নিজস্ব প্রতিনিধি: সবাই তাঁর স্নেহছায়া পান। কেউই বাদ যান না। এমনকি কোভিডকালে তাঁর অতি বড় বিরোধী ও সমালোচকেরাও অসুস্থ হলে তিনি নিজেই ফোন করে তাঁদের খবর নিতেন, পাশে থাকার বার্তা দিতেন। তাই রাজ্যের প্রবীণ মানুষগুলিও(Old Persons) তাঁর সেই স্নেহছায়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন না। কার্যত তাঁর নির্দেশেই এবার রাজ্যের সব হাসপাতালে(Hospitals) ধাপে ধাপে প্রবীণদের জন্য পৃথক জেরিয়াট্রিক বিভাগ এবং ওয়ার্ড(Geriatric Department and Ward) তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর(Health Department)। নজরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) মানবিক সিদ্ধান্ত।
আরও পড়ুন প্রয়াত প্রাক্তন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী, শোকপ্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর
যত দিন যাচ্ছে বাংলায় ততই প্রবীণদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে কলকাতা, হাওড়া, সল্টলেক ও শহততলি এলাকায় এবং আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল সহ শিলিগুড়ির বুকে নিসঙ্গ প্রবীণ দম্পতির সংখ্যা এখন ক্রমশই বাড়ছে। এই সব মানুষগুলি অসুস্থ হয়ে পড়লে নানান সমস্যার মুখে তাঁদের পড়তে হচ্ছে। কে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাবে? কীভাবে নিয়ে যাবে? চিকিৎসার খরচ কোথা থেকে আসবে? দ্রুত সেই চিকিৎসা পাবেন কিনা এই সব কিছু প্রশ্ন হয়ে উঠে আসছে। এই সব সমস্যার সমাধানেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পদক্ষেপ করছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। এখন চিকিৎসার খরচ বেসরকারি ক্ষেত্রে যেভাবে বেড়ে গিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে অনেকেই সেই চিকিৎসার খরচ বহণই করতে পারছেন না। এই সব কারণেই রাজ্যের বেশ কিছু প্রবীণ চিকিৎসক মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন বয়স্কদের সুচিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে। এই আর্জির জেরেই মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য দফতরের বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই কমিটি গঠিত হওয়ার পরে তার একটি বৈঠক হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। সেই বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রীর সুপারিশ মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে রাজ্যের সব হাসপাতালেই ধাপে ধাপে বয়স্কদের চিকিৎসার সুবিধার জন্য পৃথক জেরিয়াট্রিক বিভাগ এবং ওয়ার্ড তৈরি করা হবে।
আরও পড়ুন পূর্বসুরির পথে হাঁটলেন না নয়া রাজ্যপাল, গুরুত্ব রাজ্য সরকারকেই
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনটি পর্যায়ে বাস্তবায়িত হবে এই প্রকল্প। প্রথম পর্যায়ে রাজ্যের সব মেডিকেল কলেজগুলিতে এবং জেলার ৬টি হাসপাতালে বয়স্কদের চিকিৎসার বিশেষ ইউনিট তৈরি করা হবে। পরে ধাপে ধাপে সেই সংখ্যা বাড়িয়ে একেবারে গ্রামীণ এলাকা পর্যন্ত তা ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এই প্রকল্পের কাজে যুক্ত করা হবে আশাকর্মীদেরও। সেই সঙ্গে এই প্রকল্পের কাজে ১০২টি অ্যাম্বুলেন্সকে পরিষেবার কাজে নিযুক্ত করা হবে। বাড়ি থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া এবং হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ছেড়ে দেওয়ার মতো সমস্ত পরিষেবা দেবে রাজ্য। অসুস্থের কোনও সঙ্গী না থাকলে আশাকর্মীরা তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাবেন। আর চিকিৎসার ব্যয়ভার নির্বাহ করা হবে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে।