নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মুকুল রায় বিজেপি প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছিলেন নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে। সেখানে তিনি তৃণমূল প্রার্থী তথা অভিনেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায়কে পরাস্ত করে বিধায়ক হন প্রথমবারের জন্য। কিন্তু সেই নির্বাচন মেটার পরেই তাঁকে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের মঞ্চে। শুধু তিনি নন, তাঁর ছেলে শুভ্রাংশু রায়কেও সেদিন দেখা গিয়েছিল। পরে তার জেরেই বিজেপি দাবি করে মুকুল রায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাই দলবদলের আইন অনুযায়ী তাঁর বিধায়ক পদ যেন খারিজ করা হয়। সেই মর্মে রাজ্য বিধানসভা অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও তাঁরা আর্জি জানান। সেই মামলার শুনানিতেই এদিন মুকুল রায়ের আইনজীবী দাবি করলেন মুকুল রায় কোনও দিন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগই দেননি। আর এই দাবি ঘিরেই এখন চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনের পরে পরেই মুকুলের তৃণমূলে আসার ঘটনাটি ঘটেছিল। তার জেরে বিজেপি তাঁর বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায়। গত ১৭ জুন মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের দাবি জানিয়ে বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই মামলারই শুনানি ছিল এদিন। এদিনের শুনানিতে অবশ্য মুকুল যোগ দেননি। তবে তাঁর আইনজীবী শুনানিতে হাজির হন। সূত্রে জানা গিয়েছে, মুকুল রায়ের আইনজীবী সায়ন্তক দাস বিধানসভার অধ্যক্ষকে জানিয়েছেন যে, মুকুল রায় বিজেপিতেই আছেন। তাঁর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কোনও ঘটনাই ঘটেনি। পরে সায়ন্তকবাবু সাংবাদিকদের জানান, ‘আমাদের যেটি বলার, সেটি স্পিকারের কাছে জানানো হয়েছে। বিরোধীদের তরফে একটি লিখিত রিজয়েন্ডার দেওয়া হবে।’
এদিন এই মামলায় শুভেন্দু অধিকারী আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য পাল্টা সাওয়াল করেন। তিনি জানিয়েছেন যে, মুকুল রায়ের আইনজীবীর দাবি মেনে নিয়ে তাঁরা রিটেন রিজয়েন্ডার দেবেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ৩ জানুয়ারি। সেই দিনই এই মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে পারে বলে আভাস দিয়েছেন বিল্বদলবাবু। উল্লেখ্য, মুকুলের বিধায়ক পদ খারিওজেরর জন্য শুভেন্দু সুপ্রিম কোর্টেও মামলা দায়ের করেছিলেন। সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয় ১৭ জানুয়ারির মধ্যে এই বিষয়টি শেষ নিষ্পত্তি করতে হবে। তবে এদিন মুকুল রায়ের আইনজীবী যা দাবি করেছেন তা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে বেশ চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। মুকুল এখন ঠিক কোন দলে আছেন তা নিয়েও এদিন প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী এদিন জানিয়েছেন, তাঁরা লিখিত রিজয়েন্ডার দেওয়ার পাশাপাশি ফুটেজও জমা দেবেন। আর সেই সব জমা দিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তুলবেন কেন মুকুলের আইনজীবী দাবি করলেন যে মুকুল এখনও বিজেপিতেই আছেন!