নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার রাশ বেড়িয়ে গিয়েছে হাত থেকে। তাই দলের কোনও সাংসদ-বিধায়কদেরই ওপর আর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই মোদি-শাহ-নাড্ডাদের। এর সব থেকে বড় প্রমাণ বাবুল সুপ্রিয়’র শিবির বদল। সেই বাবুল বিজেপির সাংসদ পদ থেকে ইস্তফে দিতে চাইলেও লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা তাঁকে সময় দিচ্ছিলেন না। অনেকেই মনে করছিলেন এর পিছনে গেরুয়া শিবিরের নির্দেশ কাজ করছে। কেননা বাবুলকে সময় দিলেই তিনি ইস্তফা দেবেন, আর তাঁর ইস্তফা মানেই উনিশের ভোটে বিজেপির জেতা আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। এখন বাংলায় বিজেপির যা অবস্থা তাতে করে আসানসোলে উপনির্বাচন হলে সেখানে হার নিশ্চিতই। তাই এই অবস্থায় বাবুল যাতে ইস্তফে দিতে না পারেন সেই চেষ্টাই চালিয়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু এবার তাঁদেরকে ধাক্কা দিয়েই লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা বাবুলকে আগামী মঙ্গলবার সময় দিয়ে দিলেন। মনে করা হচ্ছে সেদিনই সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেবেন বাবুল।
জানা গিয়েছে, আগামী ১৯ অক্টোবর মঙ্গলবার, বেলা ১১টা নাগাদ বাবুলকে সময় দিয়েছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। লোকসভা সচিবালয় সূত্রে তেমনটাই জানা গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে ওই দিনই স্পিকারের সঙ্গে দেখা করে সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেবেন বাবুল। এর আগে একাধিক বার চিঠি লিখে স্পিকারের সময় চেয়েছিলেন বাবুল। কিন্তু তখন তাঁকে স্পিকার সময় দেননি। কিন্তু এখন সেই সময় দিয়ে দেওয়ায় মনে করা হচ্ছে গেরুয়া শিবিরের চাপ উপেক্ষা করেই স্পিকার তাঁর পদমর্যাদা রক্ষায় বেশি সচেষ্ট হয়ে উঠেছেন। আর সেই কারনেই বাবুলকে তিনি সময় দিয়েছেন, যা কার্যত বিজেপির কাছে ধাক্কা হয়ে উঠেছে। বাবুল আগেই জানিয়েছিলেন, তিনি যাদের টিকিটে নির্বাচিত, সেই দল ছেড়ে অন্য দলে গেলে পুরনো দলের সাংসদ পদ আঁকড়ে ধরে রাখা ‘অনৈতিক’ কাজ হবে। তাই মনেই করা হচ্ছে, মঙ্গলবার লোকসভায় গিয়ে বাবুল স্পিকারের হাতে তাঁর সাংসদ পদ থেকে ইস্তফার পত্র তুলে দেবেন।
ঘটনা হচ্ছে, নিয়ম অনুযায়ী লোকসভা, রাজ্যসভা বা বিধানসভা কিংবা বিধান পরিষদে কোনও আসন ফাঁকা হলে তা ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচন করাতে হয়। তবে সেই আসন বা সেই কক্ষের সাধারন নির্বাচন যদি ৬ মাসের কম সময়ের মধ্যে পড়ে যায় তাহলে আর সেই আসনে উপনির্বাচনের প্রয়োজন হয় না। বাবুল যে লোকসভার সাংসদ সেই লোকসভার পরবর্তী নির্বাচন ২০২৪ সালের এপ্রিল-মে মাসে। সেই হিসাবে বাবুলের ছেড়ে দেওয়া আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে আগামী ৬ মাসের মধ্যে উপনির্বাচন করাতেই হবে। সেই হিসাবে ২০২২ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যেই আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন করাতে হবে। যদিও কোভিডকালে এই সময়সীমা কতখানি মানা হবে সেটা নির্বাচন কমিশনই ঠিক করবে। তবে মনে করা হচ্ছে কমিশন বছর শেষ হওয়ার আগেই রাজ্যের পুরনির্বাচনের সময়েই আসানসোলে উপনির্বাচন ফেলে দিতে পারে।