এই মুহূর্তে




১০ বছর বাদে চি‍ৎপুরে বৃদ্ধ দম্পতি খুনে সঞ্জয়কে ফাঁসির সাজা শোনালেন বিচারক




নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ১০ বছর পর বৃদ্ধ দম্পতি খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্তকে  ফাঁসির সাজা শোনাল শিয়ালদহ আদালত। সাজা ঘোষণা করলেন বিচারক অনির্বাণ দাস। আরজি কর মামলার বিচারেরও দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

২০১৫ সালের জুলাই মাসের চিৎপুরের ইন্দ্রালোক আবাসনে বৃদ্ধ দম্পতি খুন হন। খুনের অভিযোগ ওঠে সঞ্জয় সেন ওরফে বাপ্পার বিরুদ্ধে। বৃদ্ধ দম্পতির বাড়ির পরিচারিকা ছিলেন সঞ্জয়ের স্ত্রী। সেই মামলারই শুনানি চলছিল। অবশেষে এত বছর পর বিভৎসতা ও নৃশংসতার কথা মাথায় রেখে ফাঁসির সাজা শোনালো আদালত। এই খুনকে বিরলের মধ্যে বিরলতম বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।

এই ঘটনা ঘটেছিল দশ বছর আগে। মানুষকে বিশ্বাস ও ভালবাসার বিনিময়ে মূল্য চোকাতে হয়েছিল বৃদ্ধ বৃদ্ধাকে। তাঁদেরই হত্যার অভিযোগ ওঠে এক যুবকের বিরুদ্ধে। নাম তার সঞ্জয় সেন। সঞ্জয়কে নিজেদের সন্তানের মতো দেখতেন প্রাণগোবিন্দ দাস এবং তাঁর স্ত্রী রেণুকা দাস। সত্তরের কোঠায় বয়স। দিম্পতির এক মেয়ে, সেই মার্কিন প্রবাসী। ফলে সঞ্জয়ের ওপর কাজ করত অন্ধ সন্তান স্নেহ।

চিৎপুরের একটি আবাসনের ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। তাঁদের দেখা শোনার জন্য থাকতেন পূর্ণিমা। তরুণী পূর্ণিমাকে মেয়ের মতো ভালবাসতেন রেনুকা। তাঁর ভবিষ্যৎ গড়তে দম্পতি সঞ্জয়ের সঙ্গে বিয়ে দেন পূর্ণিমার। কিন্তু ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি কী মূল্য চোকাতে হবে এর জন্য। অর্থের লোভে বৃদ্ধ বৃদ্ধাকে খুন করে সঞ্জয়। পুলিশ এসে ২০১৫ সালের জুলাইয়ে  ফ্ল্যাট থেকে দম্পতির দেহ উদ্ধার করে।

সঞ্জয়ের উপর স্নেহ থেকে দম্পতির মধ্যে তৈরি হয়েছিল নির্ভরতা। ফলে বাজার দোকান করা হোক বা অন্য সব কাজ, সঞ্জয় ছাড়া তাঁদের চলত না। প্রাণগোবিন্দ আর রেণুকার সেই বিশ্বাসের অমর্যাদা করেছিল এই ব্যক্তি। সঞ্জয়কে সময়ে অসময়ে আর্থিকভাবেও সাহায্য করতেন বৃদ্ধ দম্পতি। সঞ্জয়ের একটি রিকশা ছিল। সেটি চালিয়ে উপার্জন করত সে। রিকশাটিও কিনে দেওয়া ছিল প্রাণগোবিন্দ দাসেরই।

অর্থের লোভে বৃদ্ধ বৃদ্ধাকে খুন করে সঞ্জয়। পুলিশ এসে ২০১৫ সালের জুলাইয়ে  ফ্ল্যাট থেকে দম্পতির দেহ উদ্ধার করে। দম্পতিকে লোহার রড দিয়ে খুন করে ফ্ল্যাটেই ফেলে রেখেছিল অভিযুক্ত। পূর্ণিমা কিন্তু কিছুই জানতেন না। পরদিন কাজে এসে দম্পতি দরজা না খোলায় তাঁর সন্দেহ হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু কাউকে কিছু বলেননি।

দিন দুয়েক পর ফ্ল্যাট থেকে পচা গন্ধ বেরোতে থাকলে প্রতিবেশীরাই খবর দেন পুলিশে। পুলিশ এসে ফ্ল্যাট থেকে দম্পতির পচা গলা দেহ উদ্ধার করে। ফ্ল্যাটের দু’টি ঘরে পড়েছিল দুজনের দেহ। বাড়ি থেকে নগদ ১ লক্ষ ২৬ হাজার টাকা এবং আলমারি থেকে প্রায় ৫০ ভরি সোনা নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল সঞ্জয়।

পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তবে তাও খুব সহজে হয়নি। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ঘটনার দিন সকালে সঞ্জয় রিকশায় চাপিয়ে প্রানগোবিন্দ দাসকে বাড়ি পৌছে দিয়েছিল। কিন্তু পরে আবারও ওই বাড়িতেই গিয়েছিল। এরপর শুরু হয় তল্লাশি।

ঘটনার দু’দিন পরে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে পৈতৃক বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় সঞ্জয়কে। লোহার রড ও রক্তমাখা জামা কাপড় উদ্ধার হয়েছিল চিৎপুরের এক পুকুর থেকে। চুরি যাওয়া নগদ এবং সোনা পাওয়া যায় নন্দীগ্রামে মাটির নীচ থেকে।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

বাংলায় এসে মিথ্যাচার করছে প্রধানমন্ত্রী মোদি, কটাক্ষ তৃণমূলের

২১ জুলাইয়ের সভা ঘিরে একাধিক শর্ত হাইকোর্টের, ডিভিশন বেঞ্চে যাচ্ছে তৃণমূল

২১ জুলাই সকাল ৯’টা থেকে দু’ঘণ্টার জন্য কলকাতায় মিছিল নয় ,নির্দেশ হাইকোর্টের

SSC মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নানা ইস্যুতে একাধিক প্রশ্ন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজার

২১ জুলাইয়ের সমাবেশের প্রস্তুতি তুঙ্গে, মঞ্চে সম্মান প্রদান শিক্ষকদের

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ