নিজস্ব প্রতিনিধি: বুধ দুপুরে বিস্ফোরক দাবি করলেন তৃণমূলের মুখপাত্র ও রাজ্য কমিটির সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এদিন এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানালেন, তাঁদের কাছে খবর আছে শুভেন্দু অধিকারী নাকি তৃণমূলে ফিরতে চান। কেননা তিনি বুঝতে পেরেছেন তৃণমূলে তাঁর কোনও ভবিষ্যৎ নেই। ঘটনাচক্রে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি পুরসভায় যে ত্রিপল চুরির অভিযোগ দায়ের হয়েছিল তাও প্রত্যাহার করে নিয়েছেন অভিযোগকারী। এই দুই ঘটনার সমাপতনের জেরে বেশ চাঞ্চল্য ছড়ালো রাজ্য রাজনীতিতে।
বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে কুণাল দাবি করে বলেন, ‘কাঁথি পুরসভা থেকে অধিকারীর সাইনবোর্ড সরিয়ে দিয়েছে বিজেপি। তাই শুভেন্দু এখন তৃণমূলে ফিরতে চাইছে। আমাদের কাছে তেমন খবরটাই আছে। ও বুঝতে পেরেছে বিজেপিতে ওর কোনও ভবিষ্যৎ নেই। তৃণমূলে থেকে যে ক্ষমতা ও সম্মান উনি পেয়েছেন সেটা বিজেপিতে তিনি পাচ্ছেন না। বিজেপিতে এখন শুভেন্দুর দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই ও নিজেই এখন তৃণমূলে ফিরতে চাইছে। শুভেন্দু বিজেপিকে ভালবেসে তৃণমূল ছেড়ে সেখানে যায়নি। ইডি আর সিবিআই থেকে বাঁচতে সেখানে গিয়েছে। কিন্তু এখন বিজেপি ছাড়লেই ইডি বা সিবিআই-য়ের হাতে গ্রেফতার হবেন শুভেন্দু। কাঁথিতে অধিকারীদের কাউকেই টিকিট দেয়নি বিজেপি। এমনকি যে সেখানে পুরপ্রধান হয়েছিল তাঁকেও টিকিট দেয়নি বিজেপি। শুভেন্দু এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন কী ভুল তিনি করেছেন।’ কুণাল অবশ্য এই দাবি গতকালও করেছিলেন। কিন্তু তিনি সেই সময় এই দাবিও করেছিলেন শুভেন্দু ফিরতে চাইলেও তাঁকে দলে ফেরানো হবে না। এদিন অবশ্য সেই দাবি আর করতে দেখা যায়নি।
ঘটনাচক্রে এদিনই সামনে এসেছে নতুন এক তথ্য যা কুণালের দাবিকে আরও হাওয়া দিয়েছে। শুভেন্দু অধিকারী ও তার ভাই সৌম্যেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ত্রিপল চুরির মামলা প্রত্যাহার করতে চলেছেন কাঁথি পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য রত্নদীপ মান্না। কাঁথি পুরসভা নির্বাচনে তিনি দলের টিকিটের প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু, দলের তরফে তাঁকে টিকিট না দেওয়ায় এখন তিনি নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তুলেছেন। সেই সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়েছেন রত্নদীপ মান্না। তাঁর বক্তব্য, ‘আমার মনে হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস আর বোধহয় আমাকে ব্যাকআপ দেবে না। কোন অদৃশ্য কারণে শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠরা এসে টিকিট পেয়ে গেলেন জানি না। টিকিট পাওয়ার থেকেও বড় বিষয় আমার মানসম্মান নষ্ট হয়েছে। একজন কট্টর তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী হিসেবে আমায় বঞ্চিত করা হয়েছে বলে মনে করছি। এখন আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। যে কোনও মুহূর্তে প্রাণ সংশয় হতে পারে। সেই ভয়ের আশঙ্কা থেকেই আমি কাঁথি থানা থেকে শুভেন্দু অধিকারী সহ তার ছোটভাই সৌম্যেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।’