কৌশিক দে সরকার: মহালয়ার আগে থেকেই পুজো মণ্ডপে গিয়ে ফিতে কাটা শুরু করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। শুধু কলকাতার পুজোই নয়, জেলায় জেলায় ছড়িয়ে থাকা শতাধিক পুজো তিনি উদ্বোধন(Puja Inauguration) করছেন ভার্চুয়ালি। আর তাঁর এই গ্রহণযোগ্যতা কার্যত আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল রাজ্য সরকার, শাসক দল, তৃণমূলের নেতামন্ত্রী, এদের নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে যতই বিতর্ক থাক না কেন এখনও সবার উর্ধ্বে বাংলার অগ্নিকন্যার স্থান। কার্যত প্রতি বছর কলকাতার দুর্গাপুজোয়(Kolkata Durga Puja) কে কটা পুজোর উদ্বোধন করলেন তা দিয়ে অনেকেরই দর মাপা হয়। সেই দৌড়ে মমতা বরাবরই অগ্রণী। বাম জমানার সময় থেকেই তিনি কলকাতার বেশ কিছু পুজোর উদ্বোধনের দায়িত্ব নিজে হাতে তুলে নেন। এর পর সময় যতই গড়িয়েছে মমতার হাত দিয়ে পুজো উদ্বোধনের সংখ্যা ততই বেড়ে গিয়েছে কলকাতার বুকে। আর এবার তো তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জেলার পুজো যা কলকাতা থেকেই ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতার এই জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতার মূল কারণ তাঁর সমকক্ষ নেতা বা নেত্রীর নিদারুণ অভাব রাজ্যের বিরোধী শিবিরে। আর তা দেখে এখন অনেকেই রসিকতা করে বলেন, ‘সিপিএমের আমলে তবু একটা মমতা ছিল, মমতার আমলে কেউ নেই।’ আর এই না থাকাটাই মমতাকে আজও বাংলার রাজনীতিতে শীর্ষে তুলে রেখেছে। যেহেতু মমতা রাজপথে আন্দোলন করে উঠে আসা নেত্রী তাই তিনি খুব ভাল ভাবেই জানেন বিরোধীদের কোন মন্ত্রে ও কোন কৌশলে কুপোকাত করতে হবে। তাই তাঁর কাছে বিরোধীরা কোনও ভাবেই এঁটে উঠতে পারে না। তাঁদের যাবতীয় আন্দোলন, দাবিদাওয়া, গালিগালাজ সব ঠাণ্ডা ঘরে বসেই ঠাণ্ডা হয়ে যায়। তা আর শাসকের চেয়ার ধরে টান মারতে পারে না। মমতাও বহাল তবিয়তে থেকে যান। দুর্নীতি, বেকারত্ব, অনুন্নয়ন – মমতার সরকারের উদ্দেশ্যে বিরোধীরা যে অস্ত্রই প্রয়োগ করুক না কেন সবই অচল। এমনকি দেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, দেশের শাসক দলের তাবড় তাবড় নেতা, একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় বাহিনী, কেন্দ্রীয় এজেন্সি এরা একজোট হয়েও বাংলার বুকে একুশের ভোটে মমতাকে হারাতে পারেননি। এই মমতাই যে পুজোর উদ্বোধনে রাজত্ব করবেন সেটাই তো স্বাভাবিক।