নিজস্ব প্রতিনিধি: খুব সামান্য একটা তথ্য। কিন্তু সেটাই রাজ্য রাজনীতিকে কাঁপিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। চলতি অর্থবর্ষে বাংলায়(Bengal) বাতিল হয়েছে প্রায় ১৫ লক্ষ ভুয়ো জবকার্ড। এই জবকার্ডধারীরাই কাজ পান গ্রাম বাংলার বুকে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে(100 Days Work Project)। রাজ্য পঞ্চায়েত দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, স্বচ্ছতা আনতে জেলায় জেলায় চলছে ভুয়ো জব কার্ড(Fake Job Card) বাতিলের প্রক্রিয়া। মাস চারেক আগে থেকে এই কাজে বিশেষ জোর দিয়েছে পঞ্চায়েত দফতর(Panchayat Department)। তাই চলতি অর্থবর্ষেই রাজ্যজুড়ে বাতিল হয়েছে ১৪ লক্ষ ১৭ হাজার ৫৫৭টি জব কার্ড। সাধারণত পরিবার পিছু একটি করে জব কার্ড ইস্যু করা হয়। তাই প্রায় ১৫ লক্ষ জবকার্ড বাতিল হওয়ায় দেখা যাচ্ছে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প থেকে বাদ গিয়েছে বাংলার ৬৩ লক্ষ ৭ হাজার ২৮৯জন ব্যক্তির নাম। এর পাশাপাশি অবশ্য রাজ্যে গত এক বছরে লক্ষাধিক নতুন জব কার্ড দিয়েছে রাজ্য সরকার(West Bengal State Department)।
আরও পড়ুন বাংলার ১৫টি শহর চলে এল 5G’র আওতায়, নেপথ্যে Airtel
বছর ঘুরলেও ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে রাজ্যকে কোনও টাকা দেয়নি মোদি সরকার। সেই বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। ১০০ দিনের কাজ গ্রামীণ মানুষের রুটিরুজির বড় ভরসা। সেজন্য জব কার্ড তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া, আবাস যোজনা সহ বিভিন্ন গ্রামোন্নয়ন প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে জব কার্ডের প্রয়োজন হয়। আবার মোদি সরকার যথার্থ উপভোক্তার ব্যাঙ্ক আকাউন্টে টাকা যাচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য জব কার্ডের সঙ্গে আধারের সংযুক্তিকরণ বাধ্যতামুলক করেছে। একই সঙ্গে আধারের সঙ্গে ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টের লিঙ্ক থাকতে হবে এমনটাও জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। গ্রামবাংলার মানুষের স্বার্থে ১০০ দিনের কাজের টাকা পেতে কেন্দ্রের সমস্ত শর্তই মেনে নিয়েছে রাজ্য। সেই সঙ্গে কেন্দ্র ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা আটকে রাখলেও রাজ্য সরকারের তরফে পঞ্চায়েত দফতরের মাধ্যমে চলছে জব কার্ড বিলির কাজও। বিগত এক বছর গ্রামবাংলায় ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে কোনও কাজ না হলেও এই সময়কালেই রাজ্যে ২ লক্ষ ৬০ হাজার পরিবারের নতুন জব কার্ড হয়েছে। ফলে এর আওতায় এসেছেন ৪ লক্ষ ৮০ হাজার ৪২১জন মানুষ।
আরও পড়ুন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে ক্যান্সারের ইউনিট এবার এই হাসপাতালে
এরই পাশাপাশি চলছে ভুয়ো জবকার্ড বাতিলের কাজও। সাধারণভাবে সারা বছরই জব কার্ড বাতিলের প্রক্রিয়া চলতে পারে। তবে আধার সংযুক্তিকরণ ছাড়া জব কার্ড থাকার কোনও মানেই হয় না। সেই জায়গাতেই দেখা যাচ্ছে জবকার্ড বাতিল হচ্ছে। সাধারণত পরিবারের কর্তা বা প্রবীণ সদস্যের নামে হয় কার্ড। সেটির মাধ্যমে পরিবারের সমস্ত সদস্যই কাজ পেতে পারেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, একটি পরিবারে একাধিক জব কার্ড হয়েছে। আবার অনেকে কার্ড থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন কোনও কাজ নেননি। সেই ‘নিষ্ক্রিয়’ কার্ডগুলিও বাতিল করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে বাতিল হয়েছে প্রায় ১৫ লক্ষ জব কার্ড।