নিজস্ব প্রতিনিধি: ভোপালের শেষ হিন্দু রানী ছিলে রানী কমলাপতি। তাঁর নামেই নামকরণ করা হয় হবিবগঞ্জ রেল স্টেশনের। ভারতের প্রথম বিশ্বমানের স্টেশন, যার আজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালে এই স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে ১৯০৫ সালে। প্রথমে এই স্টেশনের নাম ছিল শাহপুর, পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে এই স্টেশনে নাম হয় হবিবগঞ্জ। অবশেষে প্রায় ৪২ বছর পর এই স্টেশনের নাম করা হল রানী কমলাপতি।
ষোড়শ শতাব্দীতে সিহউর জেলার সলকনপুর সাম্রাজ্যের রাজা ছিলেন কৃপাল সিং সরৌনিয়া। তাঁর একটি কন্য সন্তানের জন্ম হয়েছিল, রূপে গুনের মুগ্ধ হওয়ায় তাঁর নাম রাখা হয়েছিল কমলাপতি। রাজকুমারী শিক্ষা, ঘোড়ায় চড়া, কুস্তি ও তীরন্দাজ চালানোয় পারদর্শী ছিলেন। গিন্নরগড় রাজ্যের রাজা সুরাজ সিংয়ের ছেলে নিজাম শাহের সঙ্গে শুভ পরিণয় সম্পন্ন হয় কমলাপতির। এদিকে সলকনপুরের বাসিন্দা চৈন সিং রানী কমলাপতিকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। আর এই কারণে সে অনেকবার রাজা নিজাম শাহের হত্যা করারও প্রচেষ্টা করে। কিন্তু বারবার সে ব্যর্থ হয়। এরপর একদিন চৈন সিং রাজা নিজাম শাহকে নিজের বাড়িতে খাবার জন্য আমন্ত্রণ পাঠায়, আর সেই সুযোগে সে রাজার হত্যাও করে দেয়। এরপর চৈন সিং রানী কমলাপতিকে হাসিল করার জন্য গিন্নরগড়ের দুর্গে হামলা চালায়। চৈন সিংয়ের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে রানী কমলাপতি নিজের সন্তানকে নিয়ে সেই মহলেই আত্মগোপন করেন, যেটি রাজা নিজাম শাহ ওনার জন্য বানিয়েছিলেন।
এরপর রানী কমলাপতি জানতে পারেন, ভোপালের সীমান্তে আফগানিরা এসে ঘাঁটি গেড়েছে। ওই আফগানদের সরদার দোস্ত মহম্মদ খান ছিল, যে টাকার বিনিময়ে যুদ্ধে লড়ত। এরপর রানী কমলাপতি দোস্ত মহম্মদ খানকে দিয়ে গিন্নরগড় কেল্লায় হামলা চালান। ছেলের মৃত্যুর পর কমলাপতি বুঝতে পারেন যে, তাঁর রাজ্যকে সে আর বাঁচাতে পারবে না। আর এই কারণেই কমলাপতি আত্মসম্মান রক্ষার জন্য ভোপালের দীঘিতে জল সমাধিতে জান। রানী কমলাপতি ভোপালের শেষ হিন্দু রানী ছিলেন। এরপর থেকেই নবাবদের রাজত্ব শুরু হয়।