এই মুহূর্তে




এমন দাঁড়ওয়ালা ভয়ঙ্কর মাকড়সা দেখলে ভয়ে চমকে উঠবে পিলে




পৃথ্বীজিৎ চট্টোপাধ্যায় : অনেক তো মাকড়সা দেখেছেন, তবে এমন দাঁড়ওয়ালা দানবাকৃতি মাকড়সা দেখেছেন কী ? তাও আবার সামনে বৃশ্চিকের মত দাঁড়ও আছে। সেই দাঁড় দিয়েই শিকারকে খপ করে ধরে ফেলে এই ভয়াল ঊর্ণনাভ। এই বিশেষ মাকড়সার নাম হল Giant Whip Spider, বিজ্ঞানসম্মত নাম Amblypygi বা অ্যাম্বলিপিগি। শারীরিক বৈশিষ্টের কারণে এই মাকড়সা লেজবিহীন কাঁকড়া বিছা নামেও পরিচিত। এই  হুইপ মাকড়সা হল একটি অনন্য ও রহস্যময় অ্যারাকনিড, যা অ্যাম্বলিপিগি শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত। ভয়ঙ্কর চেহারা সত্ত্বেও এটি মানুষের জন্য ক্ষতিকারক নয়।

শারীরিক বৈশিষ্ট্য

হুইপ মাকড়সার লম্বা চাবুকের মতো সামনের পা রয়েছে, যা তারা স্পর্শকেন্দ্রিক অঙ্গ হিসেবে ব্যবহার করে। অন্যান্য মাকড়সার মতো এদের রেশম উৎপাদনের গ্রন্থি বা বিষাক্ত দাঁত নেই। এদের দেহ চ্যাপ্টা ও প্রশস্ত, যা সংকীর্ণ স্থানেও প্রবেশ করতে সাহায্য করে।

  • আকার: এদের পায়ের বিস্তার প্রায় ১০ সেমি (৪ ইঞ্চি) পর্যন্ত হতে পারে।
  • রঙ: সাধারণত বাদামী বা গাঢ় রঙের হয়, যা পরিবেশের সাথে মিশে যেতে সাহায্য করে।
  • পা: এদের ৮টি পা থাকে, তবে হাঁটার জন্য ৬টি পা ব্যবহার করে, আর সামনের দুইটি অ্যান্টেনার মতো কাজ করে।
  • পেডিপাল্পস: বড় কাঁটার মতো পেডিপাল্পস রয়েছে, যা শিকার ধরতে ব্যবহার করে।

বাসস্থান ও বিস্তৃতি

  • হুইপ মাকড়সাগুলি উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুর অঞ্চলে পাওয়া যায়, বিশেষত:

দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়া, ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ, মধ্য আমেরিকার কিছু অংশ।

  • এরা সাধারণত অন্ধকার ও আর্দ্র স্থানে থাকে, যেমন গুহা, পচা কাঠের নিচে বা গাছের মধ্যে।

আচরণ ও খাদ্যাভ্যাস

হুইপ মাকড়সা মূলত নিশাচর শিকারি, যা তাদের লম্বা সামনের পা ব্যবহার করে কম্পন অনুভব করে ও শিকার খুঁজে পায়। এদের খাদ্যতালিকা নিম্নরূপ:

  • পোকামাকড় (ঝিঁঝিঁ পোকার মতো ছোট প্রাণী)
  • ক্ষুদ্র অমেরুদণ্ডী প্রাণী (কেঁচো, মাকড়সা)
  • ছোট ব্যাঙ বা টিকটিকির মতো ছোট মেরুদণ্ডী প্রাণী

শিকার ধরার পর, এরা শক্তিশালী পেডিপাল্পস ব্যবহার করে তাকে চেপে ধরে ও খেয়ে ফেলে।

প্রজনন ও জীবনচক্র

হুইপ মাকড়সার প্রজনন পদ্ধতি অত্যন্ত অদ্ভুত।  জানা যায়, পুরুষ মাকড়সারা বিশেষ ভঙ্গিমায় নড়াচড়া করে স্ত্রী মাকড়সাকে আকৃষ্ট করে।

১. স্ত্রী মাকড়সা ২০-৪০টি ডিম পেটে বহন করে।

২. বাচ্চাগুলি জন্মানোর পর মায়ের পিঠে উঠে বসে।

৩. কয়েকবার খোলস বদলানোর পর তারা পূর্ণবয়স্ক হয়।

৪. এদের গড় আয়ু ৫-১০ বছর।

পরিবেশগত গুরুত্ব

হুইপ মাকড়সাগুলি প্রকৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ তারা পোকামাকড়ের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে, এরা পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক।

ভয়ঙ্কর চেহারা হলেও এই হুইপ মাকড়সা আসলে সম্পূর্ণ নিরীহ এবং প্রাকৃতিকভাবে ক্ষতিকারক পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ করে। এর অনন্য বৈশিষ্ট্য, আকর্ষণীয় আচরণ এবং পরিবেশগত গুরুত্ব একে প্রকৃতির এক বিস্ময়কর সৃষ্টি হিসেবে পরিগণিত করে। তাহলে আপনিও কি আপনার বাড়ির পোকামাকড় কমাতে পুষবেন নাকি এই মাকড়সা ?




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

সাঙ্ঘাতিক ঘটনা, মোমো কারখানার ফ্রিজে মিলল কুকুরের কাটা মুণ্ডু

আচমকা বেঁচে উঠলেন মৃত ফুটবলার, তারপর যা হল…

লেহঙ্গার কারণে ২০ মিনিটের বেশি থমকে দাঁড়াল বন্দে ভারত, কোথায় ঘটল বেনজির কাণ্ড?

দুদিন ধরে মায়ের লাশ আগলে ছেলে, রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া এবার আলিপুরদুয়ারে  

টাকে চুল গজানোর ওষুধ ব্যবহার করে বিপত্তি, দৃষ্টিশক্তি হারানোর মুখে ৬৫ জন

মুখ্যমন্ত্রীর সফরের সময় আচমকাই রাস্তায় ষাঁড়, বরখাস্ত ১৬ পুরকর্মী

Advertisement




এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর