নিজস্ব প্রতিনিধি: বিশ্ববরেণ্য নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন(Amartya Sen) জানিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী(Prime Minister) হওয়ার যোগ্যতা রাখেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। কিন্ত সেই সঙ্গে কোন পথে মমতা প্রধানমন্ত্রী হবেন তা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন। বলেছেন, ‘মমতার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা থাকলেও বিজেপি(BJP) বিরোধী শক্তিগুলিকে সংহত করে তিনি নেতৃত্ব দিতে পারবেন কি না, তা এখনও প্রতিষ্ঠিত নয়।’ আর সেই সূত্রেই রাজ্য রাজনীতিতে তো বটেই, জাতীয় স্তরের রাজনীতিতেও চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে যোগ্যতা থাকলেও কী প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন মমতা? কে তাঁকে সমর্থন দেবেন? ২৭২ এর ম্যাজিগ ফিগার আসবেই বা কোথা থেকে? মমতা অবশ্য অমর্ত্যের বার্তাকে সসম্মাণে গ্রহণ করেছেন।
আরও পড়ুন ২৪-য়ে প্রধানমন্ত্রী মমতা, ভবিষ্যদ্বাণী অমর্ত্য সেনের
মমতা অমর্ত্যের বার্তা প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘অমর্ত্য সেন বিশ্ববরেণ্য পণ্ডিত, আমাদের অন্যতম গর্ব। তাঁর পর্যবেক্ষণ আমাদের পথ দেখায়। তাঁর উপদেশ আমাদের কাছে আদেশ। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তাঁর পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন নিশ্চয় সবাইকে গুরুত্ব দিয়ে ভাবতে হবে। বিভিন্ন রাজ্যে আঞ্চলিক দলগুলির উত্থান এবং গুরুত্ব অমর্ত্য সেন বুঝেছেন বলেই এ ব্যাপারে তিনি তাঁর বক্তব্য জানিয়ে সজাগ করতে চেয়েছেন। বিজেপি শুধু যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ওপরেই আঘাত হানছে না যে সব রাজ্যে বিরোধী দলের সরকার রয়েছে তারা সেখানে নানা ভাবে দলীয় এবং দিল্লির ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে তাদের ওপর ধারাবাহিক ভাবে আক্রমণ হানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে অমর্ত্য সেন তাঁর পর্যবেক্ষণের মধ্যে বিরোধী দলগুলির আগামী কর্তব্য সম্পর্কেও কিছুটা দিকনির্দেশ করেছেন। সেখান থেকে আমাদের সকলেরই শিক্ষা নেওয়া উচিত বলে মনে করি।’ এ তো নয় গেল মমতার কথা। কিন্তু সংখ্যা কোথায়?
আরও পড়ুন রাশিয়া নয়, মমতাতেই আস্থা ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের
মমতার দল তৃণমূল যদি আগামী লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে ৪২টি আসনও পেয়ে যায় তারপরেও প্রশ্ন থাকবে বাকি ২৩০টা আসন কোথা থেকে আসবে? জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে এখন মমতার যা প্রভাব তাতে ধরে নেওয়াই যাচ্ছে অখিলেশের সমাজবাদী পার্টি, জগনের ওয়াইএসআর কংগ্রেস, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আপ, কে চন্দ্রশেখর রাও এর তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি বা টিআরএস চোখ বুজে মমতাকেই সমর্থন জানাবে। কেননা এদের রাজ্যে এদের লড়াই করতে হচ্ছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও। তাই রাহুল গান্ধিকে সমর্থন জানানো তাঁদের কাছে শেষ অবস্থান হবে। মমতা তাঁদের কাছে আগে গ্রহণণীয়। কিন্তু মমতাকে প্রধানমন্ত্রী পদে সমর্থন জানানোর প্রশ্নে সংশয় থাকছে শরদ পাওয়ারের এনসিপি, লালু প্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল, উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা, এম কে স্ট্যালিনের ডিএমকে-কে ঘিরে। কেননা এদের রাজ্যে এরা কংগ্রেসের(INC) সঙ্গে জোটে রয়েছে। সেই জোট তাঁরা চট করে ভাঙতে চাইবে না। কেবলমাত্র কংগ্রেস যদি তৃণমূলের থেকেও কম আসন পায় তাহলেই মমতাকে সমর্থন জানাতে এরা এগিয়ে আসবেন। আর সেটাও বিজেপিকে ঠাকানোর দোহাই দিয়ে।
আরও পড়ুন মোদির বন্ধ করে দেওয়া পড়ুয়া বৃত্তি এবার দেবেন মমতা
কিন্তু যদি মমতা সমাজবাদী পার্টি, ওয়াইএসআর কংগ্রেস, আপ ও টিআরএসের সমর্থন নিয়ে কেন্দ্রে সরকার গঠনের তোড়জোড় করেন আর বিজেপি যদি সেই সরকারকে পিছন থেকে সমর্থন দিতে এগিয়ে আসে তখন কিন্তু খেলা ঘুরে যেতেই পারে। কংগ্রেস যা মমতাকে প্রধানমন্ত্রী পদে সমর্থন জানাবে না সেটা মোটামুটি পরিষ্কার। কিন্তু বিজেপি যদি মমতার পিছনে দাঁড়িয়ে যায় তখন কিন্তু কংগ্রেসের হাতেও কিছু অবশিষ্ট থাকবে না। কেননা দেশের অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞই মনে করছেন, মমতা যদি কোনওদিন প্রধানমন্ত্রী হয়ে যান তাহলে সব থেকে বড় ধাক্কা খাবে কংগ্রেস। বাংলা থেকে যেমন কংগ্রেস নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে তেমনি দেশের সংসদ থেকেও তাঁরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারেন মমতার দাপটে।