নিজস্ব প্রতিনিধি: দুইজনই পুরুষ। থাকতেন বাড়ি ভাড়া নিয়ে একসঙ্গেই। বাড়ি ভাড়া মেটাতেনও একইসঙ্গে। বাড়ির মালিক থেকে পাড়াপ্রতিবেশী কারোরই তাঁদের নিয়ে কোনও সমস্যা ছিল না। বরঞ্চ দুইজনে খুব মিশুক ছিলেন বলেই তাঁদের দাবি। অথচ তাঁদেরই একজন খুব হয়ে গেলেন অপরজনের হাতে। কিন্তু কেন? গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার উত্তর শহরতলির বরানগরের(Baranagar) সুভাষপল্লীতে উদ্ধার হয় Indian Statistical Institute’র ক্যান্টিন কর্মী সুমন মাঝি(২০)’র দেহ। যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন সেই বাড়িতেই মিলেছে দেহ। গলায় মিলেছে প্যাঁচের দাগ। যা দেখে পুলিশের ধারনা শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে তাঁকে। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই উধাও সুমনের রুমমেট(Roommate)। ঘটনাচক্রে তাঁর নামও সুমন, তবে পদবি আলাদা। পুরো নাম সুমন বিশ্বাস। ঘটনার তদন্তে নেমে সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাতে ঘটনার দিন সকালে সুমন বিশ্বাসকে ধীরসুস্থে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে রাস্তা ধরে হেঁটে চলে যেতে দেখা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, পুলিশের ধারনা দুই সুমনের মধ্যেই সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরেই সম্ভবত খুনের(Murder) ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন ‘বিজেপির জন্য ভোট চাইব না’, অসীমের হুমকিতে বিপাকে পদ্মশিবির
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক মাস আগে সুভাষপল্লিতে সুমন বিশ্বাস বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল। পেশায় সে অটোচালক। মাস দুই পরে সুমন বিশ্বাসের হাত ধরে সেই বাড়িতেই ভাড়াতে হয়ে আসে সুমন মাঝি। দু’জনে মিলেই বাড়ি ভাড়ার টাকা মেটাত। প্রতিদিন খুব সকালে অটো নিয়ে বেরিয়ে যেতেন সুমন বিশ্বাস। তার খানিক বাদে সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ বেরিয়ে আইএসআই(ISI)-এর ক্যান্টিনে যেতেন সুমন মাঝি। বৃহস্পতিবার তাঁকে ঘর থেকে বের হতে না দেখে ডাকাডাকি শুরু করেন প্রতিবেশীরা। সাড়া না মেলায় খবর দেওয়া হয় পুলিশে। এরপরেই বরানগর থানার পুলিশ এসে ঘরে ঢুকে সুমন মাঝির মৃতদেহ উদ্ধার করে। তার পর থেকেই খোঁজ মিলছে না অটোচালক সুমন বিশ্বাসের। এমনকী, তাঁর ফোনে বারবার কল করা হলেও নট রিচেবল শোনায়। স্বাভাবিকভাবেই ওই যুবকের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধছে।
আরও পড়ুন মমতার অপেক্ষায় প্রহর গুণছে শিলিগুড়ি
পুলিশ সুমন বিশ্বাসের বাড়ি নদিয়া জেলার চাকদহেও তল্লাশি চালিয়েছে। কিন্তু সেখানে তাঁর খোজ মেলেনি। তবে বিস্ফোরক তথ্য মিলেছে। দুই সুমনই নাকি একে অপরকে ভালবাসতেন। তাঁদের সম্পর্ককে সমাজ ও পরিবার মেনে নেবে না বলেই দুইজনে কলকাতার কাছে গিয়ে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। পুলিশের ধারনা সেই সম্পর্কের টানাপোড়নের কারণেই হয়তো খুনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। কিন্তু সেটা তাঁরা তখনই নিশ্চিত হতে পারবেন যখন সুমন বিশ্বাস ধরা পড়বে ও পুলিশ তাঁকে জেরা করে আসল তথ্য বার করতে পারবে।