নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতার বুকে এখন দৈনিক কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩ হাজার ছুঁইছুঁই। রাজ্যে সেটাই ৫ হাজারের দোরে। এই অবস্থায় রাজ্য সরকার কড়া বিধিনিষেধ আরোপের পথে হাঁটা দিতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বিশেষত কলকাতা ও তার আশেপাশের জেলাগুলিতে সেই বিধিনিষেধ একটু বেশি মাত্রায় করা হবে বলেই অনুমান করা হচ্ছে। সেই সূত্রেই জানা গিয়েছে কলকাতার বুকে ১১টি রাস্তার কিছু কিছু অংশে এদিনই মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন হিসাবে ঘোষণা করতে চলেছে কলকাতা পুরনিগম। সেই সঙ্গে কিছু আবাসনকেও মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন হিসাবে ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
কলকাতার বুকে যে ওমিক্রনের গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে সেটা আগেই অনুমান করেছিলেন চিকিৎসক থেকে বিশেষজ্ঞরা। যদিও স্বাস্থ্য দফতর থেকে এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও ঘোষণা করা হয়নি। তবে বিশেষজ্ঞদের অনুমান প্রতিষ্ঠা পেয়েছে স্বাস্থ্য দফতরেরই প্রকাশ করা কোভিড রিপোর্টে যেখানে বলা হয়েছে খাস কলকাতাতেই এখন কোভিড টেস্টের পজিটিভ রেট ২৩.৪২ শতাংশ। এই অবস্থায় কলকাতা পুরনিগম কড়া হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে নামছে। সেই লক্ষ্যেই শহরের ১১টি রাস্তায় এদিনই মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন ঘোষণা করতে চলেছে পুরনিগম। এগুলি হল – তিলজলা রোড, ক্যানাল ইস্ট রোড, ময়ূরভঞ্জ রোড, জাজেস কোর্ট রোড, অশোকা রোড, বেলভেডিয়ার রোড, এনএসসি বোস রোড ও পণ্ডিতিয়া রোডের মতো রাস্তা। এছাড়াও দেখা যাচ্ছে কসবা, কালিকাপুর, মুকুন্দপুর, যাদবপুর, বালিগঞ্জ, ভবানীপুর, চেতলা, টালিগঞ্জ, বেহালা, নিউ আলিপুর, উল্টোডাঙা, হাতিবাগান, তিলজলা, শিয়ালদহ, পার্ক সার্কাস প্রভৃতি এলাকাতেই কোভিড রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
শহরে এখন যত কোভিড রোগী দেখা যাচ্ছে তার ৮০ শতাংশই কিন্তু উপসর্গহীন। মৃদু উপসর্গ দেখা যাচ্ছে ১৭ শতাংশের মধ্যে। আর মাত্র ৩ শতাংশ কোভিড আক্রান্তদের ভর্তি হতে হচ্ছে হাসপাতালে। তাই পুরনিগমের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কলকাতার কোনও একটি বহুতলে ৫ জনের বেশি বাসিন্দা করোনায় আক্রান্ত হলেই সেই গোটা আবাসনকে এ বার থেকে মাইক্রো-কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। আবার ৭ দিনের মধ্যে একই পাড়ার ৫ জন বাসিন্দার শরীরে করোনার জীবাণু মিললে ওই তল্লাটকে আনা হবে মাইক্রো-কনটেনমেন্ট জোনের আওতায়। আগামিকাল সকাল থেকেই শহরের যে সব এলাকায় মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন চালু করে দেওয়া হবে সেই সব এলাকায় পুলিশ গিয়ে মাইকিং করে গোটা বিষয়টি সেখানকার বাসিন্দাদের জানিয়ে দেবেন। সেই সঙ্গে বসবে ব্যারিকেড। পাহারায় থাকবেন পুলিশকর্মীরা। ওই সব মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোনের বাসিন্দারা যাতে কেউ ওই জোনের বাইরে যাতে বার হতে না পারেন তার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পুরনিগমের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেখানকার বাসিন্দাদের যাবতীয় প্রয়োজনীয় জিনিস বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিতে।