নিজস্ব প্রতিনিধি: আবারও বাংলার রাজপথে বাংলার অগ্নিকন্যা। যে রাজপথের আন্দোলন বাংলার মেয়েকে বিরোধী দলনেত্রী থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বানিয়েছে সেই রাজপথেই আবারও ফিরেছেন বাংলার মেয়ে। কেন্দ্র সরকারের বঞ্চনার বিরুদ্ধে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এই কর্মসূচী এক দুই ঘন্টার নয়, টানা ৩০ ঘন্টার(30 Hours) কর্মসূচী। বুধবার দুপুর ১২টায় যে ধর্না কর্মসূচী শুরু করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো তা আগামিকাল সন্ধ্যা ৬টার সময় শেষ হবে। তখনই ধর্না মঞ্চ ছাড়বেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে পর্যন্ত টানা ৩০ ঘন্টা তিনি কলকাতার(Kolkata) রেড রোডে(Red Road) দেশের সংবিধানের জনক বি আর আম্বেদকারের(B R Ambedhkar) মূর্তির পাশে গড়ে তোলা মঞ্চেই থাকবেন। আর তাঁর এই ধর্নার জেরেই এখন জাতীয় স্তরের রাজনীতির সব নজর এসে পড়েছে মমতার দিকেই।
আরও পড়ুন মমতার বাংলায় ৮ হাজার কোটির বিনিয়োগ DVC’র
বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই ধর্না মূলত নটি ক্ষেত্রে বঞ্চনার বিরুদ্ধে শুরু হল। এই ইস্যুগুলি হল – তৃণমূল(TMC) তথা মমতার সরকারের সাফল্যে প্রতিহিংসাপরায়ন বিজেপি(BJP) তথা মোদি সরকার(Modi Government) বাংলাকে ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করছে। কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের প্রাপ্য প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা যা তাঁরা দিচ্ছে না। এর মধ্যে শুধুমাত্র ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে বাংলার বকেয়া ৭ হাজার কোটি টাকা। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে এই প্রকল্পের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। কাজ করেও ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বাংলার(Bengal) প্রায় ১৭ লক্ষ পরিবার। আবাস যোজনাযর ক্ষেত্রেও কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের প্রাপ্য ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকা, যা তাঁরা দিচ্ছে না। এর জন্য বাংলার প্রায় ১১ লক্ষ্য ৩৬ হাজার পরিবার বঞ্চিত হচ্ছে পাকা বাড়ি থেকে। এর পাশাপাশি আছে CBI ও ED’র মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সির দ্বারা বিরোধীদের হেনস্থা করার ঘটনা, যা এদিনের প্রতিবাদ ধর্নার অন্যতম কারণ হয়ে উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন দম্পতি খুনের ঘটনায় ১৭জন সিভিক ভলেন্টিয়ার বরখাস্ত
মোদি ঘনিষ্ঠ আদানির স্বার্থে LIC ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে গচ্ছিত জনগণের অর্থ নয়ছয়ের যে অভিযোগ উঠেছে সেই ঘটনার তদন্তের দাবিও থাকছে এই ৩০ ঘন্টার টানা ধর্না কর্মসূচীতে। বাংলা সহ দেশজুড়ে পেট্রোল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাস সেই সঙ্গে কেরোসিনের দাম আকাশছোঁয়া হয়েছে মোদি জমানায়। তার বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ এই ধর্না। দেশের সব লাভজনক কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে মোদি জমানায় যার ফলে কাজ হারাচ্ছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। সেই ঘটনারও প্রতিবাদ এদিনের ধর্না। একই সঙ্গে ধর্ম ও জাতপাতের রাজনীতি করে সবার মধ্যে বিভেদ তৈরীর করার চেষ্টা চলছে দেশজুড়ে। স্বাধীন ভাবনা-চিন্তা মত প্রকাশের অধিকার কমে এসেছে ফলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত্তিতে আঘাত আসছে, তার প্রতিবাদেও এই ধর্না কর্মসূচী। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ধর্নায় সামিল হয়েছেন রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী। তাঁদের মধ্যে আছেন ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, ইন্দ্রনীল সেন, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা, বিরবাহা হাঁসদা। আছেন দলের হেভিওয়েট আরও বেশ কিছু নেতা ও বিধায়কেরাও।