এই মুহূর্তে




‘বেড়ার উপর হাতের ছাপ’, লাল দুর্গা প্রসন্ন হয়ে বিরাজমান পাচঁগাঁও মণ্ডপে




নিজস্ব প্রতিনিধি : আর ক’দিন মাত্র। তার পরেই কৈলাস থেকে বাপের বাড়ি আসছেন উমা। সারাবছর এইসময়ের অপেক্ষা করে থাকে বাঙালিরা। আর কিছু দিন পরেই মাতৃশক্তির আরাধনায় মেতে উঠবে ভক্তরা। তেমনই প্রত্যেক বছর দুর্গতিনাশিনী সেজে ওঠে বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও মন্ডপে। তবে দেবী এখানে পুজিত হয় লালবর্ণা রুপে। রক্তবর্ণ দেবীর শরীর, পদতলে সবুজ বর্ণের রঙের আহত অসুর। তবে এই পুজো শুরু হওয়ার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। মনে করা হয় দেবী এখানে স্বয়ং বিরাজ করেন।

বাংলাদেশের অন্যতম স্বনামধন্য ঐতিহ্যবাহী দুর্গা মণ্ডপ হল রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও মণ্ডপ। পাঁচগাঁও মন্ডপে অনেক আলৌকিক ঘটনার নজীর স্থাপন করে লালবর্ণা হয়ে দুর্গাদেবী আবির্ভূত হন। সর্বত্র ভগবতী গায়ে বর্ণ অতসী পুস্পের ন্যায় থাকে। কিন্তু পাচঁগাঁও এ সঞ্জয় দাসের বাড়ির মন্ডপে দুর্গাদেবী লাল বর্ণে হয়ে পুজিত হন। দীর্ঘ ৩০০ বছর ধরে চলে আসছে এই পুজো।

ইতিহাস : কথিত আছে আজ থেকে প্রায় তিনশ বছর পূর্বে সাধক সর্বানন্দ দাশ (সঞ্জয় দাসের পূর্ব পুরুষ)তৎকালীন সরকারেরমুন্সী পদবি প্রাপ্ত কর্ম স্থল আসামের শ্বিবসাগর জেলার বাড়িতে দুর্গা পুজার সময় তার স্ত্রী ও কর্মীগনকে নিয়ে কামাখ্যাধামে কুমারী পুজো করবেন বলে ঠিক করেন। মন্দিরের সেবায়েতের সহায়তায় সর্বানন্দ দাস পঞ্চম বর্ষীয়া কুমারী বেছে নেন।

মহাষ্টমীর দিনে কুমারীকে ভগবতীর জ্ঞানে সুদীর্ঘ ছয়ঘন্টা পুজো করার শেষে প্রণাম করার সময় সর্বানন্দ দাস এক অলৌকিক কান্ড দেখেন। কুমারীর গায়ের রঙ পাল্টে গিয়ে লালবর্ণে পরিণত হয়েছে। এই দৃশ্য দেখার সর্বানন্দ আশ্চর্য হয়ে যায়। মাকে প্রশ্ন করেন, ‘মা’ আমার পুজোয় প্রসন্ন হয়েছো’? উত্তরে ভগবতী জানান, ‘হ্যাঁ তোর পুজো সিদ্ধ হয়েছে। এই রঙেই তোর গ্রামের বাড়ি পাচঁগাও এর পূজা মন্ডপে আর্ভিভূত হয়েছিলাম। এখন থেকে আমাকে লালবর্ণে পুজো করবে।’

তখন সর্বানন্দ মাকে আবারও প্রশ্ন করলেন, ‘তুমি যে এই রুপে আমার বাড়িতে এসেছিলে তার প্রমান কী?’ উত্তরে কুমারী দেবী জানান, ‘তোর দুর্গা মন্ডপের বেড়ার উপর হাতের ছাপ রেখে এসেছি। তোর পুজোয় আমি খুবই সন্তুষ্ট হয়েছি, তুই আমার কাছে বর প্রার্থনা কর।’

তখন সর্বানন্দ দাস বলে ওঠেন, ‘মা তুমি যদি একান্তই বর দিতে চাও, তবে আমি এই বরই প্রার্থণা করি যে, আমার স্থাপিত পাঁচগাঁও এর দুর্গা মন্ডপে তুমি স্থায়ীভাবে অধিষ্ঠিতা থাকবে।’ ভগবতী তখন ‘তথাস্তু’ বলেন। মাকে প্রণাম করে বাড়িতে এসে সর্বানন্দ দেখেন যে, সত্যিই বেড়ার উপর দেবীর হাতের ছাপ রয়েছে।

লালবর্ণ রুপে পুজিত হওয়ার কাহিনী :  তবে লাল বর্ণরুপে দেবীর পুজোয় করায় আপত্তি ছিল গ্রামবাসী ও পুরোহিতদের। তাঁরা সকলে জানিয়ে দেন মার্তৃমূর্তি কুমারী গায়ের লাল রঙ থাকলে তাঁরা কেউই অংশগ্রহণ করবে না পুজোয়। এমতাবস্থায় মুশকিলে পড়ে যান সর্বানন্দ। সেই বছর ষষ্টীর দিন রাত্রি পর্যন্ত কেউ এলেন না। ফাঁকা পড়ে থাকলো পুজোর মন্ডপ। পুরোহিতের অভাবে দেবীর বোধনও সম্পন্ন হল না।

এদিকে পাগলের মত দেবীকে ডাকতে থাকলেন সর্বানন্দ। রাত্রি শেষ প্রায়,এমন সময় এক অলৌকিক কান্ড ঘটল। গুরু, পুরোহিত, জ্ঞাতিবর্গ ও গ্রামবাসী সকলে এসে জানালেন যে, দেবী নিজে এসে তাঁদের স্বপ্নাদেশ দিয়েছেন। ভগবতী দেবী লাল বর্ণেই পুজিত হবেন। সেই থেকে পুজিত হয়ে আসছে দেবী।

বর্তমানে সর্বানন্দ দাসের পরবর্তী বংশধর সঞ্জয় দাসের সার্বিক তত্বাবধানে দুর্গা পুজো অনুষ্ঠিত হয়।প্রতি বছর ভক্তদের ঢল নামে এ মন্ডপে। দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পরিবার পরিজন নিয়ে দেবীর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসেন পাঁচগাঁও মন্ডপে।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

বারাসতের দক্ষিণপাড়ায় ৪৫৪ বছরের শিবের কোঠার দুর্গাপুজো সংকল্পিত হয় যোধাবাঈয়ের নামে

পুজো মানেই ছোট্ট টিপ, হালকা লিপস্টিক আর শাড়ি: মধুমিতা সরকার

গাজায় ইজরায়েলের হত্যালিলার প্রতিবাদে ওয়াশিংটনের রাস্তায় গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা ফিলিস্তিনি যুবকের

একই বৃন্তে দুইটি কুসুম, বৃষ্টি থেকে বাঁচাতে নামাজ পড়া মুসলিমের মাথায় ছাতা ধরল হিন্দু পুলিশ কর্মী

বিয়ে হয়েছিল 57 বছর আগে, ভিডিও হাতে পেলেন 2024-এ

পুলিশকে দেখে খালে ঝাঁপ, ৩ ঘন্টার চেষ্টায় কচুরিপানার ভেতর থেকে আটক ধর্ষণের আসামি

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর