নিজস্ব প্রতিনিধি: সংসদ(Parliament) শুরুর আগে থেকেই বড়সড় বিতর্ক বেঁধে গেল জাতীয় রাজনীতিতে। সংসদে কোনও সাংসদ তাঁর বক্তব্য রাখতে গিয়ে কোন কোন শব্দ মুখ দিয়ে আর উচ্চারিত করতে পারবে না সেই সব শব্দের তালিকা প্রকাশ করেছে সংসদের সচিবালয়। আর তা নিয়েই শুরু হয়ে গিয়েছে বিতর্ক। কারণ দেখা যাচ্ছে যে সব শব্দে মোদি সরকার ও বিজেপিকে কড়া আক্রমণ শানায় বিরোধীরা সেই সব শব্দকেই বেছে বেছে ‘অসংসদীয়’ শব্দের তালিকায় ফেলা হয়েছে। এই ঘটনার জেরেই দেশের আর পাঁচটা বিরোধী দলের মতোই সরব হয়েছে বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)ও। এদিন কুণাল ঘোষ(Kunal; Ghosh) ও ডেরেক ও ব্রায়েন(Derek O Brien) এই ঘটনার তীব্র বিরোধিতা করেছেন।
আগামী সোমবার ১৮ জুলাই থেকে শুরু হতে চলেছে সংসদের বাদল অধিবেশন(Badal Session)। তার আগেই লোকসভার সচিবালয় থেকে ‘অসংসদীয়’ শব্দের যে নতুন তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে বিশ্বাসঘাতক, জুমলাবাজ, কালা দিনের মতো শব্দকে রাখা হয়েছে। আছে ‘লজ্জাজনক’, ‘নির্যাতন’, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’, ‘অযোগ্য’ ‘ভণ্ডামি’র মতো শব্দ। ‘নৈরাজ্যবাদী’, ‘শকুনি’, ‘স্বৈরাচারী’, ‘খলিস্তানি’, ‘বিনাশপুরুষ’, ‘জয়চাঁদ’, ‘তানাশাহি’, ‘দাঙ্গা’, ‘দালাল’, ‘দাদাগিরি’র মতো শব্দকেও ‘অসংসদীয়’ শব্দের তালিকায় নিয়ে আসা হয়েছে। অথচ এই সব শব্দ দিয়েই মোদি সরকার ও বিজেপিকে কড়া আক্রমণ শানয় বিজেপিরা। এই ঘটনায় এদিন এক সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, ‘কেন্দ্র সরকার বিরোধীদের কথাতেও ভয় পাচ্ছে। তাই তাঁদের কথার ওপর বেড়ি পড়াতে চাইছে বিজেপি। শব্দেও বেড়াজাল পড়িয়ে দিচ্ছে এরা। মানুষ কী বলবেন, কী বলবেন না, সেটাও ঠিক করে দিচ্ছে। বিজেপি সম্পর্কে যে শব্দ সাধারণভাবে ব্যবহার করা হয়, সেগুলিই নাকি ব্যবহার করা যাবে না। এটা তো জনবিরোধী নীতি। যথাযথভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা প্রতিবাদ করবে। জিভে শেকল পরাতে চাইছে মোদি সরকার। এটা মেনে নেওয়া হবে না কোনওভাবেই।’
এরই পাশাপাশি তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন এদিন টুইট করে জানিয়েছেন, ‘মৌলিক শব্দ আমি ব্যবহার করব। আমাকে সাসপেন্ড করুন। গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করব। ক’দিনর মধ্যে সংসদের অধিবেশন শুরু হবে। সাংসদদের ওপরে হাস্যকর নির্দেশিকা জারি হয়েছে। আমরা এখন থেকে সংসদে নিজেদের বক্তব্যে পেশ করার সময় মৌলিক শব্দগুলিই ব্যবহার করতে পারব না। যেমন, লজ্জাজনক. অপব্যবহার, বিশ্বাসঘাতকতা, দুর্নীতিগ্রস্ত, কপটতা, অযোগ্য। আমি এই শব্দগুলি ব্যবহার করব। সাসপেন্ড করুন। গণতন্ত্রের জন্য লড়ব।’ লোকসভার সচিবালয়ের তরফে এহেন নির্দেশিকা নেমে আসার জেরে সংসদের বাদল অধিবেশনে শাসক বিজেপি তথা মোদি সরকারের সঙ্গে বিরোধিদের সঙ্ঘাত যে চরমে উঠতে চলেছে সে নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এমনও হতে পারে বিরোধীরা সন্মিলিত ভাবে হয়ত এই অধিবেশন বয়কট করতে পারে।