নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের(West Bengal State Government Employees) বকেয়া মহার্ঘ্য ভাতা বা DA’র পরিমাণ প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। সেই টাকার জন্য আন্দোলন করে চলেছেন সরকারী কর্মচারীদের একাংশ। সেই আন্দোলনের মাঝেই সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। রাজ্যে কিছুদিন আগেই শেষ হয়েছে ষষ্ঠ দুয়ারে সরকার(Duyare Sarkar) কর্মসূচী। সেখানে গুচ্ছের আবেদন জমা পড়েছিল লক্ষ্মীর ভাণ্ডার(Lakhir Bhandar) প্রকল্পের জন্য। সেই সব আবেদন খতিয়ে দেখে এবারে নতুন করে প্রায় ১১ লক্ষ মহিলাকে এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকার। এর ফলে এই প্রকল্প খাতে বার্ষিক খরচ বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ১৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন দেশের Smart City of the Year তকমা পেল নিউটাউন
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে জিতে রাজ্যের মহিলাদের হাতে নগদের জোগান নিশ্চিত করতে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প চালু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বছর সেপ্টেম্বর মাস থেকে ১ কোটি ৫৩ লক্ষ মহিলার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি আর্থিক সহায়তা পাঠিয়ে চালু হয়েছিল প্রকল্প। তারপর দুয়ারে সরকার শিবিরের মাধ্যমে আবেদনপত্র জমা নেওয়া শুরু হয়। সবমিলিয়ে বর্তমানে উপভোক্তার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৮৮ লক্ষ। ষষ্ঠ পর্যায়ে দুয়ারে সরকার শিবিরে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য আবেদন জমা পড়েছে প্রায় ১১ লক্ষ ১৬ হাজার। তার মধ্যে ১০ লক্ষ ৩৯ হাজার আবেদন অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে তফসিলি জাতি ও উপজাতির উপভোক্তা সংখ্যা ১ লক্ষ ৩৬ হাজার এবং ২৮ হাজার ৬৯৬। এই প্রকল্পে তফসিলি জাতি ও উপজাতির উপভোক্তারা প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে পান। বাকিরা পান ৫০০ টাকা করে। এই পর্যায়ে দুই ২৪ পরগনা, মালদা, নদিয়া এবং হুগলি জেলায় বেশি মহিলা আবেদন জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন ‘এক বছর পর ঠিক হয়ে যাবে সরকারে কে থাকবে’, চ্যালেঞ্জ মমতার
২৬ এপ্রিল নবান্ন সভাঘরে প্রশাসনিক বৈঠকে বসবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠকের আগে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে অনুমোদিত আবেদনের সংখ্যা ১১ লক্ষ হয়ে যাবে। সেই টার্গেট ধরেই এগোচ্ছে রাজ্য সরকার। ওই অনুষ্ঠান থেকে নতুন উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠাবেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। এই প্রকল্পে মোট উপভোক্তার সংখ্যা এখন বেড়ে ১ কোটি ৯৮ লক্ষ হতে চলেছে। বর্তমানে, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে প্রতি মাসে সরকারের খরচ হয় ১০৩০ কোটি টাকা। নতুন সাড়ে ১০ লক্ষ উপভোক্তা যুক্ত হওয়ায় প্রতি মাসে এই খাতে খরচ বাড়ছে প্রায় ৬০ কোটি টাকা। অর্থাৎ বছরে ৭২০ কোটি। বছরের শুরুতেই এই খাতে খরচের টাকা ধরে রাখা আছে। ফলে তা দিতে কোনও সমস্যা হবে না বলেই রাজ্যের অর্থ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের পাশাপাশি কন্যাশ্রী, রুপশ্রী, কৃষকবন্ধু, মেধাশ্রী, বিধবা ভাতা, ঐক্যশ্রীর মতো প্রকল্পের উপভোক্তাদেরও ওই একই দিনে টাকা পাঠানো হবে। ২২ লক্ষ নতুন উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা ঢুকে যাবে। আবার সদ্য চালু হওয়া ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড সহ অন্যান্য সুবিধাও উপভোক্তাদের দেওয়া হবে।