নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক হিসেবে জরুরি ব্যবহারের জন্য ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাক্সিনকে আপাতত স্বীকৃতি দিচ্ছে না বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ‘কোভ্যাক্সিনের নির্মাতা সংস্থা ভারত বায়োটেকের কাছে বেশ কিছু কারিগরি সংক্রান্ত তথ্য জানতে চেয়েছেন ‘হু’র বিশেষজ্ঞরা। ওই তথ্য পাওয়ার পরেই ভারতে তৈরি ভ্যাকসিনকে স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্বের স্বাস্থ্য বিষয়ক নিয়ামক সংস্থা।’
করোনাভাইরাসের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে বেশ কয়েকটি ভ্যাকসিনকে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তার মধ্যে অন্যতম হল ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন। কিন্তু প্রথম থেকেই হায়দরাবাদের সংস্থার তৈরি ভ্যাকসিন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশ না করা সত্বেও কেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বিশেষজ্ঞ কমিটি কোভ্যাক্সিনকে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন দেশের প্রখ্যাত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। যদিও দেশের প্রথিতযশা চিকিৎসকদের সেই আপত্তিকে আমলই দেননি কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের শীর্ষ আধিকারিকরা।
কিন্তু বিপত্তি দেখা দেয় অন্য ক্ষেত্রে। সেরাম ইনস্টিটিউটের তৈরি কোভিশিল্ড বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃতি পেলেও কোভ্যাক্সিন এখনও স্বীকৃতি পায়নি। আর তার ফলে যারা কোভ্যাক্সিন নিয়েছেন তাঁদের বিদেশ যাত্রার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃতি না থাকায় বিশ্বের একাধিক দেশে ব্যবসা ও পড়াশোনার জন্য যাওয়ার অনুমতি পাচ্ছেন না ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীরা। ফলে ক্রমশই ক্ষোভ চড়ছে।
সেই ক্ষোভ প্রশমনে ও ভারত বায়োটেককে মুনাফা পাইয়ে দিতে গত কয়েক মাস ধরেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী সহ নীতি আয়োগের একাধিক পদাধিকারী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আধিকারিকরা লাগাতার দাবি করে আসছেন, খুব শিগগিরই কোভ্যাক্সিনকে অনুমোদন দিতে চলেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। পুজোর আগেই ভারত বায়োটেকের তৈরি প্রতিষেধকটি অনুমোদন পেতে চলেছে বলে দাবিও জানানো হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের সেই দাবি কতটা অসাড় তা এদিন প্রমাণ হয়েছে।
সূত্রের খবর, কোভ্যাক্সিনের নির্মাতাদের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ওই তথ্য খতিয়ে দেখার পরেই কোভ্যাক্সিনকে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।