নিজস্ব প্রতিনিধি: কথায় বলে আম গাছের ছাল জাম গাছে লাগে না। সেটাই সত্যি হয়ে দেখা গেল হাওড়ার(Howrah) বুকে এক খুনের ঘটনায়। শুক্রবার রাতে নিজের বাড়ির সিঁড়িতে খুন(Murder) হন এক ব্যবসায়ী। সেই খুনের ঘটনায় পুলিশ এবার গ্রেফতার(Arrest) করল ওই ব্যবসায়ীরই পালিত পুত্র ও তার এক বন্ধুকে যে সুপারি কিলারের ভূমিকা পালন করেছিল। গতকাল রাতেই দুইজনকে আটক করে লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। এদিন ভোরে তারা পুলিশি জেরার সামনে কার্যত ভেঙে পড়ে ও খুনের কথা কবুল করে। তারপরেই তাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিন দুপুরেই দুইজনকে হাওড়া জেলা আদালতে তোলা হবে বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। একই সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া ২ জনের কাছ থেকে একটি চাপারও উদ্ধার করেছে পুলিশ। জেরায় ধৃতরা জানায় এই চপার দিয়েই আঘাত করা হয়েছিল ওই ব্যবসায়ীকে।
শুক্রবার সাড়ে রাত ৯টা নাগাদ হাওড়া শহরের শিবপুর(Shibpur) থানা এলাকার কাজিপাড়ায়(Kajipara) নিজের ফ্ল্যাটের সিঁড়িতে আক্রান্ত হন ব্যবসায়ী তোহাব আলি। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর মাথার পিছনে কোপ দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন তোহাব। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করার পর আন্দুল রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় রাতেই। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। সেখানকার চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, চপারের আঘাতে তোহাবের মাথা কার্যত ফালা ফালা করে দেওয়া হয়েছে। আর তাঁরা এটাও জানান কোনও পেশাদার খুনির হাতেই এই ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার আগে তোহাব নিজের গাড়িতে কলকাতার দোকান থেকে ফিরেছিলেন। গাড়িতে ছিলেন তাঁর চালকও। পরে চালক নেমে তাঁর হাতে চাবি দিয়ে চলে যান। এরপরই অতর্কিতে হামলা চালান কেউ বা কারা। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তোহাবের পালিত ছেলে ও তার এক বন্ধুর সন্দেহজনক গতিবিধি চোখে পড়ে। তারপরেই তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
মৃত ব্যবসায়ী তোহাব আলির কলকাতার চাঁদনি মার্কেটে হার্ডওয়ারের ব্যবসা আছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ছিল ব্যবসা নিয়েই কারও সঙ্গে বিবাদ জেরে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। কিন্তু সিসিটিফি ফুটেজ সব ধারনা বদলে দেয়। তোহাবের পালিত পুত্রের আচার আচরণও খুব একতা ভাল ছিল না। বাড়ি থেকে পালিত মাতার সোনার গয়না চুরি, তোয়াবের টাকা চুরির মতো ঘটনা যেমন সে ঘটিয়েছিল তেমনি নিত্যদিন মদ খাওয়া, নাইট ক্লাবে যাওয়া, একাধিক মহিলাসঙ্গ, বিদেশযাত্রার মতো ঘটনাও ঘটিয়েছিল সে। তার জেরে পরিবারে তাকে নিয়ে চূড়ান্ত অশান্তিও শুরু হয়েছিল। এমনকি বৃহস্পতিবার রাতে তোহাবের সঙ্গে তার টাকাপয়সা নিয়ে ঝগড়াও বাঁধে। সেই সময় তোহাবের কাছ থেকে সে ৩ লক্ষ টাকা দাবি করেছিল যা দিতে রাজি হননি তোহাব। তারপরেই বন্ধুকে নিয়ে এই খুনের ঘটনা ঘটায় সে।