আপনি কি বডি শেমিং এর শিকার হন? কিভাবে মোকাবেলা করবেন?
Share Link:

নিজস্ব প্রতিনিধি : 'বডি শেমিং' আজ আমাদের সমাজে একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বডি শেমিং হলো কোনো ব্যক্তির শারীরিক চেহারাকে উপহাস করা। বডি শেমিংয়ের পরিধি অনেক বড়। মোটা, রোগা, উচ্চতা, লোমশতা (বা এর অভাব), চুলের রঙ, শরীরের আকৃতি, পেশীবহুলতা,( বা এর অভাব), চেহারা (মুখের বৈশিষ্ট্য), ইত্যাদি নিয়ে উপহাস করা হয়ে থাকে। কখনও কখনও কাউকে এই নিয়েও লজ্জাবোধ করানো ও হয় যে সে, যথেষ্ট পরিমাণে পুরুষতত্ব বা নারীত্ব প্রদর্শন করে না। বয়সের উপর নির্ভর করে এর ধরণ গুলি আলাদা হয়।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতে, ৪৪.৯ শতাংশ বয়সন্ধির ছেলেমেয়েরা এক বছরে কমপক্ষে একবার বডি শেমিং এর শিকার হয়েছেন। এটি কো-এড স্কুলগুলির ছেলেদের মধ্যে সবচেয়ে কম এবং মেয়েদের স্কুলে সর্বাধিক।
বডি শেমিং এর পেছনে সোশ্যাল মিডিয়ার গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না। এক্ষেত্রে গবেষণায় ব্যবহৃত সিনেমাগুলির মধ্যে দুটি ডিজনি মুভিতে ব্যক্তিগত সৌন্দর্যকে সবথেকে বেশি দাবি করা হয়েছে। এই গবেষণায় দেখা গেছে যে ৬৮% ভিডিও মোটা চরিত্রের মানুষকে, দুষ্টু, নিষ্ঠুর এবং কম বন্ধুত্বপূর্ণ হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়াও এর পেছনে, কুসংস্কার ও ধারাবাহিক সামাজিক চিন্তাধারাও বর্তমান। ফলস্বরূপ দেখা যাচ্ছে আত্মসম্মান হ্রাস, বিভিন্ন খাওয়ার সমস্যা, হতাশা, উদ্বেগ।
এটি হুমকি, হয়রানি ও অপমানের মতই গুরুতর, এবং সাধারণত পুরুষদের তুলনায় বেশি মহিলারাই এর অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
কি করবেন?
১) নেতিবাচক কথা ব্যক্তিগত ভাবে নেবেন না - যে বা যারা আনন্দে বা সুখে থাকেন, তাঁরা কখনই কারোর সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেন না। কেউ যখন এরূপ নেতিবাচক মন্তব্য করছেন, তার মানে এটি তার দৃষ্টিভঙ্গির সমস্যা। আপনার নয়। সুতরাং এটি উপেক্ষা করুন। অনেক সময় নিজের হীনমন্যতাবোধ কাটাতে গিয়ে আমরা অন্যকে ছোট করে আনন্দ পাই। এটা নিজেদের বুঝতে হবে, যে কোন কথায় আমি গুরুত্ব দেবো আর কোন কথাটি উপেক্ষা করব। যদিও কাজটি সহজ নয়, কিন্তু অসম্ভব ও নয়।
২) নিজের অনুভূতিকে প্রকাশ করুন - দৃঢ় ,স্পষ্ট এবং শান্ত ভাবে বলুন আপনার পছন্দ এবং অপছন্দের কথা। যদি কারোর মন্তব্য আপনাকে অস্বস্তিতে ফেলে, সেটা খোলাখুলি, সামনাসামনি, তার কাছে প্রকাশ করুন। অনেক সময় বলতে না পারায়, আমরা ভেতর থেকে গুমড়ে গুমড়ে আরও হতাশা ও উদ্বেগে ভুগি। তাই নিজেকে প্রকাশ করুন।
৩) নিজেকে নতুন ভাবে দেখুন - নিজের শরীরের কোনো কিছু হয়তো আপনার খুব পছন্দের। মন খুলে নিজের কাছে এবং অন্যদের কাছে তার প্রশংসা করুন। হয়তো আপনার চোখটা খুব সুন্দর, কিংবা আপনার চুলটা খুব সুন্দর, হয়তো স্কিন টা খুব সুন্দর...আপনার নিজের মধ্যে যেটা ভালো লাগে তার মন খুলে প্রশংসা করুন।
৪) শরীরের কারাগার থেকে বেরিয়ে আসুন - আমরা সবাই ছোটবেলা থেকে, সুন্দর এবং অসুন্দরের একটি সমাজিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বড় হই। বিশেষত মহিলাদের, সুন্দরী হওয়ার জন্য সমাজের থেকে একটা পরোক্ষ চাপ থাকে। এবং সেই মতই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়। কিন্তু বিশ্বাস করুন, জীবনকে উপভোগ করা, কখনও তার শরীরের গঠনের উপর নির্ভর করে না। একজন তার কাজ এবং গুণের মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। সুখী থাকতে পারে। অপরের চোখে নিজেকে দেখা বন্ধ করুন। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন। কেউ প্রশংসা করলে আপনি সুন্দর হবেন, আর কেউ প্রশংসা না করলে আপনি অসুন্দর থাকবেন, এমনটি হয় না। আমরা সবাই ভালোবাসা এবং গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তাতে কিছু লাভ হয় না। নিজের মধ্যে যতটুকু, যা কিছু আছে তার পূর্ণ প্রকাশ করুন। শারীরিক বৈশিষ্ট্য সেখানে হার মানতে বাধ্য।
লেখক : পুষ্পিতা মুখার্জি (মনোবিদ ও শিক্ষিকা)
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতে, ৪৪.৯ শতাংশ বয়সন্ধির ছেলেমেয়েরা এক বছরে কমপক্ষে একবার বডি শেমিং এর শিকার হয়েছেন। এটি কো-এড স্কুলগুলির ছেলেদের মধ্যে সবচেয়ে কম এবং মেয়েদের স্কুলে সর্বাধিক।
বডি শেমিং এর পেছনে সোশ্যাল মিডিয়ার গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না। এক্ষেত্রে গবেষণায় ব্যবহৃত সিনেমাগুলির মধ্যে দুটি ডিজনি মুভিতে ব্যক্তিগত সৌন্দর্যকে সবথেকে বেশি দাবি করা হয়েছে। এই গবেষণায় দেখা গেছে যে ৬৮% ভিডিও মোটা চরিত্রের মানুষকে, দুষ্টু, নিষ্ঠুর এবং কম বন্ধুত্বপূর্ণ হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়াও এর পেছনে, কুসংস্কার ও ধারাবাহিক সামাজিক চিন্তাধারাও বর্তমান। ফলস্বরূপ দেখা যাচ্ছে আত্মসম্মান হ্রাস, বিভিন্ন খাওয়ার সমস্যা, হতাশা, উদ্বেগ।
এটি হুমকি, হয়রানি ও অপমানের মতই গুরুতর, এবং সাধারণত পুরুষদের তুলনায় বেশি মহিলারাই এর অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
কি করবেন?
১) নেতিবাচক কথা ব্যক্তিগত ভাবে নেবেন না - যে বা যারা আনন্দে বা সুখে থাকেন, তাঁরা কখনই কারোর সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেন না। কেউ যখন এরূপ নেতিবাচক মন্তব্য করছেন, তার মানে এটি তার দৃষ্টিভঙ্গির সমস্যা। আপনার নয়। সুতরাং এটি উপেক্ষা করুন। অনেক সময় নিজের হীনমন্যতাবোধ কাটাতে গিয়ে আমরা অন্যকে ছোট করে আনন্দ পাই। এটা নিজেদের বুঝতে হবে, যে কোন কথায় আমি গুরুত্ব দেবো আর কোন কথাটি উপেক্ষা করব। যদিও কাজটি সহজ নয়, কিন্তু অসম্ভব ও নয়।
২) নিজের অনুভূতিকে প্রকাশ করুন - দৃঢ় ,স্পষ্ট এবং শান্ত ভাবে বলুন আপনার পছন্দ এবং অপছন্দের কথা। যদি কারোর মন্তব্য আপনাকে অস্বস্তিতে ফেলে, সেটা খোলাখুলি, সামনাসামনি, তার কাছে প্রকাশ করুন। অনেক সময় বলতে না পারায়, আমরা ভেতর থেকে গুমড়ে গুমড়ে আরও হতাশা ও উদ্বেগে ভুগি। তাই নিজেকে প্রকাশ করুন।
৩) নিজেকে নতুন ভাবে দেখুন - নিজের শরীরের কোনো কিছু হয়তো আপনার খুব পছন্দের। মন খুলে নিজের কাছে এবং অন্যদের কাছে তার প্রশংসা করুন। হয়তো আপনার চোখটা খুব সুন্দর, কিংবা আপনার চুলটা খুব সুন্দর, হয়তো স্কিন টা খুব সুন্দর...আপনার নিজের মধ্যে যেটা ভালো লাগে তার মন খুলে প্রশংসা করুন।
৪) শরীরের কারাগার থেকে বেরিয়ে আসুন - আমরা সবাই ছোটবেলা থেকে, সুন্দর এবং অসুন্দরের একটি সমাজিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বড় হই। বিশেষত মহিলাদের, সুন্দরী হওয়ার জন্য সমাজের থেকে একটা পরোক্ষ চাপ থাকে। এবং সেই মতই আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়। কিন্তু বিশ্বাস করুন, জীবনকে উপভোগ করা, কখনও তার শরীরের গঠনের উপর নির্ভর করে না। একজন তার কাজ এবং গুণের মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। সুখী থাকতে পারে। অপরের চোখে নিজেকে দেখা বন্ধ করুন। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখুন। কেউ প্রশংসা করলে আপনি সুন্দর হবেন, আর কেউ প্রশংসা না করলে আপনি অসুন্দর থাকবেন, এমনটি হয় না। আমরা সবাই ভালোবাসা এবং গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তাতে কিছু লাভ হয় না। নিজের মধ্যে যতটুকু, যা কিছু আছে তার পূর্ণ প্রকাশ করুন। শারীরিক বৈশিষ্ট্য সেখানে হার মানতে বাধ্য।
লেখক : পুষ্পিতা মুখার্জি (মনোবিদ ও শিক্ষিকা)
More News:
3rd March 2021
2nd March 2021
1st March 2021
27th February 2021
27th February 2021
25th February 2021
25th February 2021
25th February 2021
24th February 2021
23rd February 2021
Leave A Comment