নিজস্ব প্রতিনিধি: রাতে ট্রেনে উঠেছিলেন মেয়েকে নিয়ে। ট্রেনের ওঠার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখিও হন। সেই ট্রেন নিউ জলপাইগুড়ি(New Jalpaiguri) স্টেশন থেকে শিয়ালদা এসে পৌঁছানোর পরে দেখা গেল ট্রেন থেকে উধাও মন্ত্রী ও তাঁর কন্যা। এমনকি নেই তাঁর কোনও নিরাপত্তারক্ষীও। আর তার জেরেই ছড়িয়ে পড়ে চাঞ্চল্য। খোঁজ খোঁজ খোঁজ, মন্ত্রী হল নিখোঁজ। তবে সূত্রে জানা গিয়েছে, সকন্যা মন্ত্রী নেমে গিয়েছেন বর্ধমান(Burdhwan) স্টেশনে। সেখান থেকে সড়কপথে তিনি এসেছেন কলকাতায়। উদ্দেশ্য সংবাদমাধ্যমের হামলে পড়া বাইট ভিডিও’র শিকার না হওয়া। নজরে রাজ্যের শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী(Paresh Adhikari)। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট(Calcutta High Court) নির্দেশ দিয়েছে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেনীর শিক্ষক নিয়োগের ঘটনাতেও তদন্ত করবে সিবিআই(CBI)। কেননা খোদ মন্ত্রীর মেয়ের বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক অভিযোগ উঠেছে। নম্বর কম থাকা সত্ত্বেও তাঁকে একটি স্কুলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে। বঞ্চিত হয়েছেন যোগ্য প্রার্থীরা।
বস্তুত মঙ্গলবারই কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল রাত ৮টার মধ্যে পরেশ অধিকারীকে কলকাতায় সিবিআইয়ের কার্যালয়ে হাজিরা দিতে হবে। কিন্তু ঘটনাচক্রে পরেশবাবু ছিলেন তাঁর বিধানসভা কেন্দ্র এলাকায় যা কোচবিহার জেলায় অবস্থিত। আদালতের নির্দেশের জেরে তড়িঘড়ি করে তিনি রাতেই ট্রেন ধরে রওয়ানা দেন কলকাতার পথে। মেখলিগঞ্জ থেকে নিউ জলপাইগুড়ি এসে সেখান থেকে তিনি পদাতিক এক্সপ্রেস ধরেন। ওই ট্রেনের এইচ১ কামরায় ওঠেন পরেশবাবু ও তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী(Ankita Adhikari)। ট্রেনের কর্মীদের দাবি সকালের পরে আর দেখা যায়নি মন্ত্রী এবং তাঁর কন্যাকে। ট্রেনের অ্যাটেন্ডান্ট শেষবার তাঁকে দেখেন রাতে বেডরোল দেওয়ার সময়। এরপরে সকালে উঠে ট্রেনের অ্যাটেন্ডান্ট অথবা সামনের আসনে থাকা যাত্রীদের কেউই দেখতে পাননি মন্ত্রী এবং তাঁর কন্যাকে। মনে করা হচ্ছে সম্ভবত বর্ধমান অথবা তাঁর আগেই কোনও স্টেশনে নেমে গেছেন তিনি। এছাড়াও মন্ত্রী পরেশ অধিকারী এবং তাঁর মেয়েকে নিতে কোনও গাড়ি শিয়ালদা ষ্টেশনে আসেনি বলেই জানা গেছে। সূত্রের খবর তিনি এদিন ভোরবেলা বর্ধমান স্টেশনে নেমে গিয়েছেন।
গতকাল রাতে ট্রেনে ওঠার আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিল পরেশবাবু। জানিয়েছিলেন, ‘আমি এই বিষয়ে কিছু জানি না। জানতে পেরেছি যে হাইকোর্ট একটা রায় দিয়েছে। সেই কারণে আমরা কলকাতায় যাচ্ছি। চাকরির বিষয় নিয়ে জানতে চেয়েছে। আর বেশি কিছু আমি জানি না। যেহেতু বিষয়টি কোর্টের সেই কারণে এই বিষয় নিয়ে আমি কিছুই বলব না। তখন আমি মন্ত্রী বা বিধায়ক কিছুই ছিলাম না। আমি এখন উত্তরবঙ্গে রয়েছি তাহলে রাত ৮টার সময় নিজাম প্যালেসে যাব কেমন করে?’ সূত্রে জানা গিয়েছে এদিনই আইনজীবীর মাধ্যমে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করবেন তিনি। সেই সঙ্গে চাইবেন সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ।