এই মুহূর্তে

আর নয় রাম-বাম জোট, কড়া বার্তা আলিমুদ্দিনের

নিজস্ব প্রতিনিধি: পঞ্চায়েত নির্বাচনের(Panchayat Election) আগে দলের নেতাদের রাশ কিছুটা হলেও হাতে নিল আলিমুদ্দিন(Alimuddin Street CPIM Party Office)। অন্ধ তৃণমূল(TMC) বিরোধিতা করতে গিয়ে যাতে তাঁরা গেরুয়া(BJP) ব্রিগেডের সঙ্গে হাত মিলিয়ে না বসেন তার জন্য এবার কড়া বার্তা দেওয়া হল। আলিমুদ্দিন থেকে আপাতত এই বার্তা দেওয়া হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর(Purba Midnapur) জেলার সিপিআই(এম) নেতাদের জন্য। কিন্তু সেই নির্দেশ যে বাংলার প্রতিটি জেলার দলীয় নেতৃত্বের জন্য কার্যকর হবে সেটা পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছে আলিমুদ্দিন। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সাম্প্রতিক ২-১টি সমবায় সমিতির পরিচালন কমিটির নির্বাচনে রাম-বাম জোট সামনে এসেছে। সেই ঘটনা যেমন রাজ্য রাজনীতিতে বেশ আলোড়ন ফেলেছিল। কার্যত একটা প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছিল যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলকে ঠেকাতে গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে হাত মেলাতে পারে লাল পার্টির নেতারা। তার জেরে বেশ মুখ পুড়েছিল রাজ্যের বাম নেতাদের। সেই অস্বস্তিকর অবস্থা কাটাতে এবার কড়া বার্তা চলে গেল দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে।

আরও পড়ুন ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে ব্যবহার করতে হবে কেন্দ্রের লোগো

গত ৯ নভেম্বর নন্দকুমারের ‘বহরমপুর কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড’-এর নির্বাচনে ‘সমবায় বাঁচাও মঞ্চ’ গড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়েছিল বাম-বিজেপি জোট। ৬৩টি আসনের সব ক’টিতেই তৃণমূলকে পরাস্ত করে নজির গড়েছিল তারা। এটাই কালক্রমে ‘নন্দকুমার মডেল’ হিসেবে পরিচিতি পায়। কার্যত সোশ্যাল মিডিয়া থেকে রাজনৈতিক স্তরেও এর জেরে জোর প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছিল যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলকে হারাতে এই ‘নন্দকুমার মডেল’কে সামনে রেখেই এগোনো হবে। এই প্রচারের জেরেই মুখ পুড়ছিল রাজ্যের বাম নেতাদের। জাতীয় স্তরের রাজনীতিতেও এর জেরে তাঁরা প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন। তার জেরে প্রথমদিকে রাজ্যের বাম নেতারা বলতে শুরু করেছিলেন যে, ‘নন্দকুমার মডেল’ স্থানীয় স্তরে হয়েছে। বৃহত্তর ক্ষেত্রে এই জিনিস ঘটবে না। একই সঙ্গে তাঁরা এটাও বলছিলেন দলীয় নেতাদের বলে দেওয়া হয়েছে এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে তার দিকে লক্ষ্য রাখতে। কিন্তু সেই বার্তায় যে কাজ হয়নি খুব একতা তার নমুণা তুলে ধরেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলারই তমলুক সদর মহকুমার শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের খারুই গঠরা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচন।

আরও পড়ুন মমতার রূপশ্রীর দৌলতে বিয়ের পিঁড়িতে মূক-বধির তরুণী

জানা গিয়েছে, আগামী ৪ ডিসেম্বর খারুই গঠরা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির পরিচালন কমিটির ৪৩টি আসনে নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনের জন্য ইতিমধ্যেই সিপিএম-বিজেপি আসন সমঝোতা করে প্রতিটি আসনে মনোনয়ন জমা দিয়েছে বলে তথ্য সামনে এসেছে। একই সঙ্গে সমিতির নির্বাচন জিততে গত রবিবার স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব বিজেপির হাত ধরে একসঙ্গে মিছিলও করে বলে আলিমুদ্দিনের কাছে খবর আসে। সমবায় সমিতি নির্বাচন দলীয় প্রতীকে না হলেও রাজনৈতিক দলগুলি প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে। তাই এই ঘটনা সামনে আসতেই জোর অস্বস্তিতে পড়েছে আলিমুদ্দিন। দলের প্রথম বার্তার যে কোনও ছাপই ফেলেনি নীচুতলার কর্মী ও নেতাদের মধ্যে সেই বিষয়টিও সামনে এসেছে। তার জেরে এবার আলিমুদ্দিন থেকে আরও কড়া বার্তা পাঠানো হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সিপিআই(এম) নেতৃত্বের কাছে। কার্যত আলিমুদ্দিন থেকে সাফ জানানো হয়েছে, তৃণমূলের বিরোধিতা করতে গিয়ে কোথাও যেন বিজেপির হাত ধরা না হয়। এই নির্দেশের অন্যথা হলেই বহিষ্কারের মতো কড়া শাস্তি জুটবে।

আরও পড়ুন বিজেপির প্রচারে বেরিয়ে মমতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ মিঠুন চক্রবর্তী

আলিমুদ্দিনের সেই নির্দেশের জেরে তড়িঘড়ি করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সিপিআই(এম) নেতৃত্ব দলের নীচুতলার নেতাদের দলের কার্যালয়ে ডেকে পাঠিয়ে সাফ জানিয়ে দেয় আলিমুদ্দিনের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে মানার। শুধু তাই নয়, বিজেপিকে নিয়ে দলের নীতি ও অবস্থান জানিয়ে ওই সমবায় সমিতির নির্বাচনে দলের সমস্ত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। মনোনয়ন প্রত্যাহার করা না হলে ওই সমবায় ভোটের সঙ্গে যুক্ত স্থানীয় নেতৃত্বদের বিরুদ্ধে বহিষ্কার করার মতো কড়া পদক্ষেপ করার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি এই বিষয়ে জানিয়েছেন, ‘সমবায় সমিতির ভোটে কোনওভাবেই বিজেপির সঙ্গে জোট বা আসন সমঝোতা করে লড়াই করা যাবে না বলে জেলায় দলের সব এরিয়া কমিটিকে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। দলের সিদ্ধান্ত না মানলে সংশ্লিষ্ট নেতৃত্বদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’ কিন্তু এত কিছুর পরেও সংশয় একটা থেকেই যাচ্ছে। কেননা ওই নির্দেশিকার পরেও মনোনয়ন প্রত্যাহার করার কোনও খবর মেলেনি। আর তার জেরে দুটি পাল্টা প্রশ্ন উঠেছে। আর তা হল দলেরই নেতাকর্মীদের ওপর থেকে রাশ হারাচ্ছে আলিমুদ্দিন নাকি তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বাম অপেক্ষা রামকেই বেশি শক্তিশালী বলে মনে করছেন রাজ্যের বামপন্থীরা!

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

শনিবারের মধ্যে কলকাতার তাপমাত্রা পৌঁছে যাবে ৩৭ ডিগ্রির ঘরে

ঘাটাল লোকসভা জিততে গেলে মানুষের ভালোবাসা আদায় করতে হবে: দেব

কৃষ্ণনগরে আবার ইডি এলে সরপুরিয়া খেয়ে যাবে, খোঁচা মহুয়ার

শেখ শাহজাহানের জামিনের আর্জি খারিজ, জেল হেফাজতের নির্দেশ

রাজ্যে বিশেষ পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে অলোক সিনহা

চাই পুরসভা, চাই পূর্ণাঙ্গ থানা, গলা তুলছে আমোদপুর

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর