নিজস্ব প্রতিনিধি: উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ব্যারাকপুরে সেনা নিয়োগের পরীক্ষা দিতে এসে প্রতারকের পাল্লায় পড়েছিলেন হরিয়ানার এক যুবক। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ এবং প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ২ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, এই ঘটনার পিছনে রয়েছে একটি চক্র যা ছড়িয়ে রয়েছে একাধিক রাজ্যে। একই সঙ্গে শুধু হরিয়ানার ওই যুবকই নয়, সম্ভবত একাধিক রাজ্যের আরও অনেক যুবকই এইভাবে প্রতারিত হয়েছে। তাই এই ঘটনার তদন্তের জল যে অনেক দূর অবধি গড়াবে সেটা নিঃসন্দেহেই বলা যায়।
জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে হরিয়ানার বাসিন্দা তথা প্রাক্তন সেনা আধিকারিক রামচন্দ্র যাদবের ছেলে ব্যারাকপুরে এসেছিল সেনার পরীক্ষা দিতে। পরীক্ষা দিয়ে বেরনোর পর এক ব্যক্তি নিজে থেকেই আলাপ জমায় তাঁর সঙ্গে। সেই সময় সে নিজেকে হুঁশিয়ার সিং বলে পরিচয় দিয়েছিল। তখনই সে ওই যুবককে জানিয়ে দেয় আর্থিক লেনদেন ছাড়া সেনাবাহিনীতে চাকরি হওয়া সম্ভব নয়। সেই কথা শুনে ওই যুবক তাঁর নিজের ও রামচন্দ্রের ফোন নম্বর হুঁশিয়ার সিংকে দিয়ে দিয়েছিল এই বিষয়ে কথা বলার জন্য। মাস দুয়েক আগে ওই যুবকের মোবাইলে একটি অজানা নম্বর থেকে ফোন আসে। ফোনের ওপারে থাকা ব্যক্তি নিজেকে রাজু প্যাটেল বলে পরিচয় দেয়। সেই সময়েই সে রাজু প্যাটেল বলে ব্যারাকপুরে এসে পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি তাঁকে মনে করিয়ে দেয়। সেই সঙ্গে জানায় ২-৩ লাখ টাকা তাদের দিলে তারা ওই যুবকের চাকরি করিয়ে দেবেন সেনাবাহিনীতে। ওই যুবক এরপর বিষয়টি তাঁর বাবা রামচন্দ্র যাদবকে জানায়। তার জেরে রামচন্দ্র নিজে আবার কথা বলেন রাজু প্যাটেলের সঙ্গে।
এরপরেই ৩ লক্ষ টাকা নিয়ে রামচন্দ্র আর তাঁর ছেলে কলকাতায় আসেন। সেই সঙ্গে রাজুর সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়, কথাও হয়। তাঁরাই রাজুর হাতে ৩ লক্ষ টাকা তুলে দেন। তার বিনিম্যে রাজু তাঁদের হাতে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার নিয়োগপত্র তুলে দেয়। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে খটকা ছিল রামচন্দ্রের। তিনি বিষয়টি সেনাবাহিনীতে জানান। তাতেই তাঁরা জানতে পারেন ওই নিয়োগপত্র জাল। এরপরে তাঁরা ফের কলকাতায় আসেন ও গোটা বিষয়টি কলকাতা পুলিশকে জানান। সেই সময়েই প্রগতি থানায় এই মর্মে একটি অভিযোগও দায়ের হয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ঘটনার তদন্তে নামে ওই থানার পুলিশ ও কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। ঘটনার তদন্তের শুরুর সময়েই রামচন্দ্রের ছেলেকে বলে দেওয়া হয়েছিল রাজুর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলতে। তার জেরেই শেষে রাজু ও তার গাড়ির চালক মহম্মদ ওমর ফারুক মোল্লা ধরা পড়েছে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ ও প্রগতি থানার পুলিশের হাতে। দেখা যায় এই ফারুকই নিজেকে হুঁশিয়ার সিং বলে পরিচয় দিয়ে রামচন্দ্রের ছেলের সঙ্গে আলাপ জমিয়েছিল।