32ºc, Haze
Sunday, 2nd April, 2023 5:14 pm
নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যে প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি(Primary Recruitment Scam) মামলারই অন্যতম অভিযুক্ত মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল(Tapas Mondol) বুধবার হাজিরা দেন কলকাতার সিবিআই(CBI) কার্যালয়ে। নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডির(ED) দায়ের করা মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই চার্জশিট জমা পড়েছে আদালতে। সেই তাপসকেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার নিজাম প্যালেসে তলব করে সিবিআই। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের শেষে বার হওয়ার সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিস্ফোরক দাবি করেন তাপস, যিনি আবার খোলেন শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলির সংগঠন অল বেঙ্গল টিচার্স ট্রেনিং অ্যাচিভার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্তা। তাপস বলেন, নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় শুধুমাত্র ৩২৫ জনের চাকরির পিছনে ১০০ কোটি টাকার খেল আছে। আর এখানেই প্রশ্ন ঘুরছে, এই দাবি যদি সত্যি হয় তাহলে এই বিপুল পরিমাণ টাকা গেল কোথায়?
আরও পড়ুন যোশীমঠের মতই পরিণতি হতে পারে সল্টলেক-নিউটাউনের
গতকাল ঠিক কী বলেছেন তাপস? সিবিআই কার্যালয় থেকে বার হওয়ার সময় সাংবাদিকদের সামনে তাপস বলেন, ‘আমার কিছু পরিচিত ও ছাত্রছাত্রী চাকরির জন্য একজনকে টাকা দিয়েছিলেন। তাঁর কথা আমি ইডিকেও বলেছিলাম। তারা কিছু করেনি। আমি হিসাব করে দেখেছি, তিনি সব মিলিয়ে ১৯ কোটি ৪৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। ওই ব্যক্তির নাম কুন্তল ঘোষ। তিনি আমার সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত। এই টাকার সন্ধান তো আমিই সিবিআইকে দিয়েছি। এটা আমার পরিচিতদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি। তবে আমার কাছে খবর আছে, এর পিছনে ১০০ কোটি টাকার খেল আছে।’ এর বেশি কিছু কিন্তু জানাননি তাপস। এখন তাপসের এই দাবির সঙ্গে অন্য একটি বিষয়ও মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। আর সেটা হল, তাপস যাঁর নাম প্রকাশ্যে বললেন, তাঁর পদবি ঘোষ। ইডির চার্জশিটে যে ‘ঘোষ বাবু’র কথা বলা হয়েছে মিডলম্যান হিসাবে তার পদবিও ঘোষ। এই দুই ঘোষ একই লোক নাকি আলাদফা সেটাই এখন দেখতে চাইছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা এজেন্সির আধিকারিকেরা। যদিও অনেকেই মনে করছেন তাপসের বলা কুন্তল ঘোষই সম্ভবত ইডির চার্জশিটে থাকা ‘ঘোষবাবু’। এর মাধ্যমেই ৩২৫জন অবৈধ ভাবে ১০০ কোটি টাকার বিনিময়ে চাকরি পেয়েছে প্রাথমিকে।
আরও পড়ুন জাকিরের ডেরা থেকে উদ্ধার ১৫ কোটি টাকা
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই ১০০ কোটি টাকা গেল কোথায়? টাকা যা শাসক শিবিরের অন্দরেই ঢুকেছে তা মোটামুটি বুঝিয়ে দিয়েছেন তাপস। কিন্তু সেই টাকা কী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের(Partha Chattopadhay) হেফাজতেই ছিল যা তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের(Arpita Mukhopadhay) ফ্ল্যাট ও বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে? নাকি সেই টাকা অন্য কোথাও পাচার বা লগ্নী হয়েছে? নাকি অন্য কোথাও তা লুকানো আছে? এই প্রশ্নের উত্তর এখন ঘুরছে রাজ্যজুড়ে মানুষের মুখে মুখে। যদিও এইসব নিয়ে বিন্দুমাত্র উদ্বিগ্ন নন বাংলার আমজনতা থেকে শাসক দলের নেতাকর্মীরা। কেননা রাজ্যের বিরোধী শক্তিগুলি কতটা ধোয়া তুলসি পাতা সেটা বাংলার মানুষ বেশ ভালই জানেন। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচন বা লোকসভা নির্বাচনের আগে যতই কোটি কোটি টাকা যত্রতত্র থেকে উদ্ধার হোক না কেন, তাতে শাসকের ভোটবাক্সে বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়বে না। এটা আমজনতাও জানেন, শাসক দলের প্রতিটি নেতা থেকে কর্মী মায় মন্ত্রীরাও জানেন।