নিজস্ব প্রতিনিধি: আসার কথা তার ১০ জুন তারিখে। কিন্তু এলেন তিনি ১৬ জুন। অর্থাৎ সময়ের থেকে ৬ দিন দেরিতে। কিন্তু এলেও কী হবে, নেই তার কোনও ক্ষমতা। আর তাই বৃষ্টিরও সেভাবে দেখা মিলছে না দক্ষিণবঙ্গের(South Bengal) জেলাগুলিতে। মৌসুমি বায়ুর(Monsoon) আগমন অবশেষে ঘটেছে দক্ষিণবঙ্গের বুকে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কলকাতার(Kolkata) আকাশ মেঘলা। আবহাওয়াবিদদের দাবি, এই মেঘের উৎস মৌসুমি বায়ু। দক্ষিণবঙ্গে দেরিতে হলেও মৌসুমি বায়ু অবশেষে পা রেখেছে। কিন্তু সেই মৌসুমি বায়ু এতটাই দুর্বল যে দক্ষিণবঙ্গজুড়ে বৃষ্টি(Rain) নামাতে পারছে না সে। আর তার জেরে বৃষ্টির জন্য দক্ষিণবঙ্গকে হা পিত্যেশ করে বসে থাকতেই হচ্ছে। তুলনায় উত্তরবঙ্গের(North Bengal) ছবিটা সম্পূর্ণ আলাদা। সেখানে এতটাই বেশি বৃষ্টি হয়েছে এবং হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যে বন্যার আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদ থেকে প্রশাসনিক কর্তা মায় আমজনতাও।
বৃহস্পতিবার আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা প্রবেশের পালা শুরু হয়ে গিয়েছে। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তা দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু মৌসুমী বায়ু এখন দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। তার জেরে এখনই ধারাপাত নামবে না। যদিও প্রাক বর্ষার বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে গিয়েছে জেলায় জেলায়। তার জেরে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি কমতে পারে। ফলে অস্বস্তি কিছুটা হলেও কমবে। তবে দক্ষিণবঙ্গজুড়ে এখনই ভারী বৃষ্টি নামার কোনও সম্ভাবনা নেই। তবে বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকছে সব জেলাতেই। কিন্তু সেটা প্রাক বর্ষার বৃষ্টি। এদিন বিকালের দিকে কলকাতাতেও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পটিবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে। এদিন ভোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২৮.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.৭ ডিগ্রি, যা স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি কম।
দক্ষিণবঙ্গে যখন এই অবস্থা তখন পুরো উলটো ছবি উত্তরবঙ্গের বুকে। সেখানে আগামী ২০ তারিখ পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। ফলে উত্তরের নদীগুলির জলস্তর বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় থাকছে ধসের সম্ভাবনাও। ডুয়ার্সে নদীর জলস্তর বাড়লে সেখানে নীচু এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কাও থাকছে। সেক্ষেত্রে মাঠে থাকা শস্যেরও ক্ষতি হতে পারে। এদিন সকাল থেকেই বিপদসংকেতের ওপর দিয়ে বইছে তিস্তার জল। তাই সেখানে জারি হয়েছে হলুদ সতর্কতা। নদী বাঁধের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গ্রাউন্ড জিরোতে পৌঁছে গিয়েছেন খোদ পুলিশ সুপার ও প্রশাসনের কর্তারা।
নদী বাঁধের পরিস্থিতি ঠিক কেমন এবং বন্যা এলে কোন এলাকার কোন ফ্লাড শেল্টারে আশ্রয় নেবেন বানভাসিরা তা ভাল করে ঘুরে দেখেন জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জলপাইগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চ্যাটার্জী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা। ভাল করে ঘুরে দেখে এলাকাবাসীদের আশ্বস্ত করেন তাঁরা।