নিজস্ব প্রতিনিধি: হাওড়া জেলার পাঁচলা থানার রানীহাটি মোড়ে গত শনিবার রাতে পুলিশি তল্লাশিতে আটক হন ঝাড়খণ্ডের ৩জন কংগ্রেস(INC) বিধায়ক(MLA)। দীর্ঘ জেরার পরে তাঁদের পরেরদিন গ্রেফতারও করে পুলিশ। কেননা তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছিল ৪৯ লক্ষ টাকা। সেই টাকার উৎস তাঁরা জানাতে পারেননি। তার জেরেই গ্রেফতারি। সেই ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি তদন্তে নামে সিআইডি-ও। ওই ঘটনার সূত্র ধরেই তদন্তে নামা সিআইডি’র টিম এদিন পৌঁছে যায় কলকাতার হেয়ার স্ট্রিটে বিকানের হাউসে(Bikaner House)। সেখানেই মহেন্দ্র আগরওয়াল(Mahendra Agarwal) নামে এক ব্যবসায়ীর এক শেয়ার ট্রেডিংয়ের কার্যালয়ে হানা দেন সিআইডি আধিকারিকেরা। সেই কার্যালয় থেকেই এবার উদ্ধার হয়েছে ৩ লক্ষ ৩ হাজার ৭০০ টাকা ও ২৫০ টি রুপোর কয়েন। তবে সিআইডি’র তরফ থেকে জানানো হয়েছে এই কার্যালয় থেকেই ওই ৩ কংগ্রেস বিধায়ককে ৪৯ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল ঝাড়খণ্ডের ক্ষমতাসীন কংগ্রেস সমর্থিত হেমন্ত সোরেনের সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ার জন্য।
যে ৩জন কংগ্রেস বিধায়ককে ঘিরে এই ঘটনার সূত্রপাত তাঁরা হলেন ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক ইরফান আনসারি, খিজরি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক রাজেশ কচ্ছপ ও কোলেবিড়া বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক নমন বিক্সাল কোঙ্গারি। ইতিমধ্যেই কংগ্রেস এই ৩ বিধায়ককে সাসপেন্ড করেছে। ঘটনার জেরে আগেই কংগ্রেস ও তৃণমূলের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছিল হেমন্ত সোরেনের সরকারকে ফেলে দিতেই বিজেপি(BJP) ওই ৩ বিধায়ককে কিনে নেওয়ার জন্যই ওই টাকা দিয়েছে। এমনকি সামনে এই তথ্যও এসেছে ঝাড়খণ্ডের সরকার পক্ষের বেশ কিছু বিধায়ককে ১০ কোটি টাকার অফার দেওয়া হয়েছিল এই সরকারকে ফেলে দিতে। সিআইডি(CID) এই রাজ্যে ঘটনার তদন্তে নেমে জানতে পারে এক ব্যবসায়ী বিজেপির হয়ে ওই টাকা দিয়েছিলেন ৩ কংগ্রেস বিধায়ককে। সিসিটিভি ফুটেজ ও ওই ৩ বিধায়কের মোবাইলের জিপিএস লক্ষ্য করে তাঁরা হেয়ার স্ট্রিটে বিকানের হাউসে ওই শেয়ার ট্রেডিংয়ের অফিসের সন্ধান পান যেখানে শনিবার বিকালে এসেছিলেন ওই ৩ বিধায়ক।
এদিন বন্ধ থাকা ওই অফিসেই হানা দিয়েছেন সিআইডি আধিকারিকেরা। যদিও ওই অফিসের মালিক মহেন্দ্র আগরওয়াল গা ঢাকা দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ চাবিওয়ালা জোগাড় করে সেই বন্ধ অফিসের দরজার তালা খুলে তল্লাশি শুরু করেন। আর তার জেরেই উদ্ধার হয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা। প্রাথমিক ভাবে সিআইডি আধিকারিকদের ধারনা মহেন্দ্র শেয়ার কেনাবেচার অফিস খুলে রাখার পিছনে হাওয়ালার টাকার লেনদেনও করতেন। কার্যত সেটাই তাঁর মূল ব্যবসা ছিল। এদিন তল্লাশি চালানোর প্রক্রিয়াটি পুরোটা ভিডিয়োগ্রাফি করা হচ্ছে। সিআইডি সূত্রে খবর, ওই তিন কংগ্রেস বিধায়কের কাছে টাকা গিয়েছিল এই অফিস থেকে। একজন বাইক আরোহীর মাধ্যমে টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। সেই কারণে এই অতর্কিতে সিআইডি হানা।