নিজস্ব প্রতিনিধি: বিবাদের সূত্রপাত গরু বাঁধা নিয়ে। নিছকই গ্রামীণ বিবাদ। কিন্তু তাতে লাগলো রাজনীতির আঁচ। আর তার জেরেই তাতে জড়িয়ে গেলেন তৃণমূল ও বিজেপির সমর্থকেরা। শেষে সেই বিবাদের জেরেই ঘটে গেল খুনের ঘটনা। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে বাঁকুড়া জেলার তালডাংরা থানা এলাকার মান্ডি গ্রামে। ঘটনার জেরে পুলিশ এখনও পর্যন্ত ৮জনকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু মৃত ব্যক্তি তৃণমূল কর্মী হওয়ায় এই খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে বিজেপিরও। অভিযোগ উঠেছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই তাঁকে পিটিয়ে খুন করেছে। যদিও বিজেপির অভিযোগ তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে।
জানা গিয়েছে, দিনকয়েক আগে মান্ডি গ্রামের মাঝিপাড়ায় গরু বাঁধা নিয়ে গণ্ডগোল হয়। সেই অশান্তি মেটাতে শনিবার মাণ্ডি গ্রামের বাসিন্দা ধনঞ্জয় রায়ের বাড়িতে বসেছিল সালিশি সভা। সেখানে আচমকাই চলে যান বিপ্লব রায় নামে এক তৃণমূল কর্মী। অভিযোগ, সালিশি সভা চলাকালীন বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিপ্লব। মুহূর্তের মধ্যে তা হাতাহাতির রূপ নেয়। অভিযোগ, বাঁশ, লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় ওই তৃণমূল কর্মীকে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। মারধরের কথা জানাজানি হওয়ার পর বিপ্লব রায়কে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমেই বিষ্ণুপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে সেখান থেকে নিয়ে আসা হয় বাঁকুড়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পরই এদিন সকালে তালডাংরা থানায় যান বিপ্লবের স্ত্রী। সেখানে তিনি বিজেপি নেতা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এখনও পর্যন্ত মোট ৮জনকে গ্রেফতার করেছে। এদের মধ্যে ৪জনই বিজেপির সক্রিয় কর্মী ও নেতা। বিপ্লব রায় শুধু তৃণমূলের কর্মীই ছিলেন না, তিনি রাজ্যের সেচ দফতরের কর্মীও ছিলেন। তবে বিপ্লবের পরিবারের দাবি বাস্তব ঘটনার সঙ্গে মেলেনি। তাঁদের দাবি, শনিবার রাত ১০টা নাগাদ রাস্তার ধারে কয়েকজনের সঙ্গে বসে গল্প করছিলেন বিপ্লব। আচমকাই বিজেপির আশ্রিত দুষ্কৃতীরা লাঠিসোটা নিয়ে তাঁর ওপর হামলা চালায়। বেধড়ক মারধর করে হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পরে হাসপাতালে মারা যান বিপ্লব। ঘটনার জেরে তৃণমূলের ব্লক সভাপতির দাবি, খুনের ঘটনায় বিজেপির ইন্ধন রয়েছে। যারা একসময় তৃণমূলে ছিল, তাঁরাই বর্তমানে বিজেপি করেন।