নিজস্ব প্রতিনিধি: কথায় আর কাজে কোনও মিল নেই বিজেপির। ওরা শুধু জানে মেরে ফেলতে, বাঁচাতে শেখেনি ওরা। রবিবার যদুবাবুর বাজারে উপনির্বাচনের প্রচারে এসে এভাষাতেই বিজেপিকে আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপ্যাধ্যায়। তাঁর দাবি, ‘কখনও এনআরসি, কখনও সিএএ করে আপনার নাম বাদ দিয়ে দেবে। কিন্তু আমরা যা প্রতিশ্রুতি দিই, তাই করি।’ এলাকার প্রত্যেক ভোটারকে ভোটদানের জন্য অনুরোধ করেন তিনি। ভোট না দিলে বিজেপি নাগরিকত্ব থেকে যে কোনও সময়ে বাদ দিয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা করেন তিনি। একইসঙ্গে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উদাহরণ তুলে ধরেন তিনি। আর এখানেই বিস্ফোরক দাবি করলেন মমতা।
এদিন মমতা বলেন, ‘বিজেপির রাজত্বে কখনও সুবিচার পাওয়া যায় না। ত্রিপুরায় দেখুন…। আমার হাতে একটা ভিডিয়ো এসেছে। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, ”আদালত কী করবে? আমিই তো সব। আমি যা বলব, আদালত তাই করবে। আমি কাউকে মানি না।” ভিডিয়োটা আমার কাছে আছে। চাইলে দিয়ে দেব। একজন মুখ্যমন্ত্রী এমনটা কীভাবে বলতে পারেন?’ এরপর মমতা জানান, আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করা যায় কিন্তু বিচারক বা বিচারপতিকে নয়। তাঁর কথায়, ‘আমিই সব ভেবে নেওয়া, এত ঔদ্ধত্য ভাল নয়।’ একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অসমে মানুষের অধিকার খর্ব হলে সেখানে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যায় না। কিন্তু বাংলায় কিছু ঘটলেই চলে আসে। নির্লজ্জের দল, হেরে গিয়েও হিউম্যান রাইটস পাঠিয়েছে।’ পাশাপাশি গুজরাতের উদাহরণ তুলেও তিনি দাবি করলেন, সেখানকার মানুষও আজ ভাল নেই।
বাংলার বিজেপি নেতাদের গুন্ডা বলেও দাবি করলেন মমতা। বললেন, ‘যাদের একটা কান মুলে দিলে পালিয়ে যাবে, তাঁদের কত কথা। সব ডান্সিং ড্রাগন। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে শুধু উস্কানি নিয়ে হিংসা করে ওরা। জোর করে অশান্তি পাকায়। ওরা ভাবছে এভাবে মানুষকে ধমকাও, চমকাও। কেউ কিছু করতে পারবে না। গ্যাসের দাম এক হাজার থেকে দশ হাজার করে দাও, পেট্রোল-ডিজেলের দাম বাড়িয়ে দাও। পিএম কেয়ার্সের নামে টাকা তোলো, সেই টাকার হিসাব কাউকে দেব না। যা ইচ্ছে করে যাও। প্রতিবাদ করার কেউ থাকবে না। এটাই চাইছে বিজেপি।’
এখানেই শেষ করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোভিডে মৃত দেহ গঙ্গা ভাসা নিয়েও তীব্র কটাক্ষ করেন তিনি। বলেন, ‘কতটা অমানবিক এরা। একজন মারা গিয়েছে, তাঁর শেষকৃত্য না করে মৃতদেহর ওপর দাঁড়িয়ে ডান্স করছে। গঙ্গায় দেহ ভাসিয়ে দিচ্ছে।’ ভবানীপুর থেকে শুরু করে এবার ভরতের প্রত্যেক কোণে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়বে তৃণমূল। রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে মমতার বক্তব্য, ‘ধমকে-চমকে লাভ হবে না। তুমি এজেন্সি পাঠাবে, পাঠাও। ইডি-সিবিআই কাঁচকলা করবে।’ রাজনৈতিক মহলের মতে, এদিনের প্রচারমঞ্চ থেকেই মমতা বিজেপিকে বুঝিয়ে দিলেন, আর সেই দিন বেশি দূরে নয়। এখন থেকেই পতনের দিন গোনা শুরু বিজেপির।