নিজস্ব প্রতিনিধি: পার্থ চট্টোপাধ্যায় (PARTHA CHATTERJEE) ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (ARPITA MUKHERJEE) জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ব্যাঙ্কশাল আদালত এদিন পার্থ ও অর্পিতার ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। উল্লেখ্য, ইডির পক্ষ থেকে তাঁদের জেল হেফাজতের আবেদন জানানো হয়। অন্যদিকে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী আবেদন জানিয়েছিলেন যে কোনও শর্তে জামিনের। তবে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবী তাঁর মক্কেলের জামিনের আবেদন জানননি।
এদিন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবী আদালতে বলেছিলেন, তাঁর মক্কেলের প্রাণ সংশয় রয়েছে। তাঁর খাবার ও জল পরীক্ষা করে যেন তাঁকে দেওয়া হয়। আবেদন ছিল, তাঁকে যেন বিশেষ বন্দির মর্যাদা দেওয়া হয়।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী বলেন, তাঁর মক্কেল প্রভাবশালী তকমা কাটাতে বিধায়ক পদ থেকেও ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। এদিন আইনজীবী বলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি বা তাঁর কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়নি কিছুই। ঘুষ কাণ্ডের কোনও প্রমাণ মেলেনি বলেও দাবি আইনজীবীর। তিনি বলেন, তাঁর মক্কেলকে যে কোনও শর্তে জামিন দেওয়া হোক। পালানোর মানুষ নন পার্থ। আইনজীবীর দাবি, তাঁর মক্কেল সাধারণ মানুষ। আইনজীবী বলেন, তাঁকে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পদ থেকে সরানো হয়েছে। বাকি যে সমস্ত পদে রয়েছেন, সেই সমস্ত পদ থেকেও ইস্তফা দিয়ে চান তিনি।
শুনানির সময় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীর দাবি, এখনও পর্যন্ত যে সমস্ত ডিড উদ্ধার করা হয়েছে, সেই সমস্ত কিছুই নকল। ওই সমস্ত ডিড আসল কি না, তা তদন্ত সাপেক্ষ বলেও দাবি আইনজীবীর। আইনজীবী বলেন, যা তথ্য হিসেবে পেশ করা হয়েছে তা সত্যি কি না, সেই প্রমাণ করার দায় তাঁদের, যারা পেশ করেছেন। আইনজীবীর আরও দাবি, তাঁর মক্কেল অসুস্থ। বয়স ৭২। তাঁর ক্রমাগত মেডিক্যাল পরীক্ষার প্রয়োজন।
অন্যদিকে, ইডির (ED) আইনজীবীর দাবি, পার্থ চট্টোপাধ্যায় তদন্তে অসহযোগিতা করছেন। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার হয়েছে। তা না কি লুকিয়ে রাখার নির্দেশ ছিল। দাবি, তদন্তে উঠে এসেছে আরও ৩ টি নতুন কোম্পানির কথা। আরও দাবি, খোঁজ মিলেছে একটি ট্রাস্ট ও আরও ৫০ টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের। যা থেকে টাকা লেনদেন হয়েছিল।
এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনিজীবী বলেন, তাঁর মক্কেল ও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের মধ্যে কোনও সম্পর্ক নেই। তাঁর মক্কেলকে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, ইডি স্পেশ্যাল কোর্টে এদিন ২ পক্ষের শুনানি চলে প্রায় ৪০ মিনিট। তারপরে রায়দান ছিল স্থগিত। কিছুক্ষণ পর আদালতের নির্দেশ, পার্থ ও অর্পিতার ১৪ দিনের জেল হেফাজতের। জেল হেফাজত ১৮ অগাস্ট পর্যন্ত।
অন্যদিকে কুণাল ঘোষ সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, তিনি ব্যক্তিগত ভাবে দাবি করছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে যেন সেলে রাখা হয়। তাঁর প্রশ্ন, ‘ষড়যন্ত্র করা হলে কেন প্রথম দিন থেকে তা দাবি করেননি তিনি‘। তারপরেই কুণালের কটাক্ষ, তাঁকে যে যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়েছে তা ভোগ করতে হবে পার্থকেও। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, সারদা কাণ্ডে তাঁর নাম ষড়যন্ত্র করে জড়িয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। স্পষ্ট করে তিনি এও বলেন, এর সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস দলের কোনও যোগ নেই।