নিজস্ব প্রতিনিধি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) যে কথা দেন, সেই কথা তিনি রাখেন অক্ষরে অক্ষরে। কেন্দ্রের ক্ষমতায় থাকা বিজেপি(BJP) বাংলার মাটিতে একুশের ভোটে হেরে এ রাজ্যের মানুষকে ভাতে মারার ফন্দি নিয়েছে। আর তাই ১০০ দিনের কাজের টাকা, আবাস যোজনার টাকা, রাস্তা তৈরির টাকা, জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের টাকা আটকে দিয়েছে। বাংলার(Bengal) এই ঘোর দুর্দিনে ত্রাতা হয়েছেন একজনই। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেড রোডের ধর্না থেকেই তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, কেন্দ্র সরকার ১০০ দিনের টাকা আর আবাস যোজনার টাকা না দিলে সেই টাকা রাজ্য সরকারই দিয়ে দেব। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার বাংলার প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষকে মোট ৩৭০০ কোটি টাকার মাধ্যমে তাঁদের বকেয়া ১০০ দিনের কাজের মজুরি মিটিয়ে দিয়েছে। এবার পালা আবাসের। আর তাই মানুষের মাথায় পাকা ছাদ গড়ে দিতে এক নতুন পোর্টাল আনছে রাজ্য সরকার। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘গৃহশ্রী’(Greehasree) নামের সেই পোর্টালের মাধ্যমেই আবাসের টাকা উপভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষ তাতে উপকৃত হতে চলেছেন।
কেন্দ্র সরকারের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায় বাংলার ১১ লক্ষ উপভোক্তার নাম উঠে বসে আছে যাদের বাড়ি তৈরির জন্য টাকা পাঠানোর কথা মোদি সরকারের। কিন্তু সেই টাকাই আটকে রাখা হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র টাকা না দিলে আবাস যোজনার এই ১১ লক্ষ উপভোক্তার বাড়ি তৈরির টাকা দেবে নবান্ন। বাজেটেই একথা জানিয়ে দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের পাশাপাশি আবাস যোজনায়ও বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা হিসাবে তুলে ধরে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রচার চালাচ্ছে তৃণমূল(TMC)। প্রতিটি নির্বাচনী সভায় আবাস যোজনা নিয়ে ঝড় তুলছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দুইজনই মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন বাড়ি তৈরির গ্যারান্টি। নির্বাচন মিটলেই এই প্রতিশ্রুতি পূরণের কাজ শুরু করতে এখন থেকেই কোমর বাঁধতে শুরু করেছে রাজ্য প্রশাসন। আর তাই তৈরি রাখা হচ্ছে একটি পৃথক পোর্টাল। এই পোর্টালের মাধ্যমে বঞ্চিত আবাস উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরির টাকা দেবে রাজ্য।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘গৃহশ্রী’ নামের এই পোর্টাল আনার কথা বা চালুর কথা পূর্বঘোষিত। ফলে নির্বাচনের সময় প্রস্তুতির কাজ চালাতে কোনও বাধা নেই। এখন পোর্টাল থেকে শুরু করে অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরির কাজ সেরে রাখা হচ্ছে। ভোট মিটলেই যাতে কাজ শুরু করে দিতে পারা যায়, তার জন্য প্রস্তুতি সেরে রাখছে সরকার। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে কেন্দ্র সরকার ১১ লক্ষ বাড়ি তৈরির প্রশাসনিক সম্মতি দেওয়ায় রাজ্যব্যাপি উপভোক্তাদের যাচাই পর্ব চালায় রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর। তখনই তৈরি হয় চূড়ান্ত তালিকা। এদের বাড়ি তৈরির জন্য টাকা দেওয়ার আগে ফের একবার উপভোক্তাদের বর্তমান পরিস্থিতি যাচাই করে নেওয়া হবে। কারণ, শেষবার যাচাইয়ের পর কেটে গিয়েছে প্রায় দেড় বছর। এই সময়কালে অনেকে টাকাপয়সা জোগাড় করে বাড়ি তৈরি করে ফেলেছেন। অনেকে হয়তো অন্যত্র চলে গিয়েছেন। এসব দিক খতিয়ে দেখে তবেই টাকা ছাড়া হবে, যা যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ। সেই কারণে ডিসেম্বর মাসে রাজ্য বাড়ি তৈরির প্রথম কিস্তির টাকা ছাড়বে বলে জানিয়েছেন মমতা। একই সঙ্গে ‘বাংলার বাড়ি’ ও ‘আমার বাড়ি’ প্রকল্পে নাম থাকা উপভোক্তাদেরও এই তালিকায় জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। বাড়ি পাবেন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থরাও। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ১৯ লক্ষের আশেপাশে হতে চলেছে।