নিজস্ব প্রতিনিধি: ওপার বাংলায় লেগেছে হিন্দু নিধনের আগুন। সেই আগুনের আঁচ পোহাচ্ছে এপার বাংলাও। রাজ্যের প্রায় সব জেলাতেই গত কয়েকদিন ধরে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে কলকাতায় বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনেও। একই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়াতেও চলছে প্রতিবাদের ঝড়। এইসবের জেরেই এপার বাংলায় যাতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য রাজ্য পুলিশ প্রশাসন সতর্ক তো রয়েইছে, সেই সঙ্গে সীমান্তবর্তী এলাকার পুলিশ-প্রশাসনকে বাড়তি সতর্কতা নেওয়ার পরামর্শ দিল আইবি। আর এর পরে পরেই উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট মহকুমা জুড়ে কড়া নজরদারি শুরু করে দিয়েছে পুলিশ। কেননা এই মহকুমা থেকেই বার বার সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের ঘটনা বাংলার অনান্য এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ার নজীর রয়েছে।
আইবি’র তরফে সতর্ক করা হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার সব কটি জেলারই পুলিশ প্রশাসনকে। মৌলবাদী সন্ত্রাসের আঁচ যাতে সীমান্ত পেরিয়ে এপারে না আসে, তার জন্য ওই সব জেলার প্রশাসনকে এই বিষয়ে কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে। এই মর্মে পশ্চিমবঙ্গের সব পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপার, রেলের ডিজিপি সহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকদের চিঠি পাঠিয়ে সতর্ক করেছে রাজ্য আইবি। গত বুধবার বাংলাদেশের কুমিল্লায় প্রথম হিংসার ঘটনা ছড়ায়। সেখানে বেশ কিছু পুজো মণ্ডপ ভেঙে দেওয়া হয়। এছাড়াও হাজিগঞ্জের চাঁদপুর, চট্টোগ্রামের বাঁশখালি ও কক্সবাজারের পেকুয়াতেও বেশকিছু মন্দিরে হামলার অভিযোগ উঠেছে। হিংসা নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনকেও হামলার মুখে পড়তে হয় বলে জানা গিয়েছে। তারপর ক্রমশ তা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে যায়। এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন ঘটনায় বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন অনেকে। জখমের মধ্যে সাংবাদিক, পুলিশ কর্মী ও সাধারণ মানুষও রয়েছেন।
হিংসার ঘটনার পর থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে ওই দেশের সরকারের দাবি করা হয়। তবে ইসকনের সহ সভাপতি রাধারমণ দাস দাবি করেছেন, ‘আমরা খবর পাচ্ছি হিংসা বন্ধ হয়নি। যে সব জায়গায় কার্ফু নেই সেই সব জায়গায় দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য চলছে। যতক্ষণ না আন্তর্জাতিক মহল বিষয়টিকে উত্থাপন করবে না, ততক্ষণ এর সমাধান হবে না।’ এই অবস্থায় বসিরহাট মহকুমা নিয়ে রাজ্য প্রশাসনে সব থেকে বেশি কড়া নজরদারি করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে হাওড়া জেলার পাঁচলা, ধূলাগড়, উলুবেড়িয়া, হুগলি জেলার চন্দননগর, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ভাটপাড়া ও নৈহাটি এলাকায়।