নিজস্ব প্রতিনিধি: মৌসম ভবন থেকে ঘূর্ণিঝড়ের পুর্বাভাস পাওয়ার পর তৎপরতা শুরু করল রাজ্য প্রশাসন। বঙ্গে ঘূর্ণিঝড় এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আগাম সতর্কতামূলক প্রস্তুতি এবং তার পরবর্তী পরিস্থিতিতে উদ্ধারকাজ, ত্রাণবন্টন কীভাবে হবে সেই সব বিষয় নিয়ে আগাম প্রস্তুতি হিসাবে বৈঠক ডাকলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব হরি কৃষ্ণ দ্বিবেদী। আগামী ৬ মে নবান্ন সভাঘরে এই বৈঠক ডেকেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব।
সূত্রের খবর, ঝড়, বৃষ্টি ও বন্যার আগাম প্রস্তুতি নিয়ে ডাকা এই বৈঠকে চার দফা বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। বৃষ্টির আগাম পূর্বাভাস এবং ঝড়ের আগাম সর্তকতামূলক প্রস্তুতি, বিপর্যয়ের পর কীভাবে করা হবে উদ্ধারকাজ এবং ত্রাণ বণ্টন, পুনর্গঠনের কাজ কীভাবে হবে, এই সব বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতেই ৬ মে বৈঠক ডেকেছেন রাজ্যের মুখ্য সচিব। বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন রাজ্যের প্রতিটি জেলার জেলাশাসক, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর, এনডিআরএফ, বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকরা। এই বৈঠক থেকেই বঙ্গে বিপর্যয় সামলাতে রুটম্যাপ তৈরি করা হবে।
অতীতে বহু ঘূর্ণিঝড়ে তছনছ হয়ে গিয়েছে বাংলার উপকূলবর্তী এলাকা। বিপর্যস্ত হয়েছে জনজীব্ন। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে তাই এবার বৃষ্টি, বন্যা ও ঝড়ের আগাম প্রস্তুতি সেরে রাখতে চাইছে রাজ্য প্রশাসন। সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, ঝড়-বৃষ্টি বন্যার আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে রাজ্যকে। তার জেরেই রাজ্য প্রশাসন এই জরুরি বৈঠক ডেকেছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
উল্লেখ্য দিল্লির মৌসম ভবন(Mousam Bhawan) থেকে জারি করা এক পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে মে মাসে বঙ্গোপসাগরে জন্ম নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়(Cyclone) যার অভিমুখ থাকবে দুই বাংলার উপকূলবর্তী এলাকা। মৌসম ভবনের বার্তায় জানানো হয়েছে উত্তর ভারত মহাসাগর বা দক্ষিণ আন্দামান সাগরে(Andaman Sea) ৫ মে’র পরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে। ওই সময়ে সাগরে জলের উষ্ণতা ২৮ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করবে যা ঘূর্ণিঝড়ের জন্ম দিতে খুবই অনুকূল হিসাবে বিবেচিত হয়। সেই ঘূর্ণাবর্তই এগিয়ে আসবে বঙ্গোপসাগরের বুকে। তারপর সেখানেই সে ক্রমাগত শক্তি বৃদ্ধি করে প্রথমে নিম্নচাপ, তারপর সুস্পষ্ট নিম্নচাপ, তা থেকে গভীর নিম্নচাপ এবং শেষে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে। তারপরেই তা এগিয়ে আসবে দুই বাংলার উপকূলের দিকে। প্রবল শক্তি নিয়ে মে মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে সেই ঝড় আছড়ে পড়তে পারে সুন্দরবন লাগোয়া দুই বাংলার উপকূলবর্তী এলাকায়। স্থলভাগে প্রবেশকালে অর্থাৎ ল্যান্ডফলের সময়ে তার গতিবেগ থাকতে পারে ১১০ থেকে ১২০ কিমি প্রতি ঘন্টা।