎসবের আয়োজন করেনি। তবে এদিন সেখানে পড়ুয়াদের উদ্যোগে পালিত হচ্ছে বসন্তোত্সব। উপাসনা গৃহ থেকে আশ্রম চত্বর পর্যন্ত এদিন সকালেই বার হয় প্রভাতফেরি। তারপর পড়ুয়ারা শুরু করেন নিজেদের মতো করে কবিগুরুর গান গেয়ে নেচে বসন্তকে বরণ করে নেওয়ার পালা। দোল উপলক্ষে এবারেও শান্তিনিকেতনে পর্যটকদের ভিড় আছড়ে পড়েছে। আশ্রম চত্বরে বাইরেও চলছে রঙ খেলা। কিন্তু চিরাচরিত ঐতিহ্যে ছেদ পড়ে গিয়েছে গেরুয়া রাজনীতির আগ্রাসনে।