কৌশিক দে সরকার: পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur) জেলার কাঁথি(Contai) শহরে থাকা অধিকারীদের বাড়ি থেকে মেরেকেটে ২০০ মিটার দূরে বড় ঘোষণা করে দিয়েছেন তৃণমূলের(TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee)। জানিয়ে দিয়েছেন চলতি মাসেই তিনি দলের দরজাটা ৫ সেকেন্ডের জন্য খুলছেন। তাঁদেরকেই নেওয়া হবে যারা দলের নেতাকর্মীদের ওপর ছড়ি ঘোরাবেন না। বরঞ্চ দলের কর্মী হয়ে দলের নির্দেশ মতোই কাজ করবেন। আর অভিষেকের এই বার্তার পরে পরেই রীতিমত রক্তচাপ বেড়ে গিয়েছে বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) নেতাদের মধ্যে। কেননা তাঁরা বেশ বুঝতে পারছেন এই চ্যালেঞ্জ নিছক মুখের কথা নয়। বরঞ্চ বঙ্গ বিজেপি আবারও পড়তে চলেছে ভাঙনের মুখে। প্রশ্ন এখন এটাই যাচ্ছেন কয়জন আর তাঁরা কে কে? তৃণমূল সূত্রের দাবি, ৫ সেকেন্ডে আসছেন ৫জন। সকলেই জনপ্রতিনিধি। তবে তাঁরা সাংসদ না বিধায়ক তা খোলসা করা হয়নি।
আরও পড়ুন ইডি-সিবিআই-এনআইএ থেকে জামিনের টোপে তোলাবাজি করে শুভেন্দু: অভিষেক
যদিও জল্পনা থামছে না। তৃণমূল শিবিরের রীতিমত হাতে হাতে তালিকা ঘুরছে কারা কারা জার্সি বদলাতে চলেছেন ৫ সেকেন্ডের মধ্যে। সূত্রে সেই সব নামের কিছুটা হলেও জানা গিয়েছে। সেই সম্ভাব্য দলবদলুদের তালিকায় কে কে আছেন? চলুন দেখে নেওয়া যাক। আছেন ৩জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী – নিশীথ প্রামাণিক, জন বার্লা ও শান্তনু ঠাকুর। তালিকায় নাম রয়েছে লকেট চট্টোপাধ্যায় ও খগেন মুর্মুরও। নাম শোনা যাচ্ছে সৌমিত্র খাঁ ও জগন্নাথ সরকারেরও। এবার আসা যাক বিধায়কদের কথায়। কে কে আছেন সেই তালিকায়? আছেন কোচবিহার জেলার কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিল রঞ্জন দে, আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটার বিধায়ক দীপক বর্মণ, জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ির বিধায়ক বিষ্ণুপদ রায়, দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুঘাটের বিধায়ক অশোক লাহিড়ি, নদিয়া জেলার রানাঘাট উত্তর পশ্চিমের বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ভাটপাড়ার বিধায়ক পবন কুমার সিং, হুগলি জেলার খানাকুলের বিধায়ক সুশান্ত ঘোষ, পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ময়না বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক অশোক দিন্দা, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক শীতল কপাট, পুরুলিয়া সদর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক সুদীপ কুমার মুখোপাধ্যায়, বাঁকুড়া জেলার ছাতনা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক সত্যনারায়ণ মুখোপাধ্যায়, পশ্চিম বর্ধমান জেলার কুলটি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক অজয় কুমার পোদ্দার এবং বীরভূম জেলার দুবরাজপুর কেন্দ্রের বিধায়ক অনুপ কুমার সাহা।
আরও পড়ুন ‘পরের বার ২০ মিটারের মধ্যে সভা করব’, নাম না করে শান্তিকুঞ্জকে চ্যালেঞ্জ অভিষেকের
এতগুলি নামের মধ্যে ঠিক কোন কোন জন তৃণমূলে যেতে চলেছেন তা বলা খুবই মুশকিল। তবে সূত্রের দাবি এই সম্ভাব্য নামগুলির মধ্যেই জার্সি বদলের ঘটনা ঘটতে চলেছে। যদিও বঙ্গ বিজেপির নেতাদের দাবি, সবটাই রাজনৈতিক চাপের কৌশল। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজেপির ওপর চাপ বাড়াতে এসব করা হচ্ছে। কিন্তু মজার কথা বঙ্গ বিজেপির কোনও নেতাই জোর গলায় বলতে পারছেন না, এরা যাচ্ছেন না। আসলে কে কে তলে তলে কতদূর এগিয়েছেন আর তৃণমূলের দিকে ঠিক কতটা পা বাড়িয়ে বসে আছেন সেটা তাঁরা নিজেরাই জানেন না। আর যারা আসবেন আসবেন করছেন কিন্তু ডিলটা ফাইনাল হয়নি তাঁরা জোর গলায় বলে চলেছেন, ‘আমি তো যাচ্ছি না। আমি বিজেপিতেই আছি, বিজেপিতেই থাকব।’ ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংও তো একইরকম কথা বলেছিলেন না! তবে এটাও ঠিক সূত্রের দাবি সব সময় সত্যি হয় না। অতএন লিস্টি হাতে নিয়ে অপেক্ষা করুন সেই মহার্ঘ্য ৫ সেকেন্ডের জন্য।