নিজস্ব প্রতিনিধি: কী বার্তা তিনি দেন সেদিকেই তাকিয়ে ছিল সকলে। কেননা এই সভা নিছকই নির্বাচনী সভা ছিল না। এই সভা ছিল হিন্দিভাষী মানুষদের নিয়ে, হিন্দিভাষী মানুষদের কাছে টানতে। গেরুয়া শিবিরকে ধাক্কা দিতেই হিন্দিভাষী মানুষদের উপনির্বাচনের ময়দানে কাছে টানার প্রয়াস। একই সঙ্গে লক্ষ্য জাতীয় স্তরের রাজনীতিতেও বার্তা পৌঁছে দেওয়ার। বৃহস্পতিবার কলকাতার ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের এলাকায় থাকা পদ্মপুকুরে একটি জনসভায় বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই সভা থেকেই তিনি বার্তা দিলেন এলাকার মানুষের পাশাপাশি দেশের মানুষকেও। খোঁচা দিতে ছাড়লেন না গেরুয়া শিবিরকেও।
এদিনের সভায় মমতা বলেন, ‘বি-তে ভবানীপুর, বি থেকেই ভারতবর্ষ। মনে রাখবেন, ভবানীপুর থেকেই ভারতবর্ষ শুরু হয়। ভবানীপুর থেকেই বাংলা মুখ্যমন্ত্রী পাবে। ভবানীপুর থেকেই ভারতবর্ষ দেখবে। ডেলি প্যাসেঞ্জারি করেও অনেকে বিজেপিকে জেতাতে পারেনি। কেউ হয়তো ভাবতেও পারেনি তৃণমূল এত ভোটে জিতবে। কিন্তু মা-মাটি-মানুষ আমার সঙ্গে ছিল। অনেক অত্যাচার, সহ্য করেও তাই আমরা জয়ী হয়েছি। নন্দীগ্রামে মনোনয়নের দিনই জোর করে আহত করা হল। পায়ে চোট, তাও হুইলচেয়ারে প্রচার করেছি। ৮ মাস ধরে কৃষক আন্দোলন চলছে, কেউ কথাই বলছে না। কৃষকদের জন্য আমি অনেক আন্দোলন করেছি। এই জন্যেই আমি নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়েছিলাম, কিন্তু ওরা কারচুপি করেছে। নন্দীগ্রামে ওরা কারচুপি করেছে, কোর্টে প্রমাণিত হবে। যতদিন বাঁচব, কোনও খারাপ কিছু ভাবব না। বিধায়ক না হলে মুখ্যমন্ত্রী থাকা শোভনীয় হবে না। আমার দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে, মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার লোকের অভাব নেই। তবে আপনারা যদি চান আমায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে তাহলে একটা করে ভোট দিয়ে আসবেন। ভোটের দিন বৃষ্টি হলে দয়া করে একদিনের জন্য বাইরে বেরিয়ে ভোট দিয়ে আসবেন। আমরা ভোটের দিন ছুটি ঘোষণা করেছি।’
এদিনের সভায় যোগ দেওয়ার আগে তৃণমূলনেত্রী ভবানীপুর এলাকারই একটি জৈন মন্দিরে গিয়ে পুজো দেন। জৈন গুরুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ওই সম্প্রদায়ের মানুষজনের সঙ্গে কথাবার্তাও বলেন। সেখানকার প্রথা মেনে তিনি পুজো দেন, আরতি করেন। তারপর জৈনগুরুদের সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে তাঁদের প্রণাম জানান, আশীর্বাদ গ্রহণ করেন। জৈন মন্দিরে মমতার সঙ্গে ছিলেন সুব্রত বক্সি, দেবাশিস কুমার। এখানেই জৈন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা তাঁর সঙ্গে দেখা করে হাতে কিছু উপহার তুলে দেন। তাঁদের সঙ্গে সামান্য কথাবার্তা বলে মন্দির ছেড়ে সভায় যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।