নেতাজি ভবন, জাতীয় গ্রন্থাগার ঘুরে সুর কাটলো ভিক্টোরিয়ায়
Share Link:

নিজস্ব প্রতিনিধি: নেতাজি তুমি কার, সে প্রশ্ন অনেক আগেই উঠে গিয়েছিল। কিন্তু নেতাজির জন্মদিবসে কলকাতার বুকে দেশের প্রধানমন্ত্রী আগমন এর আগে কোনওদিন ঘটেনি। এবার সেটাই কিন্তু ঘটেছে। নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে কলকাতায় পা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। স্বাভাবিক ভাবেই গত কয়েকদিন ধরেই তুঙ্গে উঠেছিল প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে রাজ্যবাসীর আগ্রহ। রাজনৈতিক মহলেরও অনেকেই বেশ আগ্রহ নিয়েই তাকিয়ে ছিলেন এই সফরে প্রধানমন্ত্রী যদি কিছু ঘোষণা করেন তা নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী এলেন, নেতাজি ভবন ঘুরে জাতীয় গ্রন্থাগারও গেলেন। এই পর্যন্ত সব ঠিক ছিল, কিন্তু সুর কাটলো ভিক্টোরিয়ায়। প্রধানমন্ত্রীর সামনেই অপমান করা হল বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে। আর সেটাও বাংলার মাটিতেই। এই একটা ঘটনাই কার্যত প্রধানমন্ত্রী সারাদিনের সফরে চোনা ফেলে দিল। আর এই ঘটনা যে রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে বড়সড় বিপাকে ফেলে দিতে পারে তা এক বাক্যে স্বীকার নিচ্ছেন গেরুয়া শিবিরের তাবড় তাবড় নেতা।
এদিন দুপুরে কলকাতায় পা রাখেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর নেতাজির নামাঙ্কিত দমদম বিমানবন্দর থেকে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে প্রধানমন্ত্রী চলে আসেন রেসকোর্সে। সেখান থেকে সড়কপথে প্রধানমন্ত্রী আসেন এলগিন রোডে নেতাজির বাসভবন 'নেতাজিভবন'এ। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান সুগত বসু ও সুমন্ত্র বসু। তাঁদের সঙ্গেই সেই বাড়ি ও নেতাজির স্মৃতিরক্ষার্থে থাকা নানা জিনিস ঘুরে ঘুরে দেখেন তিনি। আগে প্রধানমন্ত্রীর এই সফরসূচি যখন তৈরি হয়েছিল তখন তাঁর নেতাজিভবনে আসার কথা ছিল না। এদিন একদম শেষ মুহুর্তে এই বাসভবনকে প্রধানমন্ত্রীর সফরতালিকায় ঢোকানো হয়। সেই সময় তাঁর সঙ্গে কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও শুভেন্দু অধিকারীর থাকার কথা ছিল। কিন্তু সুগতবাবু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের নেতাজিভবনে আসা নিয়ে আপত্তি তোলেন। তার জেরেই জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক নেতা থাকবেন না। সেই মতোই প্রধানমন্ত্রী কোনও বিজেপি নেতা ছাড়াই নেতাজিভবন ঘুরে দেখেন।
পরে এই নিয়ে সুগতবাবু জানান, 'উনি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নেতাজি ভবনে এসেছিলেন। কোনও রাজনৈতিক নেতা হিসাবে আসেননি। যেমন সকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে নয়। তাঁর সঙ্গেও দলের কেউ আসেননি।' আবার সুগত বসুর আত্মীয় তথা বসু পরিবারের সদস্য চন্দ্র বসু জানান, 'কোথাও কোনও বিতর্ক নেই। কে বা কারা বিতর্ক ছড়াচ্ছে, জানি না। কোভিডের সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অধিক মাত্রায় ভিড় করা উচিত নয়। তাই যে বা যাঁরা মিউজিয়ামের দায়িত্বে আছেন, তাঁদের সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী মিউজিয়াম ঘুরে দেখেন।' নেতাজি ভবন থেকেই প্রধানমন্ত্রী চলে যান জাতীয় গ্রন্থাগারে। সেখানে তাঁর ৪০ মিনিট থাকার কথা ছিল। কিন্তু মাত্র ২০ মিনিট সেখানে থাকেন মোদি। সেখান থেকেই মোদির কনভয় চলে যায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের পথে। এখানেই সাক্ষাৎ হয় মোদি-মমতার। কার্যত রাজ্য রাজনীতিতে এই মুহুর্তের জন্য সবাই অপেক্ষা করছিল। কারন আম্ফানের পরিদর্শনে আসা মোদির সঙ্গে মাঝে আর সাক্ষাৎ হয়নি মমতার। কিন্তু এই অনুষ্ঠানেই কার্যত নাক কাটা গেল বিজেপির তথা কেন্দ্রীয় সরকারের।
ঘটনার সূত্রপাত অনুষ্ঠানের সঞ্চালক মমতাকে বলতে ডাকার পরেই। তিনি মঞ্চের চেয়ার ছেড়ে পোডিয়ামের দিকে এগোতেই সামনের সমবেত জনতার একাংশ ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে শুরু করে। যা শুনে দৃশ্যতই বিরক্ত হন মমতা। এরপরেই ক্ষুব্ধ মমতা পোডিয়ামের সামনে দাঁড়িয়ে প্রথমেই হিন্দিতে বলেন, 'আমার মনে হয়, সরকারি অনুষ্ঠানের একটা শালীনতা তাকা উচিত। এটা কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি নয়। এটা সমস্ত দলেরই কর্মসূচি। জনতার কর্মসূচি। আমায় এখানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। কিন্তু কাউকে আমন্ত্রণ করে অসম্মান করাটা শোভনীয় নয়। এর প্রতিবাদে আমি এখানে কিছু বলছি না। জয় হিন্দ! জয় বাংলা!' এর পরেই মমতা পোডিয়াম ছেড়ে চলে যান। যখন এই ঘটনা ঘটছে, তখন সেখানে নীরবে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। মমতার পরেই বলতে উঠে মোদি তাঁর ভাষণ শুরু করেন ‘বহেন মমতা’জি’ বলে। এমনকি এই সময়েও 'জয় শ্রীরাম' শ্লোগান শোনা যায়। যা শুনে প্রধানমন্ত্রী তিনবার 'জয়হিন্দ' ধ্বনি দেন, যা শুনে অনেকেরই মনে হয় প্রধানমন্ত্রী ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু তারপরও গোটা অনুষ্ঠানের সুর আর ফিরে আসেনি।
এদিনের ঘটনা নিয়ে রাজ্য রাজনীতির পাশাপাশি জাতীয় স্তরের রাজনীতিতেও বড়সড় বিতর্ক দেখা দিয়েছে। তৃণমূলের তরফে প্রতিবাদ শুরু হয়েই গিয়েছে। আর এই অভিঘাতেই কার্যত মুখ পুড়ছে বিজেপির। ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান নিয়ে এর আগে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মমতা। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অনুষ্ঠান ছিল একান্ত ভাবেই সরকারি। সেখানে রাজনীতির কোনও ছোঁয়া ছিল না। সকলেই দলমতনমির্বিশেষে নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানাতে সমবেত হয়েছিলেন। সেখানে ওই স্লোগান ওঠা চূড়ান্তভাবেই অবাঞ্ছিত বলে বিজেপি নেতাদের একাংশও মনে করছেন। তাঁদের মতে, বিজেপি একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ দল বলেই পরিচিত। সেখানে এমন ধরনের অবিমৃশ্যকারিতা এবং বিশৃঙ্খলা শুধু অপ্রত্যাশিতই নয়, অভাবনীয়ও বটে। দলের এক প্রথমসারির নেতার কথায়, 'অতি উৎসাহী কিছু লোকজন ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। এমন হওয়া একেবারেই উচিত ছিল না।'
এদিন দুপুরে কলকাতায় পা রাখেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর নেতাজির নামাঙ্কিত দমদম বিমানবন্দর থেকে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে প্রধানমন্ত্রী চলে আসেন রেসকোর্সে। সেখান থেকে সড়কপথে প্রধানমন্ত্রী আসেন এলগিন রোডে নেতাজির বাসভবন 'নেতাজিভবন'এ। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান সুগত বসু ও সুমন্ত্র বসু। তাঁদের সঙ্গেই সেই বাড়ি ও নেতাজির স্মৃতিরক্ষার্থে থাকা নানা জিনিস ঘুরে ঘুরে দেখেন তিনি। আগে প্রধানমন্ত্রীর এই সফরসূচি যখন তৈরি হয়েছিল তখন তাঁর নেতাজিভবনে আসার কথা ছিল না। এদিন একদম শেষ মুহুর্তে এই বাসভবনকে প্রধানমন্ত্রীর সফরতালিকায় ঢোকানো হয়। সেই সময় তাঁর সঙ্গে কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও শুভেন্দু অধিকারীর থাকার কথা ছিল। কিন্তু সুগতবাবু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের নেতাজিভবনে আসা নিয়ে আপত্তি তোলেন। তার জেরেই জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক নেতা থাকবেন না। সেই মতোই প্রধানমন্ত্রী কোনও বিজেপি নেতা ছাড়াই নেতাজিভবন ঘুরে দেখেন।
পরে এই নিয়ে সুগতবাবু জানান, 'উনি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নেতাজি ভবনে এসেছিলেন। কোনও রাজনৈতিক নেতা হিসাবে আসেননি। যেমন সকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে নয়। তাঁর সঙ্গেও দলের কেউ আসেননি।' আবার সুগত বসুর আত্মীয় তথা বসু পরিবারের সদস্য চন্দ্র বসু জানান, 'কোথাও কোনও বিতর্ক নেই। কে বা কারা বিতর্ক ছড়াচ্ছে, জানি না। কোভিডের সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অধিক মাত্রায় ভিড় করা উচিত নয়। তাই যে বা যাঁরা মিউজিয়ামের দায়িত্বে আছেন, তাঁদের সঙ্গেই প্রধানমন্ত্রী মিউজিয়াম ঘুরে দেখেন।' নেতাজি ভবন থেকেই প্রধানমন্ত্রী চলে যান জাতীয় গ্রন্থাগারে। সেখানে তাঁর ৪০ মিনিট থাকার কথা ছিল। কিন্তু মাত্র ২০ মিনিট সেখানে থাকেন মোদি। সেখান থেকেই মোদির কনভয় চলে যায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের পথে। এখানেই সাক্ষাৎ হয় মোদি-মমতার। কার্যত রাজ্য রাজনীতিতে এই মুহুর্তের জন্য সবাই অপেক্ষা করছিল। কারন আম্ফানের পরিদর্শনে আসা মোদির সঙ্গে মাঝে আর সাক্ষাৎ হয়নি মমতার। কিন্তু এই অনুষ্ঠানেই কার্যত নাক কাটা গেল বিজেপির তথা কেন্দ্রীয় সরকারের।
ঘটনার সূত্রপাত অনুষ্ঠানের সঞ্চালক মমতাকে বলতে ডাকার পরেই। তিনি মঞ্চের চেয়ার ছেড়ে পোডিয়ামের দিকে এগোতেই সামনের সমবেত জনতার একাংশ ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে শুরু করে। যা শুনে দৃশ্যতই বিরক্ত হন মমতা। এরপরেই ক্ষুব্ধ মমতা পোডিয়ামের সামনে দাঁড়িয়ে প্রথমেই হিন্দিতে বলেন, 'আমার মনে হয়, সরকারি অনুষ্ঠানের একটা শালীনতা তাকা উচিত। এটা কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি নয়। এটা সমস্ত দলেরই কর্মসূচি। জনতার কর্মসূচি। আমায় এখানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। কিন্তু কাউকে আমন্ত্রণ করে অসম্মান করাটা শোভনীয় নয়। এর প্রতিবাদে আমি এখানে কিছু বলছি না। জয় হিন্দ! জয় বাংলা!' এর পরেই মমতা পোডিয়াম ছেড়ে চলে যান। যখন এই ঘটনা ঘটছে, তখন সেখানে নীরবে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। মমতার পরেই বলতে উঠে মোদি তাঁর ভাষণ শুরু করেন ‘বহেন মমতা’জি’ বলে। এমনকি এই সময়েও 'জয় শ্রীরাম' শ্লোগান শোনা যায়। যা শুনে প্রধানমন্ত্রী তিনবার 'জয়হিন্দ' ধ্বনি দেন, যা শুনে অনেকেরই মনে হয় প্রধানমন্ত্রী ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু তারপরও গোটা অনুষ্ঠানের সুর আর ফিরে আসেনি।
এদিনের ঘটনা নিয়ে রাজ্য রাজনীতির পাশাপাশি জাতীয় স্তরের রাজনীতিতেও বড়সড় বিতর্ক দেখা দিয়েছে। তৃণমূলের তরফে প্রতিবাদ শুরু হয়েই গিয়েছে। আর এই অভিঘাতেই কার্যত মুখ পুড়ছে বিজেপির। ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান নিয়ে এর আগে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মমতা। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের অনুষ্ঠান ছিল একান্ত ভাবেই সরকারি। সেখানে রাজনীতির কোনও ছোঁয়া ছিল না। সকলেই দলমতনমির্বিশেষে নেতাজিকে শ্রদ্ধা জানাতে সমবেত হয়েছিলেন। সেখানে ওই স্লোগান ওঠা চূড়ান্তভাবেই অবাঞ্ছিত বলে বিজেপি নেতাদের একাংশও মনে করছেন। তাঁদের মতে, বিজেপি একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ দল বলেই পরিচিত। সেখানে এমন ধরনের অবিমৃশ্যকারিতা এবং বিশৃঙ্খলা শুধু অপ্রত্যাশিতই নয়, অভাবনীয়ও বটে। দলের এক প্রথমসারির নেতার কথায়, 'অতি উৎসাহী কিছু লোকজন ওই ঘটনা ঘটিয়েছে। এমন হওয়া একেবারেই উচিত ছিল না।'
More News:
6th March 2021
6th March 2021
ভারতী বনাম হূমায়ন, ডেবরার মাঠে ভোটযুদ্ধে দুই প্রাক্তন আইপিএস
6th March 2021
6th March 2021
6th March 2021
6th March 2021
6th March 2021
Leave A Comment