নিজস্ব প্রতিনিধি: কোভিডকালে নয় বিষবাষ্প। অন্যথা অনেকেরই মৃত্যু অনিবার্য। এই কথা শুধু নয় সাবধানবাণী। এখন তা আর্জিতে পরিণত হয়েছে। আর সেটা কলকাতা হাইকোর্টে। সেই আর্জি জানিয়েই মামলা ঠোকা হয়েছে যাতে এবারের মতন রাজ্যে বাজি বিক্রি ও বাজি পোড়ানো বা ফাটানো নিষিদ্ধ থাকে। বস্তুত গত বছর এই মর্মেই কলকাতা হাইকোর্ট এক নির্দেশ জারি করেছিল। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে যে মামলা ঠোকা হয়েছে সেখানে কার্যত সেই রায়কেই আবারও ফেরাতে বা নতুন করে এবছরের জন্য বলবৎ করতে আবেদন জানানো হয়েছে। আগামী শুক্রবার এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এই মামলা দায়ের হওয়ার জেরে সিন্দুরে মেঘ দেখাছেন বাজি ব্যবসায়ীরা।
রোশনি আলি নামে রাজ্যেরই এক বাসিন্দা কালীপুজো এবং দীপাবলিতে রাজ্যজুড়ে বাজি ফাটানো বন্ধের আর্জি জানিয়ে এই মামলা দায়ের করেছেন যা জনস্বার্থ মামলা হিসাবেই দেখা হচ্ছে। এই মামলা ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছে হাইকোর্ট। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আগামী ২৯ অক্টোবর বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে। কোভিড আবহে গত বছর রাজ্যে শব্দবাজি সহ সবরকমের আতসবাজি পোড়ানো নিষিদ্ধ করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের দেওয়া সেই রায়ে উপকৃত হয়েছিলেন করোনায় আক্রান্ত রোগীদের পাশাপাশি শ্বাসকষ্টে ভোগা ও দুর্বল হৃদয়ের মানুষেরা। এ বছরেও সেই নির্দেশ বহাল রাখার দাবি জানানো হয়েছে এদিনের দায়ের করা মামলায়। মামলাকারীর আবেদন, ‘রাজ্যে এখন ঊর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণ। ফলে বন্ধ করা হোক বাজি পোড়ানো। করোনায় আক্রান্তদের যাতে কোনওভাবেই সমস্যা না হয়, সেই কথা ভেবেই এই আবেদন।’
এদিন হাইকোর্টের তরফে প্রথমে ১৫ নভেম্বর এই মামলার শুনানির দিন ধার্য হয়। কিন্তু যেহেতু ৪ নভেম্বর কালীপুজো, তাই শুনানি এগিয়ে আনার আবেদন জানানো হয় মামলাকারীর তরফে। এরপরই বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে আগামী ২৯ অক্টোবর এই মামলার শুনানি ধার্য করা হয়। আদালত বাজি পোড়ানো নিয়ে কী নির্দেশ দেয়, সেদিকেই এখন তাকিয়ে থাকবেন সকলে। তবে এই মামলা ঘিরে এখন সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বাজি ব্যবসায়ীরা। এম্নিতেই কোভিডের জেরে গতবছর তাঁদের ব্যবসা ধাক্কা খেয়েছিল। এবছরও যদি তা হয় তাহলে তাঁদের বড় ক্ষতির মুখে দাঁড়াতে হবে। এমনিতেই প্রতিবছর কলকাতার ময়দানে যে বাজি ব্যবসা হত এবছর সেই বাজি মেলার অনুমতি দেয়নি সেনাবাহিনী কর্তৃপক্ষ। শেষ মুহুর্তে রাজ্য সরকার তাই সেই মেলা সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে উত্তর কলকাতার সিঁথি সার্কাস ময়দানে। কিন্তু তারপরেও বাজি ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা কাটছে না।